শনিবার, ৮ই জুলাই, ২০১৭ ইং ২৪শে আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

দাওরায়ে হাদিসের সনদধারীরা: সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে এরা কি করবে?

AmaderBrahmanbaria.COM
এপ্রিল ২২, ২০১৭

---

নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পর কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে সাধারণ শিক্ষার স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্বীকৃতি দিয়ে আদেশ জারি করেছে সরকার। তবে এ সনদধারীদের সাধারণ শিক্ষার ক্ষেত্রে এসএসসি, এইচএসসি এবং স্নাতকের স্বীকৃতি না থাকায় অনান্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারীদের মত বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্রে আবেদন করতে পারবে কি না বা করলে কিভাবে করবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

গত ১১ এপ্রিল দাওরায়ে হাদিসকে স্নাতকোত্তর সমমান ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন রাতে গণভবনে হেফাজতে ইসলামের আমির ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) সভাপতি আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে আসা প্রায় ৩০০ জন আলেমের সঙ্গে বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ ক্লাস দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের মান দেওয়া হলো।’

তার এ ঘোষণা দেয়ার দু’দিন পরেই ১৩ এপ্রিল দাওরায়ে হাদিসের সনদকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্বীকৃতি দিয়ে আদেশ জারি করে সরকার। এতে বলা হয়, ‘কওমি মাদ্রাসার বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে ও দারুল উলুম দেওবন্দের মূলনীতিসমূহকে ভিত্তি ধরে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ এবং আরবি) এর সমমান প্রদান করা হল।’

দাওরায়ে হাদিসের সনদকে স্নাতকোত্তর সমমান দেওয়ার লক্ষ্যে কওমি মাদ্রাসা বোর্ডগুলো কর্তৃক গঠিত মান বাস্তবায়ন কমিটির উপর ‘আস্থাভাজনপূর্বক’ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহ আহমদ শফীকে চেয়ারম্যান করে একটি কমিটিও গঠন করে দিয়েছে সরকার। এ কমিটি দ্বারা নিবন্ধিত মাদ্রাসাগুলোই দাওরায়ে হাদিসের সনদ স্নাতকোত্তরের সমান পাবে এবং সনদ বিষয়ক যাবতীয় কার্যক্রমের ক্ষেত্রে কমিটি সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী বলে বিচেচিত হবে বলে আদেশে বলা হয়।

কমিটির অধীনে ও তত্ত্বাবধানে দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা হবে। তবে কমিটি দাওরায়ে হাদিসের সিলেবাস প্রণয়ন, পরীক্ষা পদ্ধতি, পরীক্ষার সময় নির্ধারণ, অভিন্ন প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, ফলাফল ও সনদ তৈরিসহ আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এক বা একাধিক উপকমিটি গঠন করতে পারবে বলে আদেশে বলা হয়।

কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস সনদ সাধারণ শিক্ষার স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্বীকৃতি পেলেও এখনও এসএসসি, এইচএসসি এবং স্নাতকের সমমান এ মাদ্রাসার শিক্ষার অনান্য শিক্ষা কার্যক্রমের স্বীকৃতি মেলেনি। কিন্তু যেসব চাকরির শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে স্নাতকোত্তর চাওয়া হয় সেক্ষেত্রে এসএসসি, এইচএসসি এবং স্নাতক বা এর সমমানের সার্টিফিকেট চাওয়া হয়। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র দাওরায়ে হাদিসের সনদ দিয়ে কিভাবে সনদদারীরা সরকারি চাকরিসহ অনান্য চাকরি বা অনান্য সুযোগ সুবিধা পাবে তা এখনও পরিস্কার করতে পারেনি সরকার।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চাকরির ক্ষেত্রে এসএসসি, এইচএসসি এবং স্নাতক বা সমমানের সার্টিফিকেটও লাগে। এগুলো ছাড়া শুধুমাত্র দাওরায়ে হাদিসের সনদ দিয়ে কিভাবে চাকরিতে আবেদন বা অনান্য সুযোগ-সুবিধা পাবে তা আমরা বলতে পারছি না। এটা একটা জটিল বিষয়। কিছুদিন পর হয়ত বিস্তারিত জানাতে পারব।

তবে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম জাকির হোসেন বলেন, দাওরায়ে হাদিসের সনদকে যেহেতু সরকার সাধারণ শিক্ষার স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্বীকৃতি দিয়েছে, সেক্ষেত্রে তারা অনান্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের মত সকল সুযোগ-সুবিধা পাবে। তারা বিসিএস পরীক্ষাও দিতে পারবে। তবে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদদারীরা এসএসসি, এইচএসসি বা স্নাতক পর্যায়ের সার্টিফিকেট ছাড়া কিভাবে এসব সুযোগ-সুবিধা পাবে তা পরিস্কার করে কিছু জানাতে পারেননি তিনি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।বিডি২৪লাইভকে