আগাম কথায় বিতর্কে দুই মন্ত্রী
নির্বাচনের তারিখ ও আগাম মনোনয়নের বিষয় নিয়ে কথা বলে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন সরকারের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রী। ৯ সেপ্টেম্বর রোববার নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার একটি অনুষ্ঠানে নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ প্রাথমিকভাবে ১০০ আসনের প্রার্থী তালিকা করেছে। তালিকায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নাম রয়েছে। আগামী নির্বাচনে তাকে এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে শামীম ওসমানকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহŸান জানান তিনি। তার এই বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে প্রাথমিক ১০০ প্রার্থী তালিকায় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নাম রয়েছে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের এমন বক্তব্য দলীয়শৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে না। দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের কথা বলার এখতিয়ার নেই। ১০ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠনে তিনি এ মন্তব্য করেন। নওফেল বলেন, নৌমন্ত্রীর ঘোষণা তার ব্যক্তিগত অভিমত। আমাদের দলের মনোনয়ন কে পাবেন, সেটা একমাত্র ঘোষণা দিতে পারেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কে মনোনয়ন পাবেন, তা দলীয় সভানেত্রী ছাড়া কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেন না। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী যদি এটা বলে থাকেন, তাহলে তিনি এটা ঠিক করেননি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ জানিয়ে দিলেন সরকারের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আর এতেই অনেকটা ‘বেকায়দায়’ পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিরোধী দলগুলো তো বটেই, ক্ষমতাসীন দলটির নেতারাও বক্তব্যের সমালোচনা করছেন। সমালোচনা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারও। ৫ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী কাউন্সিলরদের নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আগামী ২৭ ডিসেম্বর নির্বাচন হতে পারে। তিনি বলেন, আগামী ২০ দিনের মধ্যে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হতে পারে। অবশ্য পড়ে তিনি জানান, নির্বাচনের এ তারিখ তিনি অনুমান করে বলেছেন।
৬ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার কখন হবে, সাইজ কী, আকার কী, কেবিনেটে কতজন থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ জানেন না। আমি পার্টির সাধারণ সম্পাদক, আমিও এখন পর্যন্ত জানি না। তিনি বলেন, ২৭ ডিসেম্বর নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নিশ্চিত হলেও তা বলার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশনকে বিব্রত করা আমাদের কাজ নয়। এটা বলার দায়িত্ব সরকার, সরকারের কোনো মন্ত্রীর কিংবা দলের কোনো নেতারও নয়। আমাদের যার যার এরিয়ার মধ্যে সীমিত থেকে রেসপনসিবল ভূমিকায় থাকলে দেশ, গণতন্ত্র ও সরকারের জন্য ভালো।
এদিকে ৬ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে রাজধানীর র্যাডিসন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেন, নির্বাচনের তারিখ দিয়ে অর্থমন্ত্রী ঠিক করেননি। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কোনো আলোচনা হয়নি। অর্থমন্ত্রী ভুল বলেছেন। এ কথা বলা তাঁর ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, ভোটের তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।