ব্যাংকে ফরিদপুরের এসপির ৮ কোটি টাকা, দুদকের মামলা
---
দুর্নীতি করে অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী রিনা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।
এদিকে সুভাষ চন্দ্র সাহাকে ফরিদপুর থেকে প্রত্যাহার করে ঢাকায় ফেরত পাঠিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর।
ঢাকার বংশাল থানার ওসি শাহিদুর রহমান জানান, দুদকের সহকারী পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ মঙ্গলবার সুভাষ চন্দ্র ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ওই মামলা দায়ের করেন।
এজাহারে বলা হয়, সুভাষ ও তার স্ত্রীর যৌথ নামে ওয়ান ব্যাংকের তিনটি শাখায় ১৯টি এফডিআরের মাধ্যমে ৮ কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৭ টাকার সন্ধান পেয়েছে দুদক। কিন্তু তাদের সর্বশেষ আয়কর বিবরণীতে ওই টাকার কোনো উল্লেখ নেই।
অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই অর্থ অপরাধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জিত জানা সত্ত্বেও এসপি নিজ ও স্ত্রী রীনা চৌধুরীর নামে ওয়ান ব্যাংকের ওই তিন শাখায় এফডিআর হিসাবে জমা রেখে ভোগ দখলে রেখেছেন।
“আসামি রীনা চৌধুরী স্বামীর অর্থ অপরাধ কর্মকাণ্ড থেকে অর্জিত জেনেও যৌথনামে এফডিআর হিসাবে জমা রেখে এবং তা গোপন করে অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেছেন।”
তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
ফাইল ছবি
এর মধ্যে ওয়ান ব্যাংক বংশাল শাখায় ছয়টি এফডিআরে সুদসহ মোট দুই কোটি ৫১ লাখ ১৪ হাজার ৪৬৭ টাকা, এলিফ্যান্ট রোড শাখায় একটি এফডিআরে ২১ লাখ ৪৪ হাজার ৪২ টাকা এবং যশোর শাখায় ১২টি এফডিআরে ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ৮৫৮ টাকা রয়েছে ওই দম্পতির নামে।
এজাহারে বলা হয়, “এসপি সুভাষ চন্দ্র সাহা পুলিশ বিভাগে চাকরি করা অবস্থায় বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এই টাকা উপার্জন করেছেন। এই টাকার উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন করেছেন।”
আয়কর নথি পরীক্ষার পর বিস্তারিত অনুসন্ধান করে অর্থগোপনের বিষয়টি ‘নিশ্চিত হয়েই’ এ মামলা করা হয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান দুদকের একজন কর্মকর্তা।
এজাহারে বলা হয়, গত ১৫ জুন দুদকের এক আবেদনে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ওয়ান ব্যাংকের ঢাকা ওই দুই শাখার এফডিআরগুলো জব্দ রাখার আদেশ দেন। একই দিন ওয়ান ব্যাংকের যশোর শাখার এফডিআর হিসাবগুলো যশোর সিনিয়র দায়রা জজ আদালত জব্দ রাখার আদেশ দিয়েছে।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান জানান, পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহাকে সোমবারই প্রত্যাহার করে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে।
প্রায় আট মাস আগে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের দায়িত্বে আসেন সুভাষ চন্দ্র। তার আগে কুষ্টিয়া ও যশোরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।