রাজধানীতে মাদ্রাসায় সন্ত্রাসী হামলা নামাজ চলাকালে
নিউজ ডেস্ক।। রাজধানীর জামিয়া হোসাইনিয়া আশরাফুল উলুম বড়কাটারা মাদ্রাসায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত ৯টার দিকে মাদ্রাসার মসজিদে এশার নামাজ চলাকালে রহমতগঞ্জের রশিদ আহমদ ও তার ছেলে শরীফের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এতে প্রিন্সিপাল মুফতি সাইফুল ইসলাম আহত হন। মসজিদে নামাজরত অবস্থায় তাকে আঘাত করা হয়। এছাড়া সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা আযহারুল ইসলাম, মাওলানা হেমায়েতুল্লাহ, ছাত্র ইমরান, কাউসার, তানজীমসহ ৮/১০ জন ছাত্র, মাদরাসার প্রহরী আব্দুল মান্নান এবং কয়েকজন মহল্লাবাসী এ সময় আহত হন। হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
চকবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বজলুর রহমান বলেন, ‘মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি নিয়ে অনেক দিন ধরে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছে। আগের সভাপতি মো. রশীদ আহমেদ শনিবার এশার নামাজের পর তার অনুসারীদের নিয়ে মাদ্রাসায় প্রবেশ করেন। এরপর বর্তমান প্রিন্সিপাল সাইফুল ইসলাম গ্রুপের সঙ্গে তাদের কথাকাটাটি হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে উভয় পক্ষের সাত থেকে আটজন আহত হন। রশীদ আহম্মেদসহ তার গ্রুপের তিনজন আহত হয়েছেন। তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। অপরদিকে সাইফুল ইসলামের অনুসারীরাও কয়েকজন আহত হয়েছেন। মাদ্রাসা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় বড়কাটারা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলা করবেন। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। রশিদ আহম্মেদসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করা হচ্ছে। তাদের আটক দেখানো হবে।
হামলায় আহত মাদ্রাসাটির হেদায়েতুন্নাহু জামাতের ছাত্র কাউসার জানান, রাত ৯টার দিকে প্রায় ৫০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল মাদ্রাসায় অতর্কিতে প্রবেশ করে প্রথমেই দায়িত্বরত দারোয়ান আব্দুল মান্নানকে মারধর করে বের করে দেয়। এরপর তারা ভেতরে গেট লাগিয়ে মাদ্রাসার দখল নেয়। এরপর আমাকেসহ মাদ্রাসায় অবস্থানরত ছাত্র-শিক্ষকদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোনগুলো ছিনিয়ে নেয়। সন্ত্রাসীরা কয়েকটি উপদলে ভাগ হয়ে একটি গ্রুপ মসজিদে আর বাকি গ্রুপগুলো রুমে রুমে গিয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের খুঁজতে থাকে। এ খবর মহল্লায় ছড়িয়ে পড়লে মহল্লাবাসী ও মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা সম্মিলিতভাবে সন্ত্রাসীদের রুখে দাঁড়ান।
তিনি আরও জানান, জনতার হাতে গণধোলাইয়ের শিকার হয় হামলার মূল হোতা রশিদ ও তার ছেলে শরীফসহ বেশ কয়েকজন হামলাকারী। জনতা মারধর শেষে চকবাজার থানায় পুলিশের কাছে হামলাকারীদের সোপর্দ করে। এ সময় মহল্লাবাসী থানা ঘেরাও করে হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
ঈদের দিন এই ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন মাদরাসার মুতাওয়াল্লী মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ, শঙ্কিত। আমি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। মাদ্রাসার পক্ষ থেকে চকবাজার থানায় মৌলবী রশিদকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। উৎস : বাংলা ট্রিবিউন