এ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে গঠিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটির প্রতিবেদন সোমবার মাধ্যমিক ও শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিবেদনে ফাঁস প্রশ্নের সুযোগ নেয়া শিক্ষার্থীদের ফল বাতিলসহ চারটি সুপারিশ করা হয়েছে।
এদিকে ২ এপ্রিল থেকে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস রোধে ৮টি পদক্ষেপ নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই সব পদক্ষেপ যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাঠপ্রশাসনের সহায়তা চেয়ে আজ দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব। এছাড়া ১৯ মার্চ ৮ বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক ডাকা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ফাঁস হওয়া প্রশ্নে যেসব শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে তাদের ফল আমরা প্রকাশ করব না। ফল স্থগিত থাকবে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনে বাতিল করব। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এখন পর্যন্ত আমরা এমন ৫০ হাজার শিক্ষার্থী পেয়েছি। তবে তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পরই আমরা চিহ্নিতদের পরীক্ষার ফল বাতিল করব।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনটি উপায়ে ফাঁস প্রশ্নের সুবিধাভোগী শিক্ষার্থী চিহ্নিত করার কাজ চলছে।
১. পরীক্ষার দিন ও এর আগের দিন বিকাশ এবং রকেটসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে যারা অর্থ লেনদেন করেছে। সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা লেনদেনকারী গ্রাহকের তথ্য নেবে মন্ত্রণালয়। এরপর ওইসব গ্রাহকের পরিবারে কোনো এসএসসি পরীক্ষার্থী আছে কিনা তা চিহ্নিত করা।
২. ফেসবুকের যেসব ক্লোজ গ্রুপে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে সেইসব গ্রুপের সদস্য চিহ্নিত করা।
৩. গ্রেফতার ও বহিষ্কৃত ব্যক্তি, শিক্ষক-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য।
উল্লেখ্য, চলতি বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার পরীক্ষায় ২০ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়ে আর শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই তা মোবাইলের মাধ্যমে পেয়ে যায়।
চলতি এসএসসি পরীক্ষায় এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সবকটি বিষয়েরই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ পাওয়া গেলো। যা প্রশ্নপত্র ফাঁসের রেকর্ড ।
প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে পরীক্ষার সময় কোচিং সেন্টার বন্ধ, পরীক্ষার্থীদের আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষাকক্ষে বসা এবং কেন্দ্রের ভেতর মোবাইল ফোন না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। কিন্তু কোনো পদক্ষেপই কাজে আসেনি। পরে প্রশ্ন ফাঁসকারীদের ধরিয়ে দিলে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণাতেও লাভ হয়নি। পরীক্ষার দিন ইন্টারনেট সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধের চেষ্টা করেও প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানো যায়নি। সূত্র: নিউজ ২৪