বৃহস্পতিবার, ৫ই এপ্রিল, ২০১৮ ইং ২২শে চৈত্র, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

দলিত বিক্ষোভে ভারতে নিহত ৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের চলমান সহিংস আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। দেশটির হাজারো নিম্নবর্ণের মানুষ এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের পর এ বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এ রায়ের ফলে নিম্নবর্ণের মানুষের অধিকার খর্ব হবে।

আন্দোলনের কারণে ভারতের রেল যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে, বন্ধ রয়েছে বেশ কিছু সড়ক।

চলমান আন্দোলন-সহিংসতার কারণে সুপ্রিম কোর্টকে সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করতেও অনুরোধ করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।

এক রুলে আদালত বলেন, শিডিউলড কাস্ট অ্যান্ড শিডিউলড ট্রাই (প্রিভেনশন অ্যান্ড অ্যাটরোসিটিস) অ্যাক্ট যা এসসি/এসটি অ্যাক্ট নামে পরিচিত, অতীতে এই আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে। রায়ে আদালত এই আইনের আওতায় অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার না করা এবং জামিনের বিধান সংযোজন করেন।

আর আদালতের এ বক্তব্যের মাধ্যমে নিজেদের অরক্ষিত মনে করছেন বলে অভিযোগ করছেন দলিতরা। এই অসন্তোষ থেকেই চলমান আন্দোলনের শুরু।

কারণ ভারতজুড়ে নিম্নবর্ণের মানুষের ওপর বহু সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সরকারি পরিসংখ্যানে জানা যায়, শুধু ২০১৬ সালেই বর্ণবিদ্বেষের কারণে নিম্নবর্ণের মানুষের ওপর ৪০ হাজারের বেশি অপরাধ সংঘটিত হওয়ার কথা জানা যায়।

সর্বভারতীয় নিম্নবর্ণ জাতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক কে পি চৌধুরী বলেন, ‘এসসি/এসটি আইনটি ভারতের দলিত সম্প্রদায়ের মানুষদের যেকোনো অন্যায় ও বৈষম্য থেকে সুরক্ষা দেয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নতুন রায়ের ফলে এই আইনি বাধ্যবাধকতা শেষ হয়েছে। আমরা সবাই খুব হতাশ এবং দুঃখ পেয়েছি।’

মধ্যপ্রদেশ পুলিশের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। রাজ্যটির বেশ কিছু অংশে কারফিউও জারি করা হয়েছে।

এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলের রাজ্য রাজস্থানেও এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।

আন্দোলনের কারণে পাঞ্জাবে সব ধরনের পরীক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও। এ ছাড়া রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ রাখা হয়।

উত্তর প্রদেশের উত্তর অংশ, ঝাড়খন্ড এবং বিহারেও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। ভারতের রাজধানী দিল্লিতেও বিক্ষোভ করেছেন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে সেখানে কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে শহরের কেন্দ্রে সড়ক বন্ধ থাকায় কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়।

Print Friendly, PDF & Email