রাজধানীর হাটগুলোয় পর্যাপ্ত কোরবানির পশু, নেই বেচাকেনা !
---
ঈদের বাকি আর মাত্র তিন দিন। ইতোমধ্যে কোরবানির পশুতে ভরে গেছে রাজধানীর বেশিরভাগ হাট।জমে উঠতে শুরু করেছে রাজধানীর এসব পশুর হাটগুলো। হাটগুলোতে এবার দেশী গরুর সংখ্যা বেশি।
তবে এখনো জমে ওঠেনি কেনাবেচা। ক্রেতারা বলছেন, এবছর গরু-ছাগলের আকাশচুম্বী দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে, বিক্রেতারা বলছেন, গরু লালন-পালনে খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায়, বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।
রাজধানীতে এ বছর দুই সিটি কর্পোরেশন ২২টি অস্থায়ী হাটের ইজারা দিয়েছে। তবে অনেক স্থানেই অতিরিক্ত (অবৈধ) হাট বসানোর প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এসব হাট বসাচ্ছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী দুটি পক্ষের দ্বন্দ্ব এবং টেন্ডারে কাক্সিক্ষত দাম না ওঠায় গোপীবাগের ব্রাদার্স ইউনিয়ন সংলগ্ন বালুর মাঠে ওই এলাকার সবচেয়ে বড় অস্থায়ী গরুর হাটটি এখনও ইজারা দেয়নি সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন। এরপরও স্থানীয় ‘লিটল ফ্রেন্ডস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে রোববার সকাল থেকে ওই অস্থায়ী পশুর হাটটি প্রস্তুত করা হচ্ছে।
পাঁচ কিলোমিটারের আফতাবনগর হাট এরই মধ্যে প্রায় ভরে গেছে কোরবানির পশুতে। তারপরও আসছে একের পর এক গরু বোঝাই ট্রাক। মাঝারি ও বড় আকারের গরুর জন্য ক্রেতাদের কাছে বেশ নাম ডাক রয়েছে এ হাটের। আশুলিয়ার টাইগার, চার বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান জাতের একটি ষাড়টির দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। যদিও এর প্রতি এখনো আগ্রহ দেখায়নি কেউ। হাটের অন্যান্য গরুর অবস্থাও একই। ক্রেতার সমাগম না হওয়ায় অলস সময় পার করছে বিক্রেতারা। দু’একজন আসলেও বাজার যাচাইয়েই আগ্রহ বেশি। গরুর কেনাবেচা না জমলেও, ছাগলের বাজারে কিছুটা ভীড় দেখা যায় আফতাবনগরের এই হাটে।
এছাড়া, কামরাঙ্গীরচর আলী নগর খালপাড় রোড হাটে সড়কের দু’পাশে দুটো শেডে গরু বেঁধে রাখা হয়েছে। আর মাঝখানে চলাচলের জায়গা। সেখানে কথা হয় যশোরের রূপদিয়ার পশু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতি বছর এ হাটে গরু নিয়ে আসি। এবার ১০টি গরু নিয়ে এসেছি। উৎসুক মানুষ হাট ঘুরে গরু দেখছেন। আশা করছি ১-২ দিনের মধ্যে বিক্রি শুরু হবে। এ হাটের ইজারাদার ও কামরাঙ্গীরচর থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন সরকার বলেন, এবারও ৪-৫ হাজার গরু উঠার আশা করছি। বেশিরভাগ গরু আসবে যশোর, ফরিদপুর ও নড়াইল থেকে।
উত্তরা মডেল টাউনের ১৫ সেক্টরের হাটে রোববার পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার গরু উঠেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, দু-এক দিনের মধ্যে আরও ৫০-৬০ হাজার গরু উঠবে। এ হাটে সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধা থেকে বেশি গরু আসছে। উৎসুক লোকজন সপরিবারে এসে গরু দেখছেন, দরদাম করছেন। তবে বিক্রি খুব একটা হচ্ছে না।
দনিয়া কলেজ মাঠ সংলগ্ন হাটে রোববার বিকাল পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার গরু উঠে। ভারতীয় বেশ কিছু গরু দেখা গেছে এ হাটে। এর বাইরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু এসেছে। এ হাটেও বেচাবিক্রি তেমন শুরু হয়নি।
মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হাট শুরু হলে বেচাবিক্রিও শুরু হবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।