৩৮ দেশে ১০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক কারাবন্দি (ভিডিও)
প্রবাসে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে অসংখ্য বাংলাদেশি শ্রমিক। দালালেরা যে স্বপ্ন দেখায় তা অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবে দেখা যায় না। বরং কাটাতে হয় অসীম কষ্টের জীবন। বিপদে স্থানীয় বাংলাদেশি দূতাবাস থেকেও সহায়তা পাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
রোদ নয়, যেন গনগনে আগুন ঝড়া ত্বক্ত সূর্য মাথার ওপর। এমনকি পায়ের নিচে মরুভূমির বালুরাশি যেন জলন্ত কাঠ-কয়লা। পুড়ে যায় সমস্ত শরীর। তার ওপরে আবার ভারি কাজ। ১৬ বছর ধরে এম পরিস্থিতিতে সৌদি আরবে কাজ করে যাচ্ছে চাঁদপুরের জনি। কতটুকুই বা পেয়েছেন এমন অমানুষিক পরিশ্রমের ফল? প্রশ্ন জনির মনে।
জনি বলেন, সৌদিতে আমি ১৬ বছর ধরে কিছুই করতে পারিনি। পারিনি দেশেও যেতে। তাই বর্তমানে ৪৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যেই কাজ করে বাঁচিয়ে রাখতে হচ্ছে নিজেকে। শুধু জনি নয় তার মত এমন কষ্টের দিন কাটছে বহু প্রবাসী শ্রমিকের। এমন কষ্টই যেনো তাদের প্রতিদিনের সাথী।
এদিকে জানা বা অজানাভাবে আইন ভেঙ্গে বিদেশের কারাগারে বন্দী জীবন কাটাচ্ছে বাংলাদেশের বহু শ্রমিক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে বর্তমানে ৩৮টি দেশের কারাগারে বন্দী রয়েছে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক।
এই বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, ওই সকল দেশের আইন যদি আমাদের বাংলাদেশি শ্রমিক না মানে তাহলেতো তাদের কারাগারে যেতেই হবে। সুতরাং আমরা যাওয়ার সময়ই বলে দেই যে, ঐ দেশের আইন যেন আমাদের শ্রমিকরা মেনে চলে।
এদিকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরি ও বেতনের বদলে বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সির সহযোগিতায় শ্রমিকদের দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করাচ্ছে বিদেশিরা। তাই এ ধরণের কাজ করতে গিয়ে ঘটছে প্রতিদিন অসংখ্য দুর্ঘটনা। অথচ শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ মানতে নারাজ বাংলাদেশের এ্যাসোসিয়েশন আব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস-বায়রার সভাপতি বেনজির আহমদ।
এমতাবস্থায় প্রবাসী শ্রমিকদের অভিযোগ সহযোগিতাতো দূরের কথা। বিপদেও পাশে পাওয়া যায় না স্থানীয় বাংলাদেশি দুতাবাসগুলোর সহযোগিতা।
যাদের শ্রম আর ঘামে সমৃদ্ধ এই বাংলাদেশ সেই তাদের এমন অসহায়ত্বের দায় কি এড়াতে পারে এই সরকার?
এছাড়াও সরকারি হিসাব বলছে, গত ১০ বছরে অন্তত বিদেশের মাটিতে ২০ হাজার শ্রমিক মারা গেছে। অথচ তাদের লাশ দেশে আনার ক্ষেত্রেও পাওয়া যায়না সরকারের পর্যাপ্ত সহযোগিতা। সূত্র : নিউজ ২৪