উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে মন্দির ভাঙল চসিক, পুণঃনির্মাণের নির্দেশ মেয়রের
অনলাইন ডেস্ক : চট্টগ্রামে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের একটি সেবা খোলা (মন্দির) ভেঙে দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।
সোমবার দুপুরে নগরের দক্ষিণ কাট্টলী জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের ক্ষোভের মুখে মঙ্গলবার থেকে সেবা খোলাটি পুনরায় নির্মাণ করে দিচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।
এটি শ্রী শ্রী মগ্ধেশ্বরী মায়ের সেবা খোলা হিসেবে পরিচিত। এখানে ছোট আকারের একটি মন্দিরও ছিল।
দক্ষিণ কাট্টলী শীলপাড়া এলাকার বাসিন্দা বরুন কান্তি দে বলেন, সোমবার দুপুরে ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করছিল সিটি করপোরেশনের লোকজন। এসময় মায়ের সেবা খোলা’র দেওয়ালও গাড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলে তারা। সেবা খোলার ভেতরে ছোট মন্দিরটিও ভেঙে যায়। মঙ্গলবার সিটি করপোরেশনের লোকজনকে সেবা খোলাটিতে কাজ করতে দেখেছি আবার।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আখতার বলেন, অভিযানে ফুটপাতের ওপর থাকা সব অবৈধ স্থাপনাই উচ্ছেদ করা হচ্ছিল। সেখানে ফুটপাতের ওপর দেয়াল দেখে পে লোডার চালক সেটিতেও ধাক্কা দেয়। এতে সেটি ভেঙে যায়। এসময় ওই এলাকায় কোনো লোকজন ছিল না। আগে থেকে কেউ জানালে হয়তো এই ভুল হতো না।
১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোরশেদ আকতার চৌধুরী বলেন, অভিযান চালানোর সময় ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে বলেছেন, ফুটপাতের ওপর দেওয়াল দেখে অবৈধ স্থাপনা ভেবে পে লোডারের চালক ভুলে ভেঙে ফেলেছে। বিষয়টি শুনে মেয়র মহোদয় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিটি করপোরেশনের অর্থায়নে সেবা খোলাটি মেরামতের নির্দেশ দিয়েছেন। এখন পুণঃনির্মাণ চলছে।
এদিকে সোমবার দুপুরে সিটি করপোরেশনের অভিযানের মধ্যে সেবা খোলা মন্দির ভেঙে ফেলার পর স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা বিকালে মন্দির ভাঙার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পূজা উদযাপন পরিষদ এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে যান। এটি নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে রাতে ঘটনাস্থলে যান সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে এটি পুণঃনির্মাণ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
মেয়রের সঙ্গে রাতে ঘটনাস্থলে যাওয়া চসিক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন বলেন, চালক ভুলবশত মন্দিরের দেয়াল ভেঙে ফেলেছে। মেয়র মহোদয় ঘটনাস্থলে গিয়ে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি আগের চেয়েও আকর্ষণীয় করে মন্দিরটি গড়ে দিতে বলেছেন। দুর্গা পূজার আগেই পুণঃনির্মাণের কাজ শেষ করা হবে।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ কাট্টলীর ওই এলাকায় জেলে সম্প্রদায়ের বসবাস। মূলত নিম্ন আয়ের জেলে পরিবারের সদস্যরাই ওই মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করে থাকেন।