ঈদ যাত্রায় সঙ্গী ফিটনেসবিহীন গাড়ি
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঈদযাত্রায় কোনো ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামনো যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পাশাপাশি বিআরটিসিকে অভিযান চালাতেও বলেছিলেন। কিন্তু মন্ত্রীর কথাকে পাত্তাই দিচ্ছেন না বাস মালিকরা। ঈদযাত্রায় প্রতিবারের মতো এবারও রাস্তায় নেমেছে ফিটনেস বিহীন গাড়ি। লক্কড়-ঝক্কর এসব গাড়িতে নতুন রং করে রাস্তায় ছাড়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গাবতলী এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
সবার চোখের সামনেই চলছে এ অনিয়ম। যদিও বাসমালিকদের দাবি ঈদযাত্রার অতিরিক্ত চাপ সামাল দিতেই তাদের এ কর্মসূচি।
ঈদের আগের তিন-চারদিন সময় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ তাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ছুটে চলেন যে যার আপনালয়। মানুষের চাপের বিপরীতে যানবাহন সংকট হয়ে পড়ার সেই সুযোগ কাজে লাগায় একশ্রেণির পরিবহন ব্যবসায়ী। রাস্তায় তখন ভালোমন্দ গাড়ির বাছ বিচার না করে মানুষজন হাতের কাছে যা পায় সেসব গাড়িতেই উঠে যাত্রা শুরু করেন। উপরে রং লাগিয়ে লক্কড়-ঝক্কর এসব গাড়ি সড়কে নামানোর সঙ্গে সঙ্গে কোথাও না কোথাও বিকল হয়ে পড়ে। ফলে রং চং মাখা এসব গাড়ির কারণে ঈদে ঘরমুখো মানুষজন রাস্তায় রাস্তায় ভোগান্তির শিকার হন। সেই যেনো দুর্ঘটনাও।
আরও : আমার ঈদ কাটছে চিন্তা ও উত্তেজনায় : বুবলী
বাসযাত্রী রফিকুল ইসলাম জানালেন, রং চং মেখে গাড়িগুলো রোডে নামানোর ফলে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। আসলে এই গাড়িগুলো হচ্ছে ওপরে ফিটফাট এবং ভেতরে সদর ঘাট। রফিকুল ইসলামের মতো অনেক যাত্রী একই কথা বলেন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঈদযাত্রায় ফিটনেসবিহীন যানবাহনগুলো প্রধানত দুইভাবে ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রথমটি হলো, ব্যস্ত সড়কে বিকল হয়ে পড়া। ঈদের সময় রাস্তায় প্রচুর যানবাহনের চাপ থাকে। এ অবস্থায় রাস্তার মাঝে কোনো গাড়ি বিকল হলে তা রেকার দিয়ে সরাতেই ১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় লাগে। এ সময়ে সড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট, যা স্বাভাবিক হতে লেগে যায় আরও কয়েক ঘণ্টা। ফিটনেসবিহীন গাড়ি কারিগরিভাবে কোনোভাবেই দূরপাল্লায় চলাচলের উপযোগী নয়। তারপরও প্রতি ঈদেই রাস্তায় এগুলোর চলাচল লক্ষণীয়ভাবে চোখে পড়ে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে কয়েকদিনে সারা দেশে ২০৫টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ২৭৪ জন। আহত হয় আরও ৮৪৮ জন। বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে এ পরিসংখ্যান তৈরি করেছে সংগঠনটি। তাদের তথ্যানুযায়ী, সারা দেশে বর্তমানে প্রায় তিন লাখ ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল করছে। এর মধ্যে অন্তত ১৫ হাজার ফিটনেসবিহীন বাস ঈদ উপলক্ষে রাস্তায় নামছে।