g নৃশংসতার চিহ্ন মুছতে গুম করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের লাশ | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বুধবার, ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ইং ২৯শে ভাদ্র, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

নৃশংসতার চিহ্ন মুছতে গুম করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের লাশ

AmaderBrahmanbaria.COM
সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৭

---

নিউজ ডেস্ক : মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিজেদের নৃশংসতার চিত্র? মুছে ফেলতে নিহত রোহিঙ্গাদের লাশ গুম করছে। তারা আগুনে পুড়িয়ে, মাটিতে পুঁতে ও নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে রোহিঙ্গাদের নিথর দেহ গুম করছে, যাতে পরবর্তীতে বিশ্বের কেউ এসে এর প্রমাণ না পায়। উখিয়ায় অনুপ্রবেশকারী অনেক রোহিঙ্গা এই দাবি করেছেন। এদিকে, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এক মাসের জন্য অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে নাইক্ষ্যংছড়ির নো ম্যানস ল্যান্ডের কাছে মাইন বিস্ফোরণে নিহত হয়েছে তিন রোহিঙ্গা।

মিয়ানমার চলমান সেনা অভিযানে চার শতাধিক ‘সন্ত্রাসী’কে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে সেদেশের সরকার। তবে মিয়ানমারের গণতন্ত্রের জন্য গঠিত সর্বদলীয় কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও লেবার পার্টির এমপি রুশনারা আলীর নেতৃত্বে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট সদস্যদের লিখিত এক চিঠিতে নির্ভরযোগ্য রোহিঙ্গা সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। লন্ডনে বসবাসরত মিয়ানমারের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গা এক্টিভিস্ট ড. মং জার্নিও এর আগে ইত্তেফাকের কাছে এই দাবি করেছিলেন।

যদিও অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা মৃতের সংখ্যা আরো বেশি হবে বলে দাবি করেছেন। তারা বলছে, মিয়ানমারের সৈন্যরা নৃশংসতার চিত্র মুছে ফেলছে। তারা রোহিঙ্গাদের গুলি করে হত্যার পর লাশ এক জায়গায় জড়ো করে আগুনে পুড়িয়ে ফেলছে। অনেক বাড়িতে গিয়ে সবাইকে ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে দরজা আটকে দিয়ে আগুন দিচ্ছে। ফলে সবাই ঘরের ভেতরে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া অনেককে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে ধরে নিয়ে জ্যান্ত আগুন দিয়ে মারছে। অনেক গ্রামে বড় গর্ত করে গণহারে পুঁতে পেলা হচ্ছে। যারা বিজিপির হাতে খুন হচ্ছে তাদের লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সীমান্তে নদী ও স্থলভাগে অনেক লাশ উদ্ধারও হয়েছে।

রাথিডং এলাকা থেকে মা, স্ত্রী, তিন সন্তান ও আরো দুইভাইকে নিয়ে কুতুপালং এসেছেন কলিমুল্লাহ। তিনি বলেন, ৩০ তারিখের আগে অনেক এলাকায় লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। লাশের পরিচয় চিনতে পেরে কেউ কেউ স্বজনদের দাফন করেছেন। একই দাবি করেছেন বুচিদং থেকে আসা আব্দুর রব। তিনি বলছিলেন, গত ৩১ আগস্ট তার ভাই আব্দুর মতিন, চাচাতো ভাই খশরু মিয়াজীকে ধরে নিয়ে গেলেও তাদের লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওদের সাথে গ্রামের আরো কয়েকজনকেও ক্যান্টনমেন্টে গিয়ে হত্যা করা হয়। শুনেছি সবার লাশ একসাথে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

রোহিঙ্গা এক্টিভিস্ট রো ন্যা সান লুইন মংডুর এক রোহিঙ্গা থেকে একটি ভিডিও সংগ্রহ করেছেন। সেখানে দেখা গেছে, এক জায়গায় মাটি খুঁড়ে বেশ কয়েকটি লাশ বস্তায় ভরে পুঁতে ফেলা হয়েছে। স্বজনরা মাটি খুঁড়ে বস্তাগুলো দেখতে পেয়েছেন। সান লুইন বলেছেন, অনেক এলাকায় সৈন্যরা বেসামরিক লোকদের হত্যার পর লাশ লুকিয়ে ফেলছে। অনেকেই তাদের স্বজনদের লাশ খুঁজে পাচ্ছেন না। এসবের সাথে স্থানীয় রাখাইন যুবকরা জড়িত। রোহিঙ্গাদের একটি অনলাইন টিভি, একটি নিউজ নেটওয়ার্কেও এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্রিটেনের ১৭৫ জন এমপি সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনকে যে চিঠি দিয়েছেন সেখানে তারা মিয়ানমার সৈন্যদের এমন নৃশংসতা ও নিপীড়ন বন্ধে উদ্যোগ নিতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানিয়ে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছেন।

এ জাতীয় আরও খবর