শুক্রবার, ১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ইং ২৮শে মাঘ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

৪ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যানের মামলা

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মন বাদী হয়ে স্থানীয় চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় মামলা করেছেন। যদিও ওই চেয়ারম্যান অন্য কাজে ব্যস্ত থাকার অজুহাতে জয়নারায়ন বর্মন (পিতা-ভবেশ চন্দ্র বর্মন) নামে এক ব্যক্তি মারফত মামলাটি দায়ের করিয়েছেন।

মামলার এজাহারে সুব্রত উল্লেখ করেন, যমুনা টিভির ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি পার্থ সারথী, সাপ্তাহিক বাংলার আলোর নির্বাহী সম্পাদক প্রশান্ত কুমার, ঠাকুরগাঁওয়ের খবর-এর সম্পাদক বিধান চন্দ্র দাস, ঠাকুরগাঁওয়ের খবর-এর সহকারি সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম(রঞ্জু) বেশ কিছুদিন যাবত সুব্রতর কাছে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করিয়া আসিতেছে। সে দিতে আপত্তি জানালে রবিবার তাহারাআকচা ইউনিয়ন পরিষদে তাহার নামে মিথ্যা খবর পরিবেশন করিয়া তাহার মান সম্মান ভুলন্ঠিত করিবে। তারপরও সে দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় তার চিৎকারে লোক সমাগম হলে সাংবাদিকরা মটরবাইক যোগে সেখান থেকে পালিয়ে আসে।

ঘটনার দিন সরকার দলীয় নেতারা অনুরোধ করে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বলেন, বিষয়টি যা হবার হয়েছে আলোচনার মাধ্যমে তা মিটিয়ে ফেলতে। এরই প্রেক্ষিতে সাংবাদিক মহল আকচা ইউনিয়ন পরিষদে সদর থানার ওসি(তদন্ত), আওয়ামী লীগ নেতা স্বপন ও দেবাশীষ দত্ত লাঞ্ছিত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে আলোচনায় বসেন।

এ সময় ঠাকুরগাঁওয়ের খবর পত্রিকার সম্পাদক বিধান চন্দ্র দাস (যমুনা টিভির ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি পার্থ সারথীর ছোট ভাই) বৈঠকে উপস্থিত হয়ে অপরাধীর কার্যালয়ে বসে এ আলোচনা মেনে নিতে পারেননি। ফলে অপরাধী চেয়ারম্যানের সাথে সমঝোতা ভেস্তে যায় এবং পুলিশি নিরাপত্তায় নিজ অফিসে চলে আসেন তারা। পরে সাংবাদিক লাঞ্ছিত ও ক্যামেরা ভাংচুরের অভিযোগে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ক্ষুব্ধ সাংবাদিকেরা।মামলা নং-১০/৪৩, তাং-৫/২/১৭ ইং।

অপরদিকে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মামলা থেকে নিজেকে নিরপরাধ প্রমাণ করতে চার জনের নাম উল্লেখ করে একটি কাউন্টার মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১১/৪৪, তাং-৫/২/১৭।

তবে মামলায় চেয়ারম্যানের হামলার শিকার লাঞ্ছিত সাংবাদিক মাছরাঙ্গা টিভি’র বিপ্লব ও ক্রাইম ওয়াচ এর জয় মহন্ত অলকের নাম উল্লেখ করা হয়নি। পুলিশ যেখানে লাঞ্ছিত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে, সেখানে মিথ্যা মামলা কিভাবে এন্ট্রি হয় এ নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন?

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মশিউর রহমানকে মিথ্যা মামলা এন্ট্রি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তে মিথ্যা প্রমাণ হলে তা মিথ্যা হবে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার যমুনা টিভি সহ বিভিন্ন মিডিয়ায় সুব্রত চেয়ারম্যানের দুর্নীতির খবর প্রকাশ পাইলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। রবিবার আনুমানিক দুপুর দুইটায় যমুনা টিভির পার্থ, মাছরাঙ্গা টিভির বিপ্লব ও জয় মহন্ত অলক তার সাক্ষাতকার নিতে গেলে সে ক্যামেরা ছুঁড়ে ফেলে ষ্ট্যান্ড ভেঙ্গে দেয় এবং ইউনিয়ন পরিষদে তাদের আটকে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ও জেলার সাংবাদিকরা তাদের উদ্ধার করে। পরে পুলিশ তাদের নিজ অফিসে পৌঁছে দেন। সুব্রত চেয়ারম্যানের সাংবাদিকদের উপর হামলার সময় ক্যামেরার ষ্ট্যান্ড ভাংচুর, রামদা দিয়ে মেরে ফেলার হুমকির ফুটেজ সংগ্রহে আছে বলেও জানান সাংবাদিকবৃন্দ।