অন্যের দোষ বলে বেড়ানো পাপ
---
এক মুমিন আরেক মুমিনের জন্য আয়নাস্বরূপ। একজনের দোষ আরেকজনের কাছে ধরা পড়বেই। তবে সেই দোষ-ত্রুটি ফলাও করে প্রচার করা যাবে না। যথাসম্ভব ঢেকে রাখতে হবে সেই দোষ-ত্রুটিগুলো। কোনো মুমিনকে প্রকাশ্য পাপে লিপ্ত দেখলে তাকে বারণ করার চেষ্টা করতে হবে। তাকে বুঝিয়ে বিপথ থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘যে সব লোক চায়, ঈমানদার লোকদের মধ্যে নির্লজ্জতা-বেহায়াপনা বিস্তার লাভ করুক, তাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে রয়েছে কঠিন শাস্তি।’ হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে বান্দাই অন্য বান্দার দোষ-ত্রুটি এ পার্থিব জগতে গোপন রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন।
মানুষ মাত্রই ভুল করে থাকে। কেউ কম কেউ বেশি। তবে প্রত্যেকটি মানুষের উচিত অন্যায় ও পাপের কাজ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করা। তবে কেউ অন্যায়-পাপ কাজে জড়িত হয়ে গেলে অন্য কারো সেটা মানুষের সামনে বলে বেড়ানো-প্রচার করা কোনো সঠিক কাজ নয়। বরং তা না করে যে ব্যক্তি ভুল পথে পরিচালিত তাকে আন্তরিকতার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে শোধরানোর চেষ্টা করতে হবে। কেউ খারাপ কাজ করছে এমন সংবাদ শুনলে আমরা রাখঢাক করে তা প্রচার করতে থাকি। তাকে নিয়ে মাতামাতি শুরু করি। একজন মুসলমান বিপথে যাচ্ছে তাকে সুপথে ফেরানোর কোনো ভাবনা আমাদের মধ্যে কাজ করে না। এটা আমাদের জন্য কখনো সমীচীন হতে পারে না। প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলকে (সা.) বলতে শুনেছি: আমার উম্মতের সবার গুনাহ মাফ হবে, কিন্তু দোষ-ত্রুটি প্রকাশকারীদের গুনাহ মাফ হবে না।
আমরা জানি আল্লাহর অন্যতম গুণ হলো তিনি সাত্তার তথা দোষ-ত্রুটি গোপনকারী। আমরা কত অন্যায় ও পাপাচারে লিপ্ত হই, কিন্তু আল্লাহ তা মানুষের সামনে প্রকাশ করে দেন না। আমাদের দোষ-ত্রুটিগুলো সমাজের সামনে প্রকাশ হয়ে গেলে আমাদের অনেকের মুখ দেখানোর উপায়ও থাকবে না। কিন্তু আল্লাহ আমাদের ওপর বড়ই মেহেরবান, তিনি আমাদের সুযোগ দিচ্ছেন। আমরা যেন সঠিক পথে আসি সেটাই চান তিনি। এজন্য কারো ত্রুটি ফলাও করে প্রচার করা আল্লাহ পছন্দ করেন না। আল্লাহ চান, আমরা সবাই যেন তার প্রিয় বান্দাদের সংশোধন ও শোধরানোর চেষ্টা করি, দোষ-ত্রুটির পেছনে না লাগি।