স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকছে সেনাবাহিনী
নিউজ ডেস্ক : আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীকে মাঠে নামাবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে।
ইসি সূত্রগুলো জানিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে তফসিল ঘোষণার পর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ইসির বৈঠকে।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা থেকে জানা গেছে, সেনা মোতায়েনের জন্য প্রচলিত আইনেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী কাজ করবে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তথা জেলা প্রশাসক বা রিটার্নিং কর্মকর্তার অধীনে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসক এবং বিভাগীয় কমিশনারদের রিটার্নিং কর্মকর্তারা দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদের ডাকেই মাঠে আসবে সেনা সদস্যরা।
ইসির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীকে নির্বাচনে নিয়োজিত করা হলেও তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। এক্ষেত্রে তাদের উপজেলা সদরে রাখার পরিকল্পনাও রয়েছে। কেবল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হলে তারা মাঠে নামবে।
এ পর্যন্ত প্রায় সব নির্বাচনেই সেনা সদস্যদের নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়েছিল। তবে কেবল মাত্র ২০০৮ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে কাজ করেছে। অন্য নির্বাচনগুলোতে তারা সেনা সদস্য হিসেবেই নিয়োজিত হয়েছে। ২০০৯ সালে আইনে পরিবর্তন আসায় দশম সংসদের মতো সেনা সদস্যদের একাদশ সংসদ নির্বাচনেও সশস্ত্র বাহিনী হিসেবেই নিয়োজিত করা হবে।
জানা গেছে, নির্বাচনের প্রস্তুতি অবহিতকরণ সম্পর্কিত রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়েও আলোচনা করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে প্রয়োজনে সেনা মোতায়েনের কথাও উঠে এসেছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, ৪ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
সূত্র জানিয়েছে, ৩ নভেম্বর কমিশন বৈঠকে আলোচনার পর ৪ নভেম্বর আরেকটি বৈঠক হবে। যেখানে চূড়ান্ত হবে তফসিলের বিষয়টি। এরপরই সিইসির জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ রেকর্ড করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন। যে ভাষণ ওইদিন সন্ধ্যা কিংবা তারপরে যে কোনোদিন সন্ধ্যায় প্রচার হতে পারে। এই ভাষণের মাধ্যমেই তফসিল ঘোষণা করবেন সিইসি। ইতিমধ্যে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গণমাধ্যমে বলেছেন, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই তফসিল ঘোষণা করা হবে।
দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তফসিলে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি উল্লেখ না থাকলেও এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে। সেখানে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারকে ডাকা হবে। এখন পর্যন্ত ইসির পরিকল্পনা হচ্ছে, যে কোনো ফরমেটেই হোক নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী থাকবে। তবে কি প্রক্রিয়ায় থাকবে মূলত সে বিষয়টিই নির্ধারণ হবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে। সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন হলে তারা উপজেলায় বা ইউনিয়নে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবেই রাখার পক্ষে ইসি।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রয়োজন হলে আমরা রাষ্ট্রপতির কাছেই সেনা চাইব। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে পিএসওকে ডাকা হবে। তারাই পরে সিদ্ধান্ত নেবে, কিভাবে সেনা নিয়োজিত করলে ভালো হয়। তবে তারা মাঠে নামলে ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার অ্যাক্টের আওতায়ই নামবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের সময় নির্ধারণ হবে তফসিল ঘোষণার পর।
দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে। বাংলানিউজ