সরাইল (ব্রাক্ষণবাড়িয়া) প্রতিনিধি : ব্রাক্ষণবাড়িয়ার সরাইলে জেএসসির পরীক্ষার্থী (১৪) ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি জুয়েল রানা খাদেকে (২২) গতকাল শনিবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই শিক্ষার্থী বাদী হয়ে জুয়েল রানা খাদেকে আসামি করে সরাইল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে।
পুলিশ, গ্রামবাসী ও পারিবার লোকজন সূত্র জানায়, উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের শাহজাদাপুর গ্রামের ধণাঢ্য সিদ্দিকুর রহমান খাদেমের বখাটে ছেলে জুয়েল রানা খাদেম (২০) গত বুধবার সকাল ১১ টার দিকে প্রতিবেশী এক দিন মজুরের ওই কিশোরী মেয়েকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় কিশোরীর চিৎকারে আশ পাশের কয়েক জন নারী এগিয়ে আসলে জুয়েল রানা খাদেম পালিয়ে যান। ওই কিশোরী এ বছর শাহজাদাজাপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। পুলিশ গত বৃহস্পতিবার রাতে জুয়েল রানা খাদেমকে শাহজাদাপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে। এর পর গত শুক্রবার দিনভর চলে মামলা দায়েরে বাঁধা। দুপুরে ধর্ষীতা মামলা দিতে থানায় আসেন। এর আগেই শাহজাদাপুর ইউনিয়ন শাখা আ.লীগের সভাপতি শহিদুজ্জামান মাস্টারের নেতৃত্বে গ্রামের মসজিদের ইমামসহ ৮/১০ জন পৌঁছে যান থানায়। তারা ওঠেপড়ে লাগেন মামলা না হওয়ার জন্য। থানা চত্বরে ওই ছাত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এখানে তার (জুয়েল) বড় ভাই রোমেল রানা খাদেম আমরারে ধমকাইয়া কই তোরা একটা মামলা দিলে আমরা পাঁচটা মামলা দিমু। তোরা মামলা দিলে আমরার কী অইবো? আমরা মামলা দিলে খবর আছে। শহিদুজ্জামান মাস্টার থানা চত্বরে বলেন, এ ঘটনার (ধর্ষণের) জন্য উপযুক্ত বিচার (সালিস বৈঠক) করা হবে। আদালতে গেলে তো আচার বিচারই হবে। এর জন্য আর্থিক ও সামাজিক জরিমানা করা হবে। তাই এ ব্যাপারে মামলা না করে সামাজিকভাবে শেষ করতে এসেছি। রোমেল রানা খাদেম এ ঘটনা মিথ্যা দাবী করে বলেন, যদি কিছু ঘটেই থাকে তবে বিষয়টি সামাজিকভাবে শেষ করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছি। আমার ভাইয়ের ঘটনার জন্য আমারা উপযুক্ত বিচার দিতে প্রস্তত। এরপরও তারা একটি মামলা দিলে আমরা পাঁচটি দেব। টাকা হলে মামলা দেওয়া কোনো বিষয় নয়।
সরাইল থানার ওসি রুপক কুমার সাহা বলেন, এ ব্যাপারে জুয়েল রানা খাদেমকে আসামি করে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। গতকাল শনিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।