হোটেল ত্যাগের সময় যে কাজগুলো কখনোই করবে না
আমাদেরকে অবকাশ যাপন, ব্যক্তিগত আর অফিসিয়াল কোন কাজে কমবেশি হোটেলে উঠতেই হয়। জরুরি কাজ সম্পন্ন করে যখন হোটেল ত্যাগ করবেন তখন কিছু আনুষ্ঠানিকতা বা প্রস্তুতি নেওয়াটা জরুরি। হোটেলে শুধু থাকলেন আর বেরিয়ে যাওয়ার সময় বিল পরিশোধ করলেন ব্যাপারটা এমন নয়। এর মধ্যেও কিছু বিষয় জানার থাকে। একটু ভুলেও জন্যই যে কোন কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
বিষয়গুলো জেনে নিন:
হোটেল ত্যাগে দেরি না করা: হোটেল ত্যাগের সময় দের করা যাবে না। রেন্ট-এ-কার কোম্পানিগুলো যেমন নির্দিষ্ট সময়ের সামান্য কিছু সময় দেরিতে গাড়ি ফেরত দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত এক দিনের ভাড়া নিয়ে নেয়, তেমনি হোটেলগুলোও মাত্র আধা ঘণ্টা দেরি হওয়ার কারণে আপনার থেকে একটি চড়া মূল্য নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের সময়ে হোটেল রুম ছাড়া সম্ভব না হলে, আলোচনার মাধ্যমে একটি সম্ভাব্য মূল্য পরিশোধ করার চেষ্টা করুন।
রুম ছাড়ার আগে একাধিকবার চেক করা:
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হোটেল রুম ছাড়ার পাশাপাশি কিছু ফেলে গেলেন কিনা সে বিষয়টি মাথায় রেখে কয়েকবার রুমটি চেক করে নিতে হবে। যেমন, আপনার খুব সকালে রুম ছাড়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে আগের রাতেই সবকিছু গুছিয়ে রাখুন, কারণ শেষ সময়ের ব্যস্ততায় খুব বেশি গুছিয়ে ওঠা যায় না।
আপনার যেসব জিনিস নিরাপদে বা গোপনীয়ভাবে রেখেছেন সেগুলো নিয়েছেন কিনা নিশ্চিত হোন। যদি আপনি এমন কোন হোটেলে অবস্থান করে থাকেন যেখানে কর্তৃপক্ষের নিকট পাসপোর্ট জমা দিয়ে যেতে হয়, তবে সেখান থেকে চেক-আউটের পূর্বে তা বুঝে নিন।
হোটেল বয়কে বখশিশ দেয়া:
আমরা প্রায়ই এটি ভুলে যাই, কিন্তু যেসমস্ত লোকজন আপনার রুম পরিষ্কার করেছে তাদেরকে কিছু টাকা দেওয়াটা হলো এক ধরনের ভদ্রতা। এটা কখনোই ভুলে যাওয়া যাবে না।
আইটেমাইজড বিলগুলো এড়িয়ে যাবেন না:
হোটেল ত্যাগের জন্য আপনি হয়ত খুবই তাড়াহুড়ার মধ্যে থাকতে পারেন। তবে একটি বিষয়ে অবশ্যই মনোযোগ দিতে হবে। সেটা হল আইটেমাইজড বিলগুলো আপনি বুঝতে নিতে পারেন, যে মূল্যে রুম বুকিং করেছেন তার থেকে প্রকৃত ভাড়া ভিন্ন কেন।
সাধারণত, কিছু হোটেল কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে বিজ্ঞাপনে কম মূল্য উল্লেখ করেন। কিন্তু হোটেল ত্যাগের সময় দৃষ্টিগোচর হয় তারা কিভাবে এই ঘাটতি পূরণ করেন। অবশ্যই এটি একটি হটকারিতামূলক কাজ, কিন্তু আপনার উচিত এ ব্যপারে সতর্ক থাকা নতুবা আপনি বড় ধরনের ধোঁকা খেতে পারেন।
অপ্রত্যাশিত বিলের কারণে বিস্মিত না হওয়া:
হোটেলে অনেকে প্রায়ই আইটেমাইজড বিলের সম্মুখিন হয়ে থাকেন, অর্থাৎ কিছু বিল থাকে যা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। যেমন: রিসোর্টে অবস্থান না করা সত্ত্বেও রিসোর্ট ফি নিতে পারে। সুতরাং হোটেলে বুকিং দেওয়ার পূর্বেই বিভিন্ন ধরনের সেবা ফি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে বুঝে নিন। অন্যথায় আপনাকে অপ্রত্যাশিত ফি মেটানোর মতো ঘটনার সম্মুখীন হতে হবে।
অবশ্য রূঢ় আচরণ করা যাবে না:
দেখা যায় ফ্রন্ট ডেস্কে যিনি দাড়িয়ে থাকেন, সেই অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজারের সঙ্গে বিলের কোন অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় তার প্রতি রূঢ় আচরণ আপনার কোন উপকারে আসবে না। মূলত, যারা হোটেলে চেকআউটের কাজ করেন প্রায়ই জানেন, কোন বিলগুলো কমিয়ে আনা যায় এবং কোনগুলো যায় না।
ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করবেন না:
আপনাকে অবশ্যই একটা বিষয়ে বেশ সতর্ক হতে হবে। তাহলো বিলের কাগজটি ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করার আগ পর্যন্ত অনেকে এটি বুঝতে পারেন না যে, তাদের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত অর্থ আদায় করা হয়েছে। যে কারণে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করার চাইতে ক্যাশের মাধ্যমে পরিশোধ করলে তা চ্যালেঞ্জ করা কঠিন হয়। যদি ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করেন সেক্ষেত্রেও চ্যালেঞ্জ করার জন্য আপনার যথেষ্ট প্রমাণ থাকে না। তাছাড়া হোটেলে অবস্থানকারীরা কখনো কখনো তথ্য চুরির শিকার হয়ে থাকেন। অধিকাংশ ক্রেডিট কার্ড কোম্পানি সন্দেহজনক লেনদেনগুলোকে শনাক্ত করে থাকে, কিন্তু ডেবিট কার্ড সম্পূর্ণ সুরক্ষিত নয়। ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করা থেকে বিরত থাকুন।
হোটেল কর্তৃপক্ষকে দিয়ে গাড়ি আনা যাবে না:
এই কাজটি কখনোই করবে না। পরামর্শটি শুধুমাত্র সেইসব ভ্রমণকারীদের জন্য যারা নির্দিষ্ট বাজেটের মধ্যে ভ্রমণ সারতে চান। যদি আপনি কিছু টাকা বাঁচাতে চান তাহলে সামনে এগিয়ে কোন রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের মাধ্যমে ট্যাক্সির চাইতে কম খরচে গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন। আর যদি নিজের গাড়ি থাকে তাহলে হোটেল ত্যাগের পূর্বে আপনার নিজস্ব গাড়ি ডেকে নিতে পারেন।