সোমবার, ১৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ইং ১লা ফাল্গুন, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

যে পাঁচটি গুজব পৃথিবী কাঁপিয়ে দিয়েছিল

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৭

 

জনগণ সেই সব রটনাকে ঘটনা বলে ধরে নিয়ে এমন গোলমেলে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল যে, তাকে সামলাতে হিমশিম খে…
জনগণ সেই সব রটনাকে ঘটনা বলে ধরে নিয়ে এমন গোলমেলে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল যে, তাকে সামলাতে হিমশিম খেতে হয় প্রসাসন ও গণমাধ্যমকে। গুজব যখন দাবানল। গুজবে কান দেবেন না। এই সাবধানবাণী সত্ত্বেও গুজব রটে। আর দাবানলের মতো ছড়িয়েও পড়ে। যাঁরা এই গুজব-প্রবাহ থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখতে চান তাঁরাও এক সময়ে ব্যর্থ হন সেই বন্যা থেকে বাঁচতে। বাঁধ ভেঙে গুজব গ্রাস করে শহর-বন্দর-গ্রাম-প্রান্তর। এক সময়ে তুঙ্গে ওঠা গুজব কিছুদিন পরেই বিস্মৃতির অতলে চলে যায়। তার উপরে পলি পড়ে নতুন গুজবের। আবার তাকে সরিয়ে জায়গা করে নেয় নতুনতর গুজব। এমন বহু গুজব আছে, যারা রীতিমতো সমস্যায় ফেলেছিল মিডিয়াকে। জনগণ সেই সব রটনাকে ঘটনা বলে ধরে নিয়ে এমন গোলমেলে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল যে, তাকে সামলাতে হিমশিম খেতে হয় প্রসাসন ও গণমাধ্যমকে। তেমন পাঁচটি ‘মহাগুজব’-এর কথা রইল এখানে।

• ২০১৫-এর ২৪ জুলাই ব্রিটেনের ‘ডেলি এক্সপ্রেস’-এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ব্রিটেনের স্কুলগুলিতে ইংরেজি ভাষার ব্যবহার উঠে যেতে বসেছে। ইমিগ্রেশনকেই

এর জন্য দায়ী করা হয়। এই ‘খবর’ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় সেই পোস্ট। পরে দেখা যায়, ওই সমীক্ষায় উল্লিখিত পরিসংখ্যানগুলিকে এদিক-ওদিক করা হয়েছিল। দু’টি ভাষা বলতে পারে এমন স্কুলছাত্রদের ইংরেজি জানে না বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। আর এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় তীব্র জাতিবিদ্বেষ মাথা চাড়া দেয়। যাকে সামলাতে দম বেরিয়ে যায় প্রশাসনের।

• মাইকেল জ্যাকসন বেঁচে আছেন— এমন একটা গুজব ছড়ায় ২০১৫ নাগাদ। একটি ফেক ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করে জানানো হয়, মাইকেলকে বহাল তবিয়তে প্যারিসের রাস্তায় ঘুরতে দেখা গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াবাজরা ঝাঁপিয়ে পড়েন এই ভিডিওটি নিয়ে। তুমুল তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। মাইকেল-ফ্যানবৃন্দ হাপুস নয়নে পোস্ট করতে থাকেন তাঁদের আইডলকে স্টেজে ফিরে আসার জন্য। কিন্তু কিছু সময়ের মধ্যেই জানা যায় ভিডিওটি ‘ফেক’। যাবতীয় আবেগ লহমায় নিভে যায়।

• ২০১৪-এ মার্কিন কমেডিয়ান জোয়ান রিভারস এক অতি খাজা কমেডি শো-তে ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাকে ‘রূপান্তরকামী’ বলে বসেন। এ নিয়ে বিতর্ক উঠলে রিভারস ক্ষমা চাইতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন রূপান্তরকামীরা সুন্দর মানুষ। এতে অপমানের কী রয়েছে? রিভারসের এই রসিকতাকে সত্যি ধরে নিয়ে গুজব ছড়ায় দাবানলের মতো। অনেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেন মিশেল তাঁর সেক্সুয়াল আইডেন্টিটি গোপন রাখেন। চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এই গুজবকে ঘিরে।

• মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সম্পর্কে প্রায়শই যে গুজবটি মাথা চাড়া দেয়, সেটি তাঁর ধর্মবিশ্বাস নিয়ে। তাঁর মধ্যানাম ‘হুসেন’-এর কারণেই এই গুজবটি রটে। ইসলামিক টেররিজমের সূত্র ধরে ওবামার নীতি নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন দেশের সাধারণ মানুষ। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, আজও ২০ শতাংশ মার্কিন নাগরিক আর ৩১ শতাংশ রিপাবলিকান বিশ্বাস করেন, ওবামা ইসলাম ধর্মাবলম্বী।

• ভারতের সবথেকে বিখ্যাত গুজব সম্ভবত নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে ঘিরে। অন্য কিছু নয়, তাঁর ‘প্রত্যাবর্তন’ নিয়ে এত বেশি গুজব রটেছে যে, তাকে গুজবের বিশ্ব রেকর্ডের তালিকার উপরের দিকেই রাখা যায়। ভারতীয়, বিশেষ করে বাঙালিমাত্রেই জানেন এই গুজবের মাহাত্ম্য।