g নানা অঞ্চলের ঈদের খাবার | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

সোমবার, ২১শে আগস্ট, ২০১৭ ইং ৬ই ভাদ্র, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

নানা অঞ্চলের ঈদের খাবার

AmaderBrahmanbaria.COM
আগস্ট ১৯, ২০১৭

---
ঈদের দিন খাওয়া হবেই…কোনো কোনো এলাকায় এমন ঐতিহ্যবাহী খাবার রয়েছে। এখানে কয়েকটি অঞ্চলের তেমন জনপ্রিয় কয়েক খাবারের রেসিপি দেওয়া হলো।

বগুড়া
ঈদ উৎসবের সঙ্গে মিশে রয়েছে বগুড়ার প্রসিদ্ধ চিকন সেমাইয়ের ঐতিহ্য। ঈদের দিনে ঘরে ঘরে রান্না হয় চিকন সেমাই। বগুড়ার প্রসিদ্ধ এই চিকন সেমাইয়ের দুটি পদের রেসিপি দিয়েছেন ‘শখ সিগনেচার ক্যাফে অ্যান্ড চায়নিজ রেস্টুরেন্ট’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনাজ ইসলাম

জর্দা সেমাইজর্দা সেমাই
উপকরণ: চিকন সেমাই ২৫০ গ্রাম, ঘি আধা কাপ, বাদাম, কিশমিশ, সাদা এলাচি, কালো এলাচি ও দারুচিনি পরিমাণমতো, চিনি তিন কাপ এবং পানি দুই কাপ।
প্রণালি: হালকা গরম কড়াইয়ে আধা কাপ ঘি ঢালুন। ঘিয়ের ওপর এলাচি ও দারুচিনি ছড়িয়ে দিন। এবার কড়াইয়ে চিকন সেমাই ঢেলে ভালো করে ভেজে দিন। মচমচে ভাজা হলে পানি দিয়ে নাড়াচাড়া করে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। সেমাই সেদ্ধ হলে প্রয়োজনমতো চিনি ছড়িয়ে দিন। এবার বাদাম, কিশমিশ ছিটিয়ে রেখে দিন। ঠান্ডা হলে পরিবেশন করুন।

দুধ সেমাইদুধ সেমাই

উপকরণ: চিকন সেমাই ১০০ গ্রাম। ঘন দুধ এক লিটার, ঘি আধা কাপ, বাদাম/ কাজু বাদাম, কিশমিশ পরিমাণমতো, চিনি তিন কাপ, সাদা এলাচি, লাল এলাচি ও দারুচিনি পরিমাণমতো, পানি তিন কাপ।

প্রণালি: চিকন সেমাই গরম কড়াইয়ে ঢালুন। ঘি ঢেলে লাল করে ভেজে নিন। অন্য একটা গরম কড়াইয়ে দুধ ঢালুন। সাদা ও কালো এলাচি এবং দারুচিনি ছড়িয়ে দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করুন। দুধ ঘন না হওয়া পর্যন্ত জাল দিন। দুধ জাল হওয়ার পর তা অন্য কড়াইয়ে থাকা ভাজা সেমাইয়ে ঢেলে দিন। কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন। সেমাই ভালোভাবে সেদ্ধ হলে পরিমাণমতো চিনি মিশিয়ে নাড়াচাড়া করুন। বাটিতে ঢেলে বাদাম/ কাজু বাদাম-কিশমিশ ছড়িয়ে দিন। এবার পরিবেশন করুন।

অনুলিখন: আনোয়ার পারভেজ

নরসিংদী
ঈদুল ফিতরকিংবা ঈদুল আজহা—যেকোনো উৎসবেই ঘরে ঘরে তৈরি হবে হাতের সেমাই। অতিথি আপ্যায়নেও খাতির মানে নরসিংদীর ঐতিহ্যবাহী হাতের তৈরি সেমাই। স্থানীয়ভাবে এটি সেয়ই নামেও পরিচিত। এটি তৈরি করে সঙ্গে সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায়। তবে কেউ চাইলে রোদে শুকিয়েও রাখতে পারেন। হাতের সেমাই তৈরি ও এর খাবারের রেসিপি দিয়েছেন নরসিংদী শহরের পূর্ব ভেলানগর এলাকার গৃহিণী আরিফা সুলতানা।

