টিভি অনুষ্ঠানে এমন প্রশ্ন থাকা উচিত নয় : মিশা
বিনোদন প্রতিবেদক : ‘ধর্ষণ নিয়ে এমন প্রশ্ন কেন করতে হবে? আমি জানি না, যাঁরা এই অনুষ্ঠান গ্রন্থনা করেছেন, তাঁদের বা অনুষ্ঠানের প্রযোজকের কোনো উদ্দেশ্য ছিল কি না। হঠাৎ করে এমন একটি প্রশ্ন আমাকেও বিব্রত করেছে। আমি বলতে চাই, কোনো টিভি অনুষ্ঠানে এমন ধরনের প্রশ্ন থাকা উচিত নয়, যা সমাজে খারাপ প্রভাব পড়ে। এরপর যদি কোনো দিন কোনো অনুষ্ঠানে এমন প্রশ্ন করা হয়, তাৎক্ষণিক আমি তার প্রতিবাদ করব। আমি মনে করি, টিভি চ্যানেলগুলোর এসব বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন, আর টেলিভিশনের প্রযোজকদের বোঝা উচিত কোন প্রশ্ন করলে সমাজে কেমন প্রভাব পড়বে।’ কথাগুলো বলেন ঢাকাই ছবির অভিনেতা মিশা সওদাগর।
‘এবং পূর্ণিমা’ শিরোনামে একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে নায়িকা পূর্ণিমা ছিলেন উপস্থাপক, সঙ্গে অতিথি হিসেবে ছিলেন অভিনেতা মিশা সওদাগর। ‘পর্দায় কতবার ধর্ষণ করেছেন’, ‘কার সাথে ধর্ষণ সিনে অভিনয় করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন’—মিশাকে করা পূর্ণিমার এমন প্রশ্ন নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে চলছে সমালোচনার ঝড়। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন মিশা সওদাগর।
মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমাকে যে ধরনের প্রশ্ন করা হয়েছিল, আমি সেভাবেই উত্তর দিয়েছি। উত্তর তো আপনারা শুনেছেন। এক প্রশ্নের উত্তরে মৌসুমীর নাম বলেছি। কারণ, আমরা অনেক ভালো বন্ধু, আমরা একসঙ্গে অনেক কাজ করেছি। এখানে যদি আমাকে প্রশ্ন করা হতো, আপনি নায়ক হলে কার সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন, সেখানেও আমি মৌসুমীর নামই বলতাম। কারণ অভিনয় ফুটিয়ে তোলার জন্য সহশিল্পীর সহযোগিতা অনেক বেশি দরকার, সহশিল্পীর সঙ্গে রসায়নটা যার যত ভালো, তার অভিনয়টা তত ভালো হবে। যেহেতু আমরা পুরোনো বন্ধু, আমাদের বোঝাপড়াটা ভালো, তাই আমি তার নামই বলেছি। এখানে অন্য কোনো বিষয় থাকার কোনো কারণ নেই। তারপরও এমন উত্তরে যদি কেউ মনে ব্যথা পেয়ে থাকেন, আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।’
মিশা আরো বলেন, ‘আসলে বিষয়টি নিয়ে আমি বিব্রত, কারণ ইউটিউবে অনুষ্ঠানের ছোট একটি অংশ কেউ আপলোড করেছেন। যে অংশে পর্দায় ধর্ষণ নিয়ে প্রশ্নোত্তর ছিল। পুরো অনুষ্ঠানটি দেখলে হয়তো এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির সামনে দাঁড়াতে হতো না। আমার মনে হয়, কেউ খারাপ কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে কাজটি করেছে।’
কে বা কারা খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে ইউটিউবে প্রকাশ করেছে বলে আপনার মনে হয়—এমন প্রশ্নের জবাবে মিশা বলেন, ‘এটা আমি বলতে পারব না। যেই কাজটি করে থাকুক, আমি আমরা দর্শকদের বলব আপনারা পুরো অনুষ্ঠানটি দেখুন, তখন আপনি বুঝতে পারবেন কেন এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল। আমিই বা কীভাবে মৌসুমীর নাম বলেছি। সব শেষে মনে রাখতে হবে, চলচ্চিত্রের সবাই মিলে আমরা একটা পরিবার, এখানে আমরা সবাই বাবা, মা ভাই, বোন, প্রতিদিনই আমরা একসঙ্গে বসে গল্প করি, খাবার খাই, নিজেদের মধ্যে সুখ, দুঃখ ভাগাভাগি করি, এমন বিতর্ক আমাদের শুধু শুধু বিব্রত করে।’
আরটিভির ‘এবং পূর্ণিমা’ অনুষ্ঠানটির মূল ভাবনা সৈয়দ আশিক রহমানের। অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেন সোহেল রানা বিদ্যুৎ এবং গ্রন্থনা করেন অনিন্দ্য মামুন।