শুক্রবার, ১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ইং ২৮শে মাঘ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

মেয়ের হাড়গোড় আনতে ঢামেকে নায়িকা অন্তরার মা

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৭

অনলাইন প্রতিবেদক : মেয়ের হাড়গোড় ফেরত নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেকে) অপেক্ষা করছেন চিত্রনায়িকা অন্তরার মা আমেনা খাতুন। আজ সকাল ৮টায় অন্তরার ডিএনএ নমূনা সংগ্রহের পর সেগুলো হস্তান্তরের কথা ছিল। পুনঃময়নাতদন্তের জন্য তিন বছর পর গতকাল মঙ্গলবার কবর থেকে চিত্রনায়িকা পারভিন আক্তার লাকি ওরফে অন্তরার লাশ তোলা হয়। পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তা পাঠানো হয় ঢামেকে।

অন্তরার কাজিন রুহুল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, লাশ ফেরত আনতে আজ সকাল ৮টায় আমাদেরকে হাসপাতালে যেতে বলা হয়েছিল। অন্তরার মা সকালেই চলে গেছেন হাসপাতালে। সঙ্গে বোনের ছেলে আছে। তবে ডাক্তার না আসায় তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। পরীক্ষা হয়ে গেলে লাশ ফেরত নিয়ে ফের দাফন করা হবে।

আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানার নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল আজিমপুর কবরস্থান থেকে অন্তরার হাড়গোড় তোলে। এসময় অন্তরার মা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিকালে কবর থেকে তোলা ৬৭টি হাড় ও মাথার খুলি ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি বেইলি রোডের মনোয়ারা হাসপাতালে মারা যান ৩৩ বছরের অন্তরা। তখন প্রচার করা হয় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে অন্তরার পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে।

অন্তরার মা আমেনা খাতুন জানান, অন্তরার সৌন্দর্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এবং অর্থের লোভে নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা উত্তরপাড়ার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম খোকন ২০১০ সালের ২৬ মে অন্তরাকে বিয়ে করেন। প্রথম দিকে খোকন তাকে জানান, তার স্ত্রী মারা গেছেন।
তিনি জানান, অন্তরার আগেও একটি বিয়ে হয়েছিল। ওই পক্ষে অপ্সরি জান্নাত নামে এক মেয়ে আছে। তা জেনেই তাকে বিয়ে করেন খোকন। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরেই অন্তরা জানতে পারেন খোকনের স্ত্রী ও পাঁচ সন্তান রয়েছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ শুরু হয়। খোকন তাকে গাজীপুরে নিয়ে যেতে চাইলে রাজি হননি অন্তরা। একপর্যায়ে রাজধানীর রমনা এলাকার আড়ং প্লাজার নবম তলার একটি ফ্ল্যাটে সংসার শুরু করেন খোকন-অন্তরা। আইয়ান ইসলাম অর্থ নামে এক ছেলে হয় তাদের। কিন্তু দু’জনের কলহ লেগেই ছিল। এ পরিস্থিতিতে অন্তরা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যায়।

অন্তরাকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে আমেনা খাতুন বলেন, তিনি মেয়ের হত্যার বিচার চেয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যার অভিযোগে পিটিশন মামলা দায়ের করেন। গত ১২ জানুয়ারি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (দশম) আদালতের বিচারক অন্তরার লাশ কবর থেকে উত্তোলনের জন্য নির্দেশ দেন। ময়নাতদন্ত শেষে ১১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।