নিজস্ব প্রতিবেদক : জঙ্গি নেতা মুফতি জসীম উদ্দীন রাহমানীকে মুক্ত করতে কাশিমপুর কারাগারে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। তবে তাদের সেই পরিকল্পনা নস্যাৎ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে র্যাব।
গাজীপুর থেকে জঙ্গি সংগঠনটির এক নেতাসহ দুজনকে গ্রেফতারে পর শনিবার বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এরাই ওই পরিকল্পনা করছিলেন।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের মধ্যে রাশেদুল ইসলাম স্বপন (২৪) আনসারুল্লাহর গাজীপুর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী বলে র্যাব জানিয়েছে। অন্যজন বিপ্লব হোসেন ওরফে হুজাইফা (৩৩) সংগঠনটির সদস্য বলে জানানো হয়েছে।
গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জঙ্গি দমন অভিযানের মধ্যে গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে শুক্রবার মধ্যরাতে ওই দুজনকে গ্রেফতার করা হয় বলে র্যাব জানায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে র্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তারা একিউআইএসের (আল কায়দা) মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করছে।তাদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল কাশিমপুর কারাগারে হামলা করে জসীমউদ্দিন রাহমানীকে মুক্ত করা। এজন্য তারা কাশিমপুর এলাকায় কয়েকটি গ্রুপের সাথে সমন্বয় করছিল এবং সুযোগ পেলে হামলা করবে বলে অপেক্ষায় ছিল।
রাহমানীসহ আনসারুল্লাহর অন্য নেতাদের আদালতে হাজিরা দেয়ার সময় রাস্তায় হামলা করে ছিনিয়ে নেয়ার পরিকল্পনাও তাদের ছিল বলে র্যাবের দাবি। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অস্ত্র সংগ্রহের জন্য ১০ লাখ টাকা সংগ্রহের কথাও স্বপন স্বীকার করেছেন বলে র্যাব জানিয়েছে।
দুই বছর আগে কাশিমপুরের সুরক্ষিত কারাগার থেকে ময়মনসিংহের আদালতে নেওয়ার পথে ত্রিশালে সড়কে হামলা চালিয়ে পুলিশকে হত্যা করে তিন জেএমবি নেতাকে ছিনিয়ে নিয়েছিল জঙ্গিরা।
আনসারুল্লাহর আমির মুফতী রাহমানী ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার শোভন হত্যাকাণ্ডের মামলায় কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তার বিরুদ্ধে আরও মামলা রয়েছে।
রাহমানীর এই দলটির সামরিক শাখার নেতৃত্বে সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান চেষ্টার পর বরখাস্ত মেজর জিয়াউল হক রয়েছেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে। খোঁজা হলেও তাকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি।
গ্রেফতারে সময় স্বপন ও হুজাইফার কাছ থেকে জিহাদি বই ও দুটি ছোরা পাওয়ার কথাও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
পোশাককর্মী স্বপন ২০১৪ সালে রাহমানীর বক্তৃতা ইন্টারনেটে শোনার পর তার প্রতি অনুরক্ত হন বলে র্যাবকে জানিয়েছেন। এরপর আব্দুল কুদ্দুস নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে আনসারুল্লাহর সঙ্গে তার যোগাযোগ ঘটে। আবদুল কুদ্দুসের মাধ্যমে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনটির ঢাকা বিভাগীয় অন্যতম সমন্বয়ক আব্বাস নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে স্বপনের যোগাযোগ ঘটে র্যাব জানায়।
স্বপন এবং আরও কয়েকজন এই আব্বাসের মাধ্যমে আল-কায়দার আইমান আল জাওয়াহিরির নামে বায়াত নেয়। ধীরে ধীরে স্বপন গাজীপুর এবং আশে পাশের এলাকা থেকে কর্মী সংগ্রহ শুরু করে এবং এই এলাকায় সংগঠকের দায়িত্ব পায়।
স্বপনকে উদ্ধৃত করে র্যাব বলেছে, তারা বিভিন্ন এলাকায় ভাগ হয়ে কাজ করে। যোগাযোগের নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে তারা বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে।