টাঙ্গাইলে গণধর্ষণ থামছেই না, এবার স্কুল ছাত্রীকে পালাক্রমে…
টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে রূপাকে গণধর্ষণের পর হত্যা, প্রাইমারী শিক্ষার্থী লিজাকে গণধর্ষণের পর হত্যা ও সম্প্রতি নানার হাতে ৯ বছরের শিশু কন্যা এবং পার্শ্ববর্তী ধনবাড়ীর বীরতারার পাচনখালীতে চাচার হাতে দেড় বছরের শিশু কন্যা ধর্ষণের রেশ না কাটতে কাটতেই আবারো দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
মধুপুর উপজেলার মহিষমারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে তিন ধর্ষকের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। আসামি তিনজনই পলাতক রয়েছে।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, মধুপুর উপজেলার মহিষমারা গ্রামের সুনামগঞ্জ (গারোবাজার) পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে মাঝে মধ্যেই মহিষমারা (মন্ডলপাড়া) গ্রামের হযরত আলীর ছেলে আরিফ হোসেন (২০), আয়েন উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩০) ও মৃত আব্দুল রশিদের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩২) নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতো এবং কুপ্রস্তাব দিত।
গত ১৫ আগস্ট মেয়েটি তার ফুফুর বাড়িতে যাওয়ার পথে মহিষমারা গ্রামে পৌঁছলে ওই তিন বখাটে তাকে ধরে আকাশমনি বাগানে নিয়ে যায় এবং উড়না দিয়ে মুখ বেঁধে জোরপূর্বক পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। গণধর্ষণের পর ওই স্কুল ছাত্রীকে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে ধর্ষণকারীরা পালিয়ে যায়।
পরে ওই স্কুলছাত্রীর জ্ঞান ফিরে এলে মুখের বাঁধন খুলে চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়।
পরে ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর বাবা মেয়ের কাছে ঘটনা শুনে মামলা করার উদ্যোগ নিলে ধর্ষকদের প্ররোচনায় স্থানীয় কতিপয় মাতাব্বর মীমাংসার নামে গড়িমসি করতে থাকেন এবং ওই স্কুলছাত্রীর বাবাকে মামলা না করতে হুমকি দেন। মামলা করার পরও তারা মেয়েটির বাবাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলে জানান মামলার বাদী হাশমত আলী।
স্থানীয় ইউ.পি সদস্য মুসলিম উদ্দিন জানান, গত ২ সেপ্টেম্বর রোববার মেয়েটির বাবা আমার বাড়িতে এসে ছেলে-মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে জানান। পরে উভয়ের অভিভাবকের সাথে স্থানীয় মাতব্বর মহিষমারা গ্রামের হায়দার আলী, হযরত আলী, হায়েত আলী, আব্দুল আজিজ, আইজ উদ্দিন, ইদ্রিস আলীর আলোচনা করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরেরদির শোনতে পাই মেয়েটি দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। কিন্তু ছেলের বাবা হযরত আলী বিয়েতে রাজী না থাকায় মামলা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ অফিসার ইনচার্জ সফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিলো। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।