শুক্রবার, ৬ই এপ্রিল, ২০১৮ ইং ২৩শে চৈত্র, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

মৌসুমীকে বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ

নিউজ ডেস্ক : ধর্ম পরিবর্তন করে বাংলাদেশি যুবককে বিয়েছিলেন ভারতীয় তরুণী মৌসুমী দাস (২১)। তাকে ফিরিয়ে নিতেই এখন বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে ভারতের অাসাম রাজ্য সরকার। অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের অভিযোগ ওই তরুণীকে বাংলাদেশ পুলিশ আটক করেছে।

গত ফেব্রয়ারি মাসে আসামের কাছার জেলার শিলচরে বাণিজ্য মেলায় অংশ নেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নুমান বাদশা। সেখানেই তার পরিচয় হয় করিমগেঞ্জর রবীন্দ্র সদন গার্লস কলেজের তৃতীয় বর্ষের নারী শিক্ষার্থী মৌসুমীর সাথে। দুই জনের পরিচয় পরিণত হয় ভালবাসায়। বাদশার হাত ধরে ভারত ত্যাগ করেন মৌসুমী। বাংলাদেশে এসে ধর্ম পরিবর্তন করে মৌসুমি হয় ফাতিমা জান্নাত। অত:পর ফাতিমা ও নুমানের চার হাত এক হয়।

জানা গেছে, গত ১২ মার্চ বাসা ছাড়েন মৌসুমী। ওইদিনই করিমগঞ্জ পুলিশ থানায় মৌসুমীর পরিবার অভিযোগ দায়ের করে। ১৩ মার্চ অপহরণের মামলা দায়ের করে করিমগঞ্জ পুলিশ। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরই বাদশার বিরুদ্ধে লুক আউট সার্কুলার জারি করা হয় যাতে সে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে চলে যেতে না পারে। সেটি কার্যকর হওয়ার আগেই বাংলাদেশে চলে যান বাদশা। বিষয়টি প্রেম ঘটিত-তা পরিস্কার হওয়ার পরই বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনারের সেক্রেটারি রমাকান্ত গুপ্তর সাথে যোগাযোগ করা হয়।

এরই মধ্যে গত ২৭ মার্চ হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে মৌসুমীকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেমরা থানার ভিতরে বসে থাকতে দেখা যায়। সেখানে মৌসুমী নিজেই জানায়, আমি আমার নিজের ইচ্ছাতেই বাংলাদেশে এসেছি এবং আমাকে কেউ অপহরণ করেনি। আমি ভারত থেকে পালিয়ে এসেছি এবং এখানে আমার স্বামীর সাথেই থাকতে চাই।

বোরখা পরিহিত অবস্থায় মৌসুমী আরও জানায়, বাংলাদেশ খুব সুন্দর একটা দেশ। আমি ভারতে ফেরত যেতে চাই না। আমি আর এখন শিশু নই যে আমাকে প্রলোভন দেখানো হবে। এটা আমার পুরোপুরি ব্যক্তিগত মতামত। আমি মুসলিম হয়েছি এবং ঢাকায় সুখে আছি।

মৌসুমী নিজেই জানায়, যে কোন রকম বৈধ পাসপোর্ট বা নথি ছাড়াই সে আগরতলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল। ভিডিওটি সামনে আসার পরই ওই তরুণীর সন্ধানে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে করিমগঞ্জ পুলিশ। পরে বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনের সাথে কথা বলে।

করিমগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার গৌরব উপাধ্যায় জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ পুলিশ ওই ভারতীয় তরুণীকে আটক করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। ঢাকায় গিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারির কাছে ওই তরুণী জানায় যে তিনি নিজের ইচ্ছাতেই আগরতলা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে যায় এবং সেখানে ধর্মান্তরিত হয়ে নুমান বাদশা’কে বিয়ে করেন।

পুলিশ সুপার জানান, মৌসুমী ওই বাংলাদেশি যুবকের প্রেমে পড়েছিলেন। এরপরই আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ পালিয়ে গিয়ে প্রেমিককে বিয়ে করেন। ওই তরুণীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আমরা সম্ভাব্য সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছি।

রাজ্য সরকারের এক কর্মকর্তা জানান, আমরা বাংলাদেশ মিশনের সাথে যোগাযোগ রাখছি এবং আশা করছি বাংলাদেশ সরকার ওই তরুণীর অবৈধ অনুপ্রবেশের বিষয়টি মাথায় রেখেই ভারতে ফেরত দেবে।

Print Friendly, PDF & Email