সোমবার, ২১শে মে, ২০১৮ ইং ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুরে নারীর প্রতি সহিংসতা, মাদক ও হুন্ডি ব্যবসা বন্ধে আমি বদ্ধ পরিকর : ওসি নিজামউদ্দিন

ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর থেকে : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের দরিদ্র গৃহিনী ফরিদা বেগম(ছদ্মনাম)।স্বামী মধ্যপ্রাচ্যে।তিন সন্তানের মা।বাড়িতে একা থাকায় গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আইয়ূবপুর ইউনিয়নের দুই পরিচিত দূর্বৃত্ত যুবক তাকে পালাক্রমে ধর্ষন করে।বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় মামলা হয়।ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষনের আলামত পরীক্ষা শেষে প্রমানীতও হয়।এর আগে ফরিদা মামলার বিষয়ে খোজ খবর নেয়ার জন্য একাধিকবার থানায় ধর্না দিয়েও কাজ হয়নি।প্রভাবশালী আসামী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো।

ইউনিসেফের ফোকাল পার্সন,মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক ফয়সল আহমেদের মধ্যস্ততায় ফরিদা তার অভিযোগ সবিস্তারে তুলে ধরেন নতুন যোগদানকৃত মডেল থানার সুযোগ্য অফিসার্স ইনচার্জ মো.নিজামউদ্দিনের সাথে।সময়টা ছিলো রবিবার(২৬ ফেব্রæয়ারি) সকালে এই বিষয়ে থানায় বসে কথা হয়।

ওসি মো.নিজামউদ্দিন বলেন,-‘ফরিদা দরিদ্র।তার হয়তো মামা-খালু নেই।অর্থ নেই। কিন্তু আমি কথা দিচ্ছি-আগে কি হয়েছে জানি না,এই মামলার আসামীকে যথাশীঘ্র সম্ভব গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

ওসি আরো বলেন, হুন্ডি ব্যবসায়ীদের লম্ফঝম্ফ বন্ধ করা হবে।ছিনতাই,মাদক, ইভটিজিং, মাস্তানি বন্ধে যা যা করার তা-ই আমি দলমত নির্বিশেষে সবার জন্য করার চেষ্টা করবো।

ইতোমধ্যে,ওসি নিজামউদ্দিন ঘোষনা করেন,‘স্কুল-কলেজের কোন শিক্ষার্থী অতীব জরুরী কাজ ছাড়া সন্ধ্যা ৭ টার পর বাজারে ঘুরাফেরা করলে তাকে আটক করা হবে’।এই ঘোষনা ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রশংসা কুড়িয়েছে অভিভাবক মহলে।কমে এসেছে মাদক ব্যাবসা।কমেছে অপরাধ।এলাকাবাসী মনে করেন,ওসি নিজামউদ্দিন বাঞ্ছারামপুরের আইন-শৃংখলা বজায় রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেন।

মাদক নিয়ে বলেন-দেশজুড়ে মাদকের ভয়ঙ্কর নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। দেশের ৩২ জেলার সীমান্তবর্তী ৫১ পয়েন্ট দিয়ে পাচার করে আনা হচ্ছে হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। তেমনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া-কসবা সহ বিভিন্ন স্থলপথ, জলপথ বাঞ্ছারামপুরে ঢুকছে হরেক নামের মাদক। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সহজেই তা ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে।

অনেক এলাকায় খুচরা বিক্রেতারা দিচ্ছেন ‘হোম সার্ভিস’। ফোন করলেই বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত মাদক। আর মাদকের সেলসম্যানের ভূমিকায় রয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী। এদিকে অবৈধ