চিনির মজুদ আছে, তবু দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রতিবছর রমজানের আগে কিছু মুনাফালোভী ব্যবসায়ী চিনির দাম বাড়িয়ে তুলেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। চাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও বাজারে বাড়তে শুরু করেছে চিনির দাম। এরইমধ্যে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। আসছে রমজানে চিনির দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা খুচরা বিক্রেতাদের। তবে আমদানিকারকরা বলছেন পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। রমজানে দাম বাড়বে না।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে বছরে মোট চিনির চাহিদা ১৬ লাখ টন। এর মধ্যে প্রায় দুই লাখ টন চিনি উৎপাদন করে সরকারি মিলগুলো। বাকিটা আমদানি করে চাহিদা মিটিয়ে থাকে বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
খুচরা বাজারে গেল কয়েক দিনে কেজিতে তিন টাকা বেড়ে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা আর প্যাকেট চিনি ৬২ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, আসছে রমজানেরও দাম বাড়তে পারে আরেক দফা।
তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, সব কোম্পানির কাছে চিনি মজুদ রয়েছে। কিন্তু এক সপ্তাহের ব্যবধানে তারা চিনির দাম বাড়িয়ে তুলেছে। রমজানে আরও বাড়বে।
বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি আবুল হাশেম বলেন, রমজানের আগেই আমদানি করা চিনি বাজারে আসলে সংকট হবে না। এখন মজুদ যা আছে তা চাহিদা অনুসারে সরবরাহ করা হচ্ছে। বাজারও বাড়ছে না। এমন ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে দাম ঠিক থাকবে।
আবদুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেডের ডিজিএম মনিরুজ্জামান বলেন, রিফাইনারিতে ৪০ হাজার টন লিকুইট চিনি মজুদ আছে। নতুন এলসি হয়েছে যা আগামী ৩০ তারিখ আমাদের দেশে ঢুকবে, যার পরিমাণ ৫০ হাজার টন। যে সুগার মজুদ রয়েছে, সেক্ষেত্রে রমজানে দেশবাসী সহনশীল পর্যায়ে সুগার পাবে। যা ৫৫ থেকে ৫৬ টাকার উপরে উঠবেই না।
এবার অন্যান্য বারের চেয়ে সাশ্রয়ী দামে বেশি পরিমাণ চিনি বিক্রি করবে সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান টিসিবি জানালেন প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র হুমায়ূন কবির।
তিনি বলেন, এ বছর আমরা স্থানীয় টেন্ডারের মাধ্যমে চিনি ক্রয় করেছি। যা আমরা বাজারজাত করবো। গেলো বছরের চেয়ে আমরা বেশি বাজারজাত করবো। শেষ রমজান পর্যন্ত অন্যান্য পণ্যের মতো এটাও পাওয়া যাবে।
অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের বিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক বলে আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সামনে ডাকবো। তাদেরকে আমাদের ম্যাসেজগুলো দেয়ার চেষ্টা করবো। পাশাপাশি চিনির বড় বড় আমদানিকারকরা কতটাকা খরচে আমদানি করেছে, সরবরাহ খরচের পর দাম কত পড়তে পারে তা আমরা মনিটরিং করবো। কারসাজি করে কেউ দাম বাড়ার চেষ্টা করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা করবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।