সোমবার, ২১শে মে, ২০১৮ ইং ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে টর্নেডোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি॥ ৫জন আহত॥

আশুগঞ্জ প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের চারটি গ্রামে টর্নেডোর আঘাতে ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘর চাপায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫জন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। রবিবার রাতে উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের সোহাগপুর, দূর্গাপুর, তাজপুর, খড়িয়ালা গ্রামের অন্তত ২০টি ঘরবাড়ি, ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত হয়েছে ও অসংখ্য গাছপালার উপড়ে গেছে। বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ায় অন্তত ১০টি পরিবার এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হচ্ছে। খবর পেয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা মৌসুমী বাইন হীরা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরসনের জন্য তালিকা করে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দূর্গাপুর গ্রামের হাজী ইউসুফ পাড়ার ইসহাক মিয়া, ফাইজুর মিয়া, মহিউদ্দিন ও মিজান মিয়ার চারটি সবত ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে । ইসহাক মিয়া জানান রবিবার রাতে হঠাৎ বিকট শব্দে বাড়ির পাশে একটি ১৫০ ফুট লম্বা কাঠ গাছ তার ৩টি বসত ঘরসহ ৪টি ঘরের উপরে পরে ঘরের যাবতীয় আসবাব পত্রসহ যাবতীয় মালামাল বিধ্বস্ত হয় এবং ২ জন মহিলা জাহানারা ও সাহেদা বেগম আহত হন। এতে তাদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার মতন । একই গ্রামের রাধানগরের হাকিমুল্লার একটি পোল্টি খামার ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়। এতে তারও ক্ষতি হয়েছে ২ লক্ষ টাকার মত বলে জানান খামারের মালিক হাকিমুল্লা। খড়িয়ালা গ্রামের একই চিত্র, দুলাল মিয়ার একটি বসত ঘরে বাড়ির পাশের বড় নিম গাছ পড়ে ঘরটি দুমরে মুরছে যাওয়ায় ঘরের যাবতীয় মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। এতে তার ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মত , আবরু মেম্বারের বাড়ির একটি বসত ঘরে টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে যায়, এতে তার ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ টাকা, আব্দুল মান্নাফের একটি বসত ঘরের টিনের চালা ও বেড়া ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে যায়, এতে তার ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ টাকা ও জাহের মিয়ার ১টি বসত ঘর ও আব্দুল মান্নাফের একটি বসত ঘরের টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে যায়, খড়িয়ালা বাসস্ট্যান্ডের মদিনা বেডিং স্টোর নামে একটি তুলা কারখানা ও জাহাঙ্গীর স্টোর টর্নেডোতে বিধ্বস্ত হয়।

মদিনা বেডিং স্টোরের সত্ত্বাধীকারী জাহিদুল ইসলাম জানান, বছর খানেক আগে ব্যাংক থেকে ১০ লক্ষ টাকা ঋন নিয়ে মদিনা বেডিং স্টোর নামে একটি তুলা কারখানা নির্মাণ করেছিলেন তারও টর্নেডোর আঘাতে কারখানার টিনের চালা ও তুলা উড়িয়ে নিয়ে যায় এতে তার ক্ষতি হয়েছে ১১ লক্ষ টাকা। এবং জাহাঙ্গীর স্টোরের টিনের চালা উড়িয়ে নেওয়ার দোকানের মালামাল নষ্ট হয়ে যায় এতে তার ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ টাকার মত। তাছাড়াও তাজপুর গ্রামের ৫টি বসত ঘর বিধ্বস্ত হয়।

দূর্গাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী মোঃ জিয়াউল করিম খান সাজু জানান, রবিবার রাতে টনের্ডোর আঘাতে খড়িয়ালায় ১০টি ঘর, দূর্গাপুরে ৫টি ঘর ও তাজপুরে ৫টি ঘর বিধ্বস্ত হয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া সোহাগপুর-খড়িয়ালা সড়কের সোহাগপুরে গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তবে গাছ কেটে যোগোযোগ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা মৌসুমী বাইন হীরা জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে দ্রুত সরকারী ভাবে ত্রান সহায়তা দেয়ার চেষ্টা চলছে।

Print Friendly, PDF & Email