হাতের সেমাইহাতের সেমাই
উপকরণ: আধা কেজি সেদ্ধ চালের গুঁড়া, এক কেজি দুধ, ২৫০ গ্রাম চিনি বা গুড়, ১০০ গ্রাম নারকেল, ২৫-৩০টি কিশমিশ, ৫টি কাজুবাদাম, ৫টি এলাচি, দারুচিনি পরিমাণমতো, ২টি তেজপাতা, লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালি: প্রথমে সেদ্ধ চালের গুঁড়া গরম পানিতে দিয়ে গুলে কাই করতে হবে। পরে তা লম্বা করে লতি করতে হবে। লতিগুলো শক্ত পাটাতনে রেখে হাতে ঘষে ছোট সেমাই তৈরি করতে হবে। কিশমিশ, কাজুবাদাম, সেমাই বাদে অন্য সব উপকরণ দুধের সঙ্গে দিয়ে গরম করতে হবে। একেবারে ফুটন্ত অবস্থায় হলে সেমাইগুলো দিয়ে সেদ্ধ করতে হবে। দুধ ও সেমাই সমান সমান হলে উঠিয়ে পরিবেশনের জন্য পাত্রে রাখুন। পরে গরম অবস্থায় কিশমিশ ও কাজুবাদাম সাজিয়ে দিন। তারপর অতিথিদের পরিবেশন করুন।

অনুলিখন: মো. মনিরুজ্জামান

সিলেট
কড়া ভাজির পিঠা। খেতেও কড়কড়ে। তাই নাম কড়ই। সিলেট অঞ্চলে গ্রাম থেকে শহরে এ পিঠার কদর বেশি। কড়ই পিঠা বা সমুচার আদলেও হয়। তখন কড়ই সমুচা বলে ডাকা হয়। প্রধান উপকরণ বিরুণ চাল হওয়ায় ‘বিরুণ পিঠা’ বলে ডাকা হয়। নামের ভিন্নতা থাকলেও উপকরণ ও প্রস্তুত প্রণালি কিন্তু অভিন্ন। রেসিপি দিয়েছেন কাজী তাসলিমা সায়রা

কড়ইকড়ই
উপকরণ: শুকনা খোলায় ভাজা বিরুণ (বিন্নী) চালের গুঁড়ো ১ কাপ, পানি ১ থেকে ২ কাপ, লবণ ১ চিমটি, নারকেল কোরানো ১ থেকে ২ কাপ, গুড় ১ থেকে ৩ কাপ, তেল ভাজার জন্য।

প্রস্তুত প্রণালি: পাত্রে নারকেল ও গুড় একসঙ্গে মিশিয়ে চুলাতে বসিয়ে শুকিয়ে এলে নামিয়ে নিতে হবে। অন্য একটি পাত্রে পানি ও লবণ ফুটলে আঁচ কমিয়ে চালের গুঁড়ো দিয়ে ২ মিনিট ঢেকে রাখুন। ২ মিনিট পর নেড়ে নামিয়ে একটু ঠান্ডা হলে খুব ভালো করে মাখাতে হবে। মাখান খামির ১০ ভাগ করে হাত দিয়ে একটু চ্যাপ্টা করে ভেতরে নারকেলের পুর দিন। এবার ডুবো তেলে বাদামি করে কড়া ভেজে হয়ে গেল কড়ই। এবার পরিবেশন করুন গরম গরম। এতে নামের যথার্থ বজায় থাকে।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম অঞ্চলে ঈদের দিনের জনপ্রিয় একটি খাবার চালের রুটি দিয়ে গরুর মাংস। রেসিপি দিয়েছেন জোবাইদা আশরাফ

চালের রুটিচালের রুটি
উপকরণ: চালের গুঁড়া ৫ কেজি, পানি ও লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালি: একটি পাত্রে পানি ও লবণ দিয়ে ফুটান। পানি ভালোমতো ফুটলে চালের গুঁড়া দিয়ে কাঠির সাহায্যে নেড়ে ডো তৈরি করুন। এবার নামিয়ে মথে নিয়ে ছোট ছোট করে কেটে নিয়ে রুটি বেলে তাওয়ায় সেকে নিন। হয়ে গেলে তবরুকের মাংসের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

তবরুকের মাংস
উপকরণ: হাড়সহ নানা রকম মাংস ১০ কেজি, আদা ও রসুনবাটা ৮ টেবিল চামচ, জিরাবাটা ৬ টেবিল চামচ, ধনে গুঁড়া ১০ টেবিল চামচ, বাদামবাটা ৪ টেবিল চামচ, নারকেলবাটা ৪ টেবিল চামচ, পেঁয়াজবাটা ৪ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ২ কাপ, ব্ল্যাক পেপার গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, মাস্টার্ড অয়েল ৪ কাপ, ঘি ১ কাপ, তেজপাতা, লবণ, কাঁচা মরিচ ও গরমমসলা স্বাদমতো। চাইলে পাকা টমেটোও দিতে পারেন।
প্রণালি: মাংস ধুয়ে ঘি ছাড়া বাকি সব উপকরণ দিয়ে মাখিয়ে নিন। মাখানো হয়ে গেলে সামান্য পানি দিয়ে চুলায় বসান। মাঝারি আঁচে নেড়েচেড়ে রান্না করুন। মাংস সিদ্ধ হলে ঘি ছড়িয়ে দিয়ে নামিয়ে নিন। এবার সাজিয়ে পরিবেশন করুন।