গণধর্ষণের পর ছিন্নভিন্ন করে দেয়া হল মেয়েটির…!
---
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাঁচ বছর আগের সেই শীতের রাতের ঘটনা। সঙ্গীর সঙ্গে সিনেমা দেখে বাড়ি ফেরার পথে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হন ২৩ বছরের ভারতের মেডিক্যাল ছাত্রী নির্ভয়া। গণধর্ষণের পরও চলে অকথ্য শারীরিক নির্যাতন।
শরীরে লোহার রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। টেনে বের করে আনা হয় তাঁর নাড়িভুঁড়ি। সম্প্রতি সেই ভয়ঙ্কর ঘটনায় চার অভিযুক্তের ফাঁসির সাজা বহাল রেখেছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। আর তার ঠিক তিন দিনের মাথাতেই ফের আরও এক নির্ভয়ার খোঁজ পাওয়া গেল।
দিল্লির নির্ভয়ার মতোই ধর্ষণের পর হরিয়ানার এই নির্ভয়ার যৌনাঙ্গও ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া হল। থেঁতলে দেওয়া হল তাঁর মুখ। ৯ মে নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে হরিয়ানার রোহতাক জেলায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার দিন হেঁটে অফিস যাচ্ছিলেন ওই তরুণী। মাঝ রাস্তা থেকেই তাঁকে অপহরণ করে সাত জন। রোহতাকের এক ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে তাঁকে। এখানেই শেষ নয়। যন্ত্রণায় কাতরানো ওই তরুণীর জন্য আরও কিছু অপেক্ষা করছিল। ধর্ষণের পর ধারাল অস্ত্র ঢুকিয়ে দেওয়া হয় তাঁর যৌনাঙ্গে। যাতে তাঁর পরিচয় কেউ জানতে না পারে তার জন্য একটি গাড়ি তাঁর মাথার উপর দিয়ে চালিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যু হয় তাঁর। তারপর সেখানেই তাঁকে ফেলে পালায় অভিযুক্তেরা।
ওই দিন বাড়ি না ফেরায় তরুণীর পরিবার পর দিনই পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। সেই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়েই তার তিন দিন পর, ১২ মে রোহতাকের ওই ফাঁকা এলাকা থেকে ওই তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু তাঁর মাথা এতটাই থ্যাঁতলানো ছিল যে তাঁকে চিনতে পারেনি পুলিশ। পরিবারকে খবর দিলে তাঁরাই থানায় গিয়ে তাঁকে শনাক্ত করেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তাঁর ভিসেরায় কিছু ড্রাগও মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অপহরণের আগে অভিযুক্তেরা তাঁকে কিছু খাইয়েছিল কি না তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুলিশের কাছে তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের এক প্রতিবেশীই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ২০১২ এর ১২ ডিসেম্বর সঙ্গীর সঙ্গে সিনেমা দেখে বাসে বাড়ি ফিরছিলেন ফিজিওথেরাপির ছাত্রী জ্যোতি সিংহ। সেই বাসে ছিল আরও ছ’জন। বাস চলতে শুরু করলে জ্যোতির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে অন্যেরা।
সঙ্গীর সামনেই জ্যোতিকে একে একে ধর্ষণ করে ছ’জন। ধর্ষণের পর নৃশংস অত্যাচার করা হয় তাঁর উপর। এই ঘটনা সামনে আসার পর বিচার চেয়ে সারা দেশ তোলপাড় হয়। পরে ছয় অপরাধীকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। এক জন নাবালক হওয়ায় জুভেনাইল কোর্টে তিন বছরের সাজা মেলে তার। ২০১৫ সালে সে ছাড়া পেয়ে যায়।
মামলা চলাকালীনই ২০১৩-র মার্চে তিহাড় জেলে আত্মহত্যা করে আর এক অভিযুক্ত। আর বাকি চার অপরাধীর ফাঁসির সাজা হয়। রাজধানীর ওই ঘটনার নৃশংসতার স্মৃতি আজও তাজা। অপরাধীদের এই শাস্তিতে সমাজে অপরাধ আদৌ কমবে কি না তা নিয়ে সংশয় ছিলই, হরিয়ানার এই ঘটনায় সেই প্রশ্ন আরও জোরালো হল।