বৃহস্পতিবার, ১১ই মে, ২০১৭ ইং ২৮শে বৈশাখ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

মালয়েশিয়ায় প্রতারণার ফাঁদে এক বাংলাদেশী যুবক

AmaderBrahmanbaria.COM
মে ৪, ২০১৭
news-image
শামীম সরকার , মালয়েশিয়া : মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে ইন্দোনেশিয়ানরা ‘ইন্দুর’ নামে ব্যাপক পরিচিত। অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থানের অবস্থার দিক থেকে মালয়েশিয়া ইন্দোনেশিয়ার চেয়ে এগিয়ে। তবে শুনেছি, চলচ্চিত্র ও খেলাধুলায় মালয়েশিয়ার চেয়ে ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান ভালো। সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডের মতো ইন্দোনেশিয়া মালয়েশিয়ার পার্শ্ববর্তী দেশ। দুই দেশের মানুষ শারীরিক গঠন, আকার, গায়ের রঙসহ সব মিলিয়ে দেখতে একই রকম। যে কারণে বোঝার উপায় নেই_ কে মালয়েশিয়ান আর কে ইন্দোনেশিয়ান। শুধু পরিচয় প্রকাশ করলেই জানা যায়। দু’দেশের ভাষাও একই রকম।
সিঙ্গাপুর আর থাইল্যান্ডের মানুষদের কাজের সন্ধানে মালয়েশিয়া আসার প্রয়োজন হয় না বললেই চলে। তবে মালয়েশিয়ায় আছে প্রচুর সংখ্যক ইন্দোনেশিয়ান। স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় প্রতিদিনই ইন্দোনেশিয়ানরা মালয়েশিয়ার বর্ডার অতিক্রম করে বৈধ-অবৈধ উপায়ে প্রবেশ করে। মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা একটা কথা বলাবলি করে, ‘অবৈধ ইন্দোনেশিয়ানদের মালয়েশিয়ার পুলিশ গ্রেফতার করে সকালের লঞ্চে ফেরত পাঠালে রাতে আরেক লঞ্চে মালয়েশিয়া চলে আসে।’
এক বাংলাদেশি ছেলে ইন্দোনেশিয়ান মেয়ের প্রেমে পড়ে। প্রথমদিকে ছেলেটার কাছে নিজের দেশীয় পরিচয় গোপন করে মেয়েটি নিজেকে মালয়েশিয়ান হিসেবে পরিচয় দেয়। পরবর্তীকালে ছেলেটা যখন জানল মেয়েটা ইন্দোনেশিয়ান, তখন দু’জনের মধ্যে হৃদয় দেওয়া-নেওয়া হয়ে গেছে। ছেলেটা আরও জানতে পারে, মেয়েটির মালয়েশিয়া থাকার বৈধ ভিসা নেই।
যদিও বাংলাদেশি ছেলেটাও অবৈধ। ছেলেটা ভেবেছিল, মালয়েশিয়ান মেয়ের কারণে এ দেশে স্থায়ীভাবে থাকার একটা উপায় হবে। কিন্তু সে পড়ল কিনা ইন্দোনেশিয়ান মেয়ের প্রেমে। একেই বুঝি বলে ভাগ্য। প্রেম হওয়ার পর দু’জন একসঙ্গে একই বাড়ির একটি ঘরে স্বামী-স্ত্রীর মতো থাকতে শুরু করে। দু’জনে কাজ করলেও ছেলেটা একাই দু’জনের খাওয়া-দাওয়া, বাড়ি ভাড়াসহ যাবতীয় খরচ বহন করে। মেয়েটা যা বেতন পায় পুরোটাই ইন্দোনেশিয়ায় নিজের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেয়। আর ছেলেটা তিন মাস বাংলাদেশে মা-বাবার কাছে টাকা পাঠায় না। একদিন গাঁয়ের সহজ-সরল মা ছেলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় জানতে চান_ ‘বাবা, কোম্পানি কি বেতন দেয় না? কাজ কি ঠিকমতো করিস না? টাকা পাঠাস না কেন?
মায়ের প্রশ্নে ছেলে উত্তর দেয়_ ‘মা টাকা তো কামাই করি; সব টাকা ইন্দুরে খেয়ে ফেলে।’ এবার মা আশ্চর্য ভঙ্গিমায় বলেন_ ‘কস কী বাবা! ইন্দুরে খেয়ে ফেলে!’ ছেলের উত্তর_ ‘হ মা। ইন্দুরে খেয়ে ফেলে।’ মায়ের পাল্টা প্রশ্ন_ ‘এত ইন্দু-র-র-র- র-র? ইন্দুর কি অনেক বড়? ওষুধ দিলে মরে না?’ ছেলের উত্তর_ ‘হ মা। অনেক বড় ইন্দুর। ওষুধ দিলেও মরে না।’ এবার মা ছেলেকে সান্বস্ননা দেন_ ‘থাক বাবা; মন খারাপ করিস না। এত কষ্টের টাকা; এখন থেকে টাকা-পয়সা সাবধানে রাখিস।’ ছেলে ঠিক আছে বলে লাইনটা কেটে দেয়।