দমকলকর্মীরা আরেকটু আগে এলে অনেক বেশি মানুষকে বাঁচানো যেত
নিউজ ডেস্ক : কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের যাত্রীবাহী বিমানটি একটি খোলা মাঠে ধসে পড়ে এবং সেটির ভেতর থেকে ধোয়ার কুণ্ডলী বেরিয়ে আসতে শুরু করে। এর পর মাঠ থেকে গাঢ় ধূসর কুণ্ডলী চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
উদ্ধারকারীরা দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া বিমানের কাছে দিকে গিয়ে ভেতর থেকে যতজনকে সম্ভব বের করে আনার চেষ্টা করেন।
নেপালির লোকজন চিৎকার করে ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ বলে সাহায্য চাচ্ছিলেন। বাংলাদেশিরা ইংরেজিতে বলছিলেন- হেল্প মি, প্লিজ হেল্প মি…।
বালকৃষ্ণ উপধ্যায় নামে একজন উদ্ধারকারী সেনা কর্মকর্তা মার্কিন নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকাকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
উপধ্যায় বলেন, পুরো ঘটনাটিই ছিল বিভীষিকাময়।
তিনি বলেন, আমি নেপালি সাংবাদিক ভদ্র শর্মার সঙ্গে বিমানবন্দরে যাই। ফটকের বাইরে পাথরের নুড়ির স্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে দেখছিলাম, আগুন বের হওয়া বিমানে পানি ছিটানো হচ্ছে।
তখন একজন দমকলকর্মী আমাদের তাদের সঙ্গে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান। কয়েকজন নেপালি আলোকচিত্রী তার পিকআপে লাফিয়ে ওঠেন এবং আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। সেখান থেকে প্লাস্টিক পোড়ার গন্ধ ছড়াচ্ছিল, যা ছিল খুবই বিষাক্ত।
খোলা মাঠের ঘাস থেঁতলে কালো হয়ে গেছে। চারপাশে ছেঁড়া কাগজ, ছিন্নভিন্ন আসন ও ফোমের টুকরা ছড়িয়ে পড়েছে। একটি ধাতুর তৈরি পানির বোতলও পড়েছিল। বিধ্বস্ত বিমানের কয়েকটি বড় খণ্ডাংশ পড়ে থাকতে দেখেছি। পুড়ে যাওয়া এসব খণ্ডাংশ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল। বিমানের লেজটি অক্ষত ছিল।
দগ্ধ ঘাসের ওপর হলুদ ব্যাগের দীর্ঘ সারি। পুলিশ কর্মকর্তারা হতাহতদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। একটি খোলা ব্যাগের ভেতর থেকে একটি দগ্ধ অঙ্গ বাইরে বেরিয়ে ছিল। বিমানবন্দরের কয়েকজন কর্মী বলেন, বিমানটি রানওয়ে থেকে ৫০ ফুট দূরে চলে গেছে। বিমানটি বিমানবন্দরের বেড়া ছাড়িয়ে খোলা মাঠের দিকে অধোমুখ হয়ে ধসে পড়ে।
তারা জানান, উদ্ধারকারীদের প্রথম দলটি যখন বিমানের সামনের দিক থেকে ভীতসন্ত্রস্ত যাত্রীদের বের করে নিয়ে আসছিলেন, এর কয়েক মিনিট পর সেটির পেছনের দিকে বিস্ফোরণ ঘটে।
বিমানবন্দরে একটি জ্বালানি কোম্পানিতে ড্রাইভার হিসেবে কাজ করেন কৈলাশ অধিকারী। তিনি বলেন, বিধ্বস্ত বিমানটি থেকে বোমা বিস্ফোরণের মতো শব্দ হয়েছে। আগুন নেভাতে দমকলকর্মীদের ১৫ মিনিট সময় লেগেছে। তবে তারা যদি আরেকটু আগে আসতেন, তবে আরও বেশি লোককে প্রাণে বাঁচানো যেত।