রবিবার, ১১ই মার্চ, ২০১৮ ইং ২৭শে ফাল্গুন, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

গরমে শরীরের যত্মে যা যা করবেন?

হেনা : শীতের ঝরা পাতার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়েছে বসন্ত। আর কিছু দিনের মধ্যে চলে আসবে গ্রীষ্ম। বাতাসে উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে গরমের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সূর্যের তাপ এবং ধুলাবালুর কারণে এ সময়ে ত্বকের জন্য প্রয়োজন বাড়তি যত্নের। এই সময়ে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে হবে। শুধু ঠাণ্ডা পানীয় নয়, শরীর ঠাণ্ডা রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।গরমে শরীরের যত্ন না নিলে অসুস্থ হতে পারেন আপনিও। তাই জেনে নিন কিভাবে গরমে শরীরের যত্ন নেবেন।

পানি শুধু শরীরে আর্দ্রতা জোগায় না, ত্বককে করে তোলে সজীব। তাই ত্বক সুন্দর রাখতে এ সময়ে প্রচুর পানি পান করুন। প্রতিদিন ৮ থেকে ১২ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত। এতে শরীর সুস্থ থাকবে।

গরমে ত্বকের যত্ন নিতে টোনার ব্যবহার করুন। টোনার ত্বকের লোমকূপ বন্ধ ও ত্বককে শীতল রাখতে সাহায্য করে। বাজার থেকে ভালো কোম্পানির টোনার দেখে কিনুন। ঘরোয়া টোনার হিসেবে গোলাপজল ভালো কাজ করে।

গরমের সময়ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার বন্ধ করবেন না। কারণ ময়েশ্চারাইজার ত্বকে আর্দ্রতা জোগানোর পাশাপাশি ত্বককে নরম রাখে। তবে গরমের সময় ওয়াটার বেজ ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন ত্বকের যত্নে।

ত্বক সব সময় পরিষ্কার রাখার জন্য সকালে ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই ধুয়ে নিবেন। যদি এমন হয় সারা দিন বাইরে বের হননি তবুও রুটিন করে ত্বক পরিষ্কার করতে ভুলবেন না।গরমের সময় বার বার পানি দিয়ে মুখ ধুয়া ভালো এতে ত্বক পরিষ্কার থাকে।

গরমের সময় ত্বকের মরা কোষ দূর করে রক্ত সঞ্চালন বাড়ানোর জন্য ত্বককে এক্সফোলিয়েট করা জরুরি। কারণ এ সময় ধুলাময়লা জমে ত্বক অপরিচ্ছন্ন হয় বেশি। চার-পাঁচ চামচ বেসনের সাথে এক চামচ হলুদ, পাঁচ-ছয় ফোঁটা গোলাপজল ও দুধ মিশিয়ে পেস্টের মতো তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। আধঘণ্টা পর ঘষে ঘষে তুলে ফেলুন।

বেসন ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করতে খুব কার্যকর। বেসনের সাথে টক দই ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলতে হবে। রোদে পোড়া দাগ দূর করতে লেবুর রস ভালো কাজ করে। পেঁপে প্রাকৃতিক কিনজার হিসেবে ভালো কাজ করে। তাই ত্বক পরিষ্কার করতে দুই টেবিল চামচ চটকানো পেঁপের সাথে এক চা চামচ মধু ও একটা ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। রোদ এড়িয়ে চলতে ছাতা ব্যবহার করুন।

গরমে ত্বক শীতল রাখা খুব প্রয়োজন। এক টেবিল চামচ কোরানো শসার সাথে এক টেবিল চামচ টক দই মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। খুবই সতেজ অনুভব করবেন। এ ছাড়া পুষ্টিকর খাবার, ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম ত্বক ভালো রাখার জন্য খুবই জরুরি। লেখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

গরমের সময়ে খাওয়া-দাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দিতে হয় কারণ যা-তা খাবার খেলে শরীর গরম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নিচে রইল ৮টি খাবার যা শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে—

১) প্রথম এবং প্রধান হল শশা। বাড়িতে থাকলে তো বটেই, বাইরে বেরলেও টিফিনবক্সে ভরে নিন শশা স্লাইস, তবে কোনওমতেই রাস্তার কাটা শশা খাবেন না।

২) তরমুজ গরমের ফল এবং শরীর ঠাণ্ডা তো রাখেই পাশাপাশি শরীরে আর্দ্রতাও বাড়ায় যাতে গরমে শরীর শুকিয়ে না যায়। সপ্তাহে দু’তিনদিন অবশ্যই তরমুজ খাবেন।

৩) বিদেশি ফল পিচ-এও ঠাণ্ডা থাকে শরীর। এখন সারা বছরই পিচ পাওয়া যায়।

৪) গরমকালে অনেকেই আম-কাঁঠালের দিকে বেশি ঝোঁকেন কিন্তু অনেকেই জানেন না আপেল কিন্তু শরীর ঠান্ডা রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।

৫) আনারস গরমকালের অতি পরিচিত ফল। সপ্তাহে একদিন আনারস খান তবে গর্ভবতী মহিলারা এই ফলটি খাবেন না কারণ গর্ভপাতের আশঙ্কা থাকে।

৬) যে কোনও সবুজ সবজি শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। তার মধ্যে অন্যতম হল ব্রকোলি। এগুলি এখন সাধারণ পাড়ার বাজারেও পাওয়া যায়।

৭) লেবু যে শরীর ঠাণ্ডা রাখে তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। সবাই জানেন। প্রতিদিন সকালে এক কাপ জলে একটি পাতিলেবুর রস দিয়ে মিশিয়ে খান। সন্ধেবেলা বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়ে আর একবার।

৮) লাউ এবং চালকুমড়ো গরমকালে প্রায় প্রতিদিনই খাওয়া উচিত কারণ শরীর ঠাণ্ডা রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।

 

সূত্র: বোল্ডস্কাই, বাংলাপ্রেস

Print Friendly, PDF & Email