নিজস্ব প্রতিবেদক : পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চালু হওয়া দৌলতদিয়ার ৩ নং ফেরি ঘাটটি ফের নদী ভাঙনের কবলে পড়ে শনিবার বেলা ৩টায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-পথে আবার ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। দুই পাড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। যা পাটুরিয়া এবং দৌলতদিয়ায় টার্মিনাল ছাড়িয়ে মহাসড়কে দীর্ঘ লাইনে বিস্তৃতি লাভ করেছে। ভোগান্তিতে পড়ছে ঈদে ঘরমুখো মানুষ।
দক্ষিণাঞ্চলের দূরপাল্লার অনেক পরিবহন বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু হয়ে অথবা বিকল্প পথে যাত্রী পারাপারের মধ্য দিয়ে কোচ সার্ভিস অব্যহত রয়েছে। ঘরমুখো হাজার হাজার মানুষ পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটে তিন থেকে চার কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট যোগে নদী পারাপার হচ্ছে। শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের কষ্টের সীমা নাই। যাত্রীরা রিকশা, ভ্যান, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোতে দ্বিগুণ/তিনগুণ ভাড়া দিয়ে ঘাটে পোঁছাতে বাধ্য হচ্ছে। দীর্ঘ সময় বাসের মধ্যে মহাসড়কে আটকা পড়ে যাত্রীরা পানীয়, খাবার ও শৌচাগার সমস্যায় ভুগছে।
শনিবার সকালের দিকে হঠাৎ যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় আরিচা ঘাটের ৪ কিলোমিটার আগে এবং পাটুরিয়ার সাড়ে ৬ কিলোমিটার আগে উথলী মোড় থেকে পাটুরিয়াগামী অন্য রুটের বাসগুলোকে আরিচার দিকে যেতে বাধ্য করে প্রশাসন। মালবাহী ট্রাকগুলোকে ওই মোড় থেকে আরিচার দিকে মহাসড়কে লাইন করে পার্কিং করা হয়। এতে ওই মোড় থেকে আরিচা মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে আউট লাইনের বাসে আসা শত শত যাত্রী ওই মোড় থেকে পায়ে হেঁটে অথবা রিকশা ও অটোরিকশায় বেশি ভাড়া দিয়ে পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটে পোঁছাতে বাধ্য হয়। এতে সাথে থাকা ব্যাগ, লাগেজ ও মালামাল, নারী, শিশুসহ বৃদ্ধদের নিয়ে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তির মাত্রা আরো বেড়ে যায়।
এদিকে ফেরির অপেক্ষায় উভয় ঘাটে আসা মালবাহী ট্রাকগুলো আটকে পড়ায় এবং তাদের ফেরি পারাপার বন্ধ থাকায় শনিবারও ট্রাক শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে। ঘাটে আটকে থাকার কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ না করতে পারার শঙ্কায় দুঃখ-ক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা।
শনিবার সন্ধ্যায় উভয় ঘাটে সহাস্রাধিক যানবাহন ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। এ রুটে ১৮টি ফেরির মধ্যে ১৪টি ফেরি সচল, বাকীগুলো মেরামত চলছে। এমন অবস্থা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে। তীব্র স্রোতের বিপরীতে চলতে গিয়ে নতুন-পুরাতন সব ফেরিই ঘন ঘন বিকল হচ্ছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান।
উল্লেখ্য, দৌলতদিয়ার ২ ও ৩ নং ঘাটটি কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে গত বৃহস্পতিবার চালু হয়। মাত্র একটি দিন সবগুলো ঘাট সচল ছিল। শনিবার ৩ নং ঘাট বিকলের মধ্য দিয়ে নদী ভাঙনের কারণে পুনরায় ঘাট বিপর্যয়ের শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।