জেলখানায় পোলাও, মাংস, সালাদ
কারাগারে পরিবার-পরিজন ছেড়ে চারদিকে আটকানো দেয়ালের মাঝেই ঈদ করতে হয় কয়েদিদের। ঈদ যাতে সবাই আনন্দঘন মুহূর্তে কাটাতে পারে সে জন্য কারা কর্তৃপক্ষ নানা আয়োজন করে থাকে। এ আয়োজনের মধ্যে উন্নত খাবার পরিবেশন, খেলাধুলা, খুলে ঘুরে বেড়ানোসহ খোশগল্প করার সুযোগ থাকে।
ঈদের দিনটি কয়েদিরা কীভাবে কাটায় জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সুবেদার আফজাল বারি সারাবাংলাকে বলেন, ঈদের দিন সকালবেলা সবাই ঘুম থেকে উঠে গোসল সেরে সেমাইয়ের সঙ্গে রুটি দেওয়া হয়। এরপর সবাই একইসঙ্গে কেন্দ্রীয়ভাবে ঈদের নামাজ পড়েন।
নামাজ শেষে উন্নত খাবার পরিবেশন করা হয়। বেলা ১১টার মধ্যেই খাবার দেওয়া হয়। গরুর মাংস, সালাদ, পোলাও, ডিম ও কোমল পানীয় পরিবেশন করা হয়। রাতের খাবারে মুরগির মাংস, ভাত, সালাদ ও ডাল পরিবেশন করা হয়। অন্যান্য দিনগুলোতে এক টুকরো মাংস দেওয়া হলেও ঈদের দিন বা উৎসবগুলোতে মাংসের পরিমাণ বেশি থাকে যাতে কারাবন্দিরা তৃপ্তি করে খেতে পারে বলে জানান সুবেদার আফজাল বারি।
কাশিমপুর কারাগার-২ এর ডেপুটি জেলার আকবর আলী বলেন, কারাবন্দি ভিআইপিদের আরও বেশি খাবার পরিবেশন করা হয়। তাদের জন্য গরুর মাংস, মুরগির মাংস, ডিম, দুধ, মাছ, কলা, ফলসহ আরও অনেক খাবার পরিবেশন করা হয়ে থাকে। অনেক সময় তাদের পরিবারের দেওয়া খাবারও অনুমতি সাপেক্ষে খেতে দেওয়া হয়। তবে সেটি শুধুমাত্র বিশেষ দিনকে কেন্দ্র করে।
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু খাবারই নয়, ঈদের দিন সবাই একইসঙ্গে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে। কেউ ভলি বল খেলে, কেউ লুডু খেলে আবার কেউ গল্পে মেতে থাকে। কেউ বা ঢাক ঢোল বাজিয়ে গান করে। এদিন গুরুতর অপরাধ ছাড়া কোনো কয়েদিকে বকাঝকাও করা হয় না।’
কারা অধিদফতরের অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল ইকবাল হাসান বলেন, ‘কারাগারে যারা থাকে তারাও মানুষ। ভুলের কারণে তারা আজ কারাবন্দি। আমরা ওদের মানুষের জায়গা থেকেই চিন্তা করি।’
তিনি বলেন, ‘আগের চেয়ে বর্তমানে বন্দি সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হওয়ায় কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। এতো মানুষের রান্না করাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। তারপরও বন্দিদের মাঝে ঠিকভাবে খাবার বিতরণ করা হয়েছে।’