শনিবার, ৮ই জুলাই, ২০১৭ ইং ২৪শে আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

শিবগঞ্জে ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’ চলছে

AmaderBrahmanbaria.COM
এপ্রিল ২৬, ২০১৭

---

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় মোবারকপুর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী শিবনগর গ্রামের জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িতে ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’ চলছে। বুধবার সন্ধ্যায় এ অপারেশন শুরু করে সোয়াট।

অপারেশন শুরুর পর ওই এলাকায় গুলির মুহুর্মুহু শব্দ শোনা গেছে। ওই গুলির শব্দের মধ্য বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া গেছে।

আবু (৩০) নামের এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী-সন্তানসহ ওই বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে বাড়ির মালিকের ছেলে ও আবুর মা জানিয়েছেন। আবুর পরিবার ছাড়াও বাড়িতে আরও দুজন থাকতে পারেন বলে পুলিশের ধারণা।

এর আগে বিকেলে আবুকে ফিরে আসার জন্য তাঁর মা ও পরিবারের সদস্যরা আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ওই বাড়ি থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বিকেলে আবুর চাচি চামেলি বেগম, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী রুনা বেগমকে নিয়ে তাঁর মা ওই বাড়ির দরজার সামনে যান। এ সময় মাইকে তাঁরা আবুকে বাড়ির বাইরে বের হয়ে আসার আহ্বান জানান। বেশ কয়েকবার আহ্বান জানানোর পরও ভেতর থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তাঁদের সঙ্গে পুলিশ ছিল। এরপরেই সন্ধ্যায় ‘ঈগল হান্ট’ নামে অভিযান শুরু করে সোয়াট।

জেলা পুলিশ সুপার টি এম মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযানের শুরুর পরে ওই বাড়ির ভেতরে দুটো বিষ্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এর আগে বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সোয়াট।

সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় করে বুধবার সকাল ছয়টা থেকে ত্রিমোহনী শিবনগর ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এলাকায় ১৪৪ ধারা বজায় থাকবে। বিষয়টি এলাকায় মাইকিং করে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

ওই বাড়ির মালিক সাইদুরের ছেলে আনারুল ইসলাম বলেন, তাঁদের বাড়িটি ফাঁকা পড়েছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে পরিবার নিয়ে বাড়িটিতে ওঠেন আবু।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ত্রিমোহনী শিবনগর গ্রামেরই বাসিন্দা আবু। ঘিরে রাখা বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে তাঁদের বাড়ি। তাঁর বাবা আফসার আলী। মা ফুলসানা বেগম।

ফুলসানা বেগম জানান, প্রায় আট বছর আগে সুমাইয়ার সঙ্গে আবুর বিয়ে হয়। আবু হাটে-বাজারে মসলা বিক্রি করতেন। ত্রিমোহনী বাজারে তাঁর একটা দোকানও আছে। তাঁদের সঙ্গে আবু ও তাঁর স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো ছিল না। আবুর চলাফেরা ও ধর্মীয় রীতিনীতি পালন নিয়ে বাবা আফসারের সঙ্গে মতবিরোধ চলছিল। একপর্যায়ে আবু শিবগঞ্জের আব্বাস বাজার এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে ওঠেন। আবু সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ পালন করতেন।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল ইসলাম বলেন, বাড়ির ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছে। জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

অভিযানে থাকা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বলেন, ঘিরে রাখা বাড়িতে আবু, তাঁর স্ত্রী, দুই শিশুসন্তান আছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। ভেতরে আরও দুজন থাকতে পারেন। বাড়িটি ঘিরে ফেলার পর পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়েছে।

এ জাতীয় আরও খবর