বিশ্বকাপের মাতামাতি এবং যৌনব্যবসা
আজই শেষ হলো গ্রুপ পর্যায়ের খেলা। সবাই বিশেষ করে বাংলাদেশের খেলাপাগল মানুষ জানে কত ঘটন ও অঘটন ঘটার পর ১৬টি দল পরবর্তী পর্যায়ে খেলা শুরু করবে শনিবার। বিশ্বকাপ– এমন একটা ইভেন্ট যা বিশ্বের প্রায় অর্ধেক অর্থাৎ সাড়ে ৩ বিলিয়ন লোক কমপক্ষে আধা ঘণ্টা খেলা দেখেছে।
১৫ দিনের খেলায় আমরা দেখেছি প্রযুক্তি-রেফারির ব্যবহার, আমরা দেখেছি সবচাইতে বেশি ফাউলভুগী খেলোয়ার, নেইমারের পায়ের কলাকৌশল, আমরা দেখেছি ১১ জন খেলোয়ারের সুনিপুন খেলার বিপক্ষে একক, রোনালদোর এরোডাইমিক ফ্রিকিক গোল। আমরা দেখেছি গোলরক্ষকের কৃতিত্বে চ্যাম্পিয়ান দলকে বাড়ি পাঠিয়ে দিতে। এও দেখেছি কত ফ্যানকে আত্মহত্যার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে, হারতে হারতে জিতে যাওয়া মেসির দল।
এবার রাশিয়ায় প্রায় কয়েক মিলিয়ন ফ্যান এসেছে সারা বিশ্ব থেকে। টিকেট বিক্রির পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, সর্বাধিক প্রায় ৭৩ হাজার ফ্যান এসেছে ব্রাজিল থেকে। দ্বিতীয় কলম্বিয়া, তৃতীয় মেক্সিকো এবং চতুর্থ আর্জেন্টিনা থেকে। অর্থাৎ ল্যাটিন আমেরিকার ফ্যানরাই রাশিয়া কাঁপাচ্ছে। এখন দেখার বিষয় নক-আউট খেলায় কাঁপাচ্ছে কি না?
বাংলাদেশ থেকে তেমন সংখ্যায় ফ্যানরা না আসলেও, এক দেড় মাসের জন্য বাংলাদেশ যে কয়েকটি দেশ দখল করে নেয়- তা বাড়ির উপরে পতাকার বাহার দেখেই বুঝা যায়।
খেলাকে কেন্দ্র করে স্বভাবতই নানাবিধ ব্যবসা গড়ে উঠে– কিছ ক্ষেত্রে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও। বাংলাদেশেই তিনটি টিভি চ্যানেল খেলা দেখাচ্ছে। কত বিজ্ঞাপন! টিভি, স্মার্টফোন রেস্তোরা ব্যবসা এমনকি পতাকা ব্যবসা। এই সুযোগে মানুষ পাচারের ব্যাবসাটাও জমে উঠবে। অনেকেই তৈরি হয়ে এসেছে ইউরোপের অন্যান্য দেশে পাড়ি জমাবে।
ইতিহাস বলে প্রতি চার বছর পর পর বিশ্বকাপের নয় মাস পরে ‘বেবি বুম’ এর প্রতিফলন দেখা যায়। শুধুমাত্র হোস্ট দেশেই নয়– প্রতিটি দেশেই হয়ত। খেলায় জেতার কারণে এমনকি হারার কারণেও হয়ত যৌন সুখের প্রাপ্তিটা কেউ ছাড়তে চায় না। মজার কথা হুন্দাই গাড়ি কোম্পানি বেবি বুমের ওপর একটি বিজ্ঞাপনও তৈরি করেছে এবার।
অবাক হলেও, পত্র পত্রিকার ভাষ্যমতে পুতিন নিজেই বলেছেন বিশ্বকাপ ফ্যানদের যেন রাশিয়ান মহিলারা সেক্সে স্বাগত জানায়। সুতরাং পতিতা ব্যবসাটা কতটা রমরমা হবে, অনুমান করা যায়। তবে অনেককেই রাশিয়ান স্পাইয়ের কবলে পড়ার সম্ভাবনা আছে। এবং অনেকেই ব্ল্যাকমেইলও হতে পারে। তবে বিশ্বকাপ উপলক্ষে নতুন করে সাজানো হয়েছে ‘ডল হাউজ’ এবং রোবোটিক মডেল হাউজকে। রক্ত-মংসের না হলেও কাজকর্মের কোনো কমতি নেই। তবে ডলের ছবি দেখে অবাক হতেই হয়?
[প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। প্রিয়.কম লেখকের মতাদর্শ ও লেখার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত মতামতের সঙ্গে প্রিয়.কমের সম্পাদকীয় নীতির মিল না-ও থাকতে পারে।]