শুক্রবার, ২২শে জুন, ২০১৮ ইং ৮ই আষাঢ়, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

এক চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মাঠ ছাড়া করার হুমকী পুলিশের

B.Baria Pic( Chunta)আমিরজাদা চৌধুরী,ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের পাহাড়পুর ইউনিয়নের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী মাইন উদ্দিন চিশতীকে হুমকী দেয়ার অভিযোগ মিলেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল পাশা ফোনে এই হুমকী দিয়েছেন। ঐ প্রার্থীর বাড়িতেও গেছে পুলিশ। তার ঘরে তল্লাশী চালানো হয়েছে। এ ঘটনার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ঐ প্রার্থী আর তার সমর্থকরা।
এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদের প্রতিদ্বন্ধি মোট ৬ জন। এরমধ্যে ৪ জন বিভিন্ন দলের। আর স্বতন্ত্র ২ জন। প্রার্থীদের মধ্যে চিশতীই মাথা ব্যাথার কারন হয়ে উঠেছেন। ভোটের দিন যতো ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে তার ওপর চাপ। কাজী মাইন উদ্দিন চিশতী জানান- মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪ টার দিকে বিজয়নগর থানার ওসি তাকে ফোন দেন। জানতে চান তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়েছে কিনা। আমি তখন জনগনের চাপে নির্বাচন করছি বলার পর তিনি (ওসি) আমাকে বলেন আপনার জনগন থাকবেনা,আপনিও থাকবেননা। আমাকে দেশ ছাড়া করার কথা বলেন তিনি। এরপর ঐদিন রাত পৌনে ১১ টায় দুই গাড়ি পুলিশ যায় আমার বাড়িতে। তারা আমার বাড়ি তল্লাশী করে। আমি ঐসময় বাড়িতে ছিলাম না। এখন সামনে কি হয় বুঝতে পারছিনা। ওসি-প্রশাসন যেভাবে হুমকী দিচ্ছে তাতে শেষ পর্যন্ত প্রচার-প্রচারনা চালাতে পারবো কিনা তা নিয়ে আমি সন্দিহান। দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকা চিশতী দেশে ফিরে ২০১১ সালে ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করে জয়ী হন। গত ৫ বছরে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেন মানুষের কাছে। বলেন এলাকার সর্বস্থরের মানুষ আমাকে ভালোবাসে। আমি কারো কাছ থেকে টাকা পয়সা নেইনি, কারো মান-সম্মান,অর্থের ক্ষতি করিনি। গরিব-ধনী সবাইকে সমান চোখে দেখেছি। সবার জন্যে কাজ করেছি। ভোট সুষ্টু হলে ভোটের বিপ্লব হবে আমার পক্ষে।
ওদিকে জনপ্রিয়তার পাল্লায় অবস্থা সুবিধের নয় আওয়ামীলীগ প্রার্থীর। আউলিয়া বাজারে অনেকেই জানিয়েছেন ভোট সুষ্টু হলে শতকারা ১০ ভাগ ভোটও তার বাকসে পরবেনা। বামুটিয়া গ্রামের আবদুল হাশিম বলেন চিশতী অসুস্থ থাকলেও মানুষ কোন কাজে তার কাছে গেলে ফিরিয়ে দেননি। কাজ করে দিয়েছেন। খাটিঙ্গা গ্রামের ফরিদ আহমেদ বলেন আমার ফার্মেসীতে বিভিন্ন গ্রামের লোকজন আসা যাওয়া করে। তাদের কথাবার্তা থেকে যা বুঝা যায় চিশতীকে নিয়েই ভাবছে সবাই। তবে নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত কি হয় তা নিয়ে ভয়ভীতি আছে। ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদূন নূর বলেন জনগনের একটা মতামত আছে। সুষ্টু নির্বাচন যদি হয় আর তাতে বিদ্রোহী প্রার্থী যদি পাশ করে তাহলে কেউ কি ফেরাতে পারবে। সহকারী কমান্ডার ফুল মিয়া বলেন আমরা সুষ্টু নির্বাচন চাই। শুনছি পুলিশ এক প্রার্থীকে উৎপাত করছে এটা ঠিক নয়। ভিটিদাউদপুরের মো: আক্তার হোসেন বলেন সাধারন মানুষ ভোট দিতে পারবে কিনা সেই চিন্তায় আছে।
তবে আওয়ামীলীগ প্রার্থী আবদুর রশিদ খন্দকার বলেছেন- তার অবস্থা খুবই ভালো। দিনদিন আরো ভালো হচ্ছে। বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল পাশা বলেন- চিশতী সরকারী দলের সদস্য হয়ে সরকারী দলের বিরুদ্ধে নির্বাচন করছেন। তাই মাঠ দখলে নিতে তাকে তো কিছু একটা বলতে হবে। সে সেটাই করছে। তাছাড়া এসব না বললে সাংবাদিকরা লিখবে কি ? প্রার্থীদের বাড়িতে পুলিশ যাচ্ছে তাদের কোন সমস্যা আছে কিনা সেই খোজখবর নিতে ।

 

Print Friendly, PDF & Email