নিজেকে অপরাধী ভাবছেন তামিম
---
স্পোর্টস ডেস্ক : ‘আমি ক্রাইম করেছি’- ম্যাচ শেষে এভাবেই নিজেকে দোষ দিলেন তামিম ইকবাল। প্রথম ইনিংসে ৫ রানের পর দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল দ্বিতীয় দফায় উইকেট খোয়ান ৮ রানে। আর পরে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। এতে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে দৃশ্যত তিন দিনেই হার দেখলো তামিম বাহিনী। বৃষ্টিতে পণ্ড হয় ম্যাচের তৃতীয় দিনের খেলা ।
ক্রাইস্টচার্চে প্রথম ইনিংসে শর্ট বল এড়িয়ে না গিয়ে পুল করতে যান তামিম। এতে পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। ওটা ছিল বাংলাদেশ ইনিংসের মাত্রই চতুর্থ ওভার। আর দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম আউট হলেন আরও বাজেভাবে। ডিপ স্কয়ার লেগে ফিল্ডার নিয়ে শর্ট বল দেয়া হলো তামিমকে। সাজানো ফাঁদে পা দিলেন তামিম দ্রুতই। পুল শটে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তামিম। ম্যাচ বাঁচানোর চ্যালেঞ্জে ব্যাটিংয়ে যাওয়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে এটা ছিল মাত্রই ষষ্ঠ ওভার।
ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে তামিমের কণ্ঠে বারবার শোনা গেল অনুশোচনা। তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমি অধিনায়ক ছিলাম। ভালোভাবে নেতৃত্ব দেয়া উচিত ছিল। অধিনায়ক তো শুধু নামে নয়, আমার ব্যাটিং নিয়ে নেতৃৃত্ব দিতে পারতাম। দলের নেতা হিসেবে দ্বিতীয় ইনিংসে যেভাবে আউট হয়েছি, এতে বাকিদের কাছে ভালো কোনো বার্তা যায়নি।’
রেকর্ডে-পরিসংখ্যানে দলের সেরা ব্যাটসম্যানও তামিম ইকবাল। টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি, তিন ফরমেটের ক্রিকেটেই বাংলাদেশের সর্বাধিক রানের মালিক তিনি। প্রথম ইনিংসে শেষের ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ পৌঁছে ৩৫৪ রানে। গতকাল ম্যাচের চতুর্থ দিনে অবশিষ্ট তিন উইকেটে কিউইরা স্কোর বোর্ডে যোগ করে ৯৮ রান। এতে প্রথম ইনিংসে ৬৫ রানের লিড পায় নিউজিল্যান্ড। তাই দায়িত্বটা বেশি ছিল তামিমেরই। তামিমের খারাপ লেগেছে এই ভেবে, পুরো টেস্ট সিরিজে কিউই বোলাররা কখনোই ভাগাতে পারেনি তাকে। তিনি বরং প্রতিবার নিজ দোষে আউট হয়েছেন। তামিম বলেন, ‘নিজের কথা যদি বলি, পুরো সিরিজে এ রকম কোনো ইনিংস ছিল না যেখানে আমি বিন্দুমাত্র সমস্যায় পড়েছি। অনায়াসে খেলছিলাম, কিন্তু সেটাকে পুঁজি করে বড় ইনিংস গড়তে পারিনি। আমার কাছে দলের যে প্রত্যাশা, নিজের কাছে আমি যেমন আশা করি, তাতে হতাশ হয়েছি। এত অনায়াসে খেলেও সেটাকে পুঁজি করতে না পারাটা ক্রাইম। আমি সেই অপরাধে অপরাধী।’
তামিম জানেন, ওপেনিং ব্যাটসম্যান বলে দায়িত্বটা তারই বেশি। তামিম বলেন, ‘যেভাবে আউট হয়েছি, রাবিশ। আমার উচিত ছিল বাজে বলের জন্য অপেক্ষা করা। সেখান থেকে রান তোলা। দীর্ঘ সময় ব্যাট করা। আমি বড় জুটি গড়ে তুলতে পারলে ছবিটা অন্যরকম হতো। আমি পুরো দায় নিচ্ছি। আমিই শুরুটা করেছিলাম। আমি ওই শট না খেললে ম্যাচ অন্য রকম হতো। আমরা সহজ পথে হেঁটেছি। কঠোর পরিশ্রম করতে চাইনি। কঠিন কাজটা বেছে নিতে চাইনি। তেমনটাই মনে হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দলের নেতার কাছে সতীর্থরা আশা করে, সামনে থেকে দেখাবে। আমি তা পারিনি।’