স্পোর্টস ডেস্ক : শুরুতে কিছুটা ধোঁয়াশা ছিল। কিন্তু এউইন মরগান যে বাংলাদেশে আসতে চান না, সেটি প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল গত বুধবারই। ওল্ড ট্রাফোর্ডে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েই সেই আভাস দিয়ে দিয়েছিলেন সীমিত ওভারে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক। ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফও কাল প্রায় নিশ্চিত করেই লিখে দিয়েছে—‘মরগান আসছেন না বাংলাদেশে, তাঁর বদলে নেতৃত্ব দেবেন জশ বাটলার।’ যদিও দল ঘোষণার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা ঠিক হবে না, তবে এরই মধ্যে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমেই শুরু হয়ে গেছে মরগানের সমালোচনা। ডেইলি মেইল তো শিরোনামই করেছে—‘ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর থেকে সরে দাঁড়িয়ে দেশকে ডোবাচ্ছেন মরগান, ঝুঁকিতে ফেলছেন নিজের ক্যারিয়ার।’
টেলিগ্রাফের দাবি, সিদ্ধান্তটা আসলে আরও আগেই নিয়ে রেখেছিলেন মরগান। ট্রেন্ট ব্রিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডের পরই সতীর্থদের নিজের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। জানিয়েছেন ইসিবি পরিচালক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসকেও। তবে তারপরও স্ট্রাউস তাঁকে আজকের দিনটা পর্যন্ত সময় দিয়েছেন সিদ্ধান্তটা নিয়ে আবার ভাবার জন্য। টেলিগ্রাফ অবশ্য দাবি করছে, সেই সিদ্ধান্ত বদলানোর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। লাফবরোর জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে স্ট্রাউসের সঙ্গে আজকের বৈঠকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়ে দেবেন মরগান।
তাঁর সিদ্ধান্ত প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার থেকেই পূর্বসূরি ইংলিশ ক্রিকেটার ও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সাবেক অধিনায়ক, ধারাভাষ্যকার ও কলামিস্ট নাসের হুসেইন তো গার্ডিয়ান পত্রিকায় বলেই দিয়েছেন, এতে করে মরগান দলে তাঁর কর্তৃত্ব হারাতে পারে। আরেক সাবেক ইংলিশ পেসার ও ক্রিকেট সাংবাদিক ডেরেক প্রিঙ্গল টুইট করেছেন, ‘ভারত সফরে বোমা হামলার স্মৃতির কথা বলে মরগান ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর থেকে নিজেকে সরিয়ে দিল। কিন্তু সে তো ভারতে যাওয়া বন্ধ করেনি।’
মরগানের সবচেয়ে কড়া সমালোচনা করেছে ডেইলি মেইল। দরকারের সময় মরগান সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন দাবি করে মেইল প্রশ্ন তুলেছে, ‘তরুণ সতীর্থদের জন্য যখন তাঁদের অধিনায়ককে সবচেয়ে বেশি দরকার, অনিশ্চয়তার মধ্যে তাঁরা যখন চাইছিল অধিনায়ক সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার বিমানে উঠবেন, সেই সময় মরগান এমন একটা কাজ কীভাবে করে? অথচ এই মরগান যখন টানা ২১ ম্যাচ ফিফটি–ছাড়া ছিল, তখনো নির্বাচকেরা তাঁর ওপর আস্থা রেখেছিলেন।’
শুধু এটুকুই নয়, ইংল্যান্ডের প্রতি মরগানের আনুগত্যও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে মেইল, ‘দলে সে সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন ও আবেগহীন চরিত্র। ইংল্যান্ডের আইরিশ অধিনায়ক যিনি বড় টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের ম্যাচের আগে দেশের জাতীয় সংগীত গাইতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এমনকি তাঁর মিডলসেক্স সতীর্থদেরও তাঁর সঙ্গে হৃদ্যতা নেই। আশ্রিত দেশের হয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য সে নিজের দেশকে বাদ দিতেও দ্বিধা করেনি।’
বাংলাদেশ সফরে না আসাটা এখন পর্যন্ত মরগানের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত হিসেবে উল্লেখ করে মেইল লিখেছে, ‘এটা এমন একটা সিদ্ধান্ত, যেটা তাঁকে তাড়া করে ফিরতে পারে।’ মেইল, টেলিগ্রাফ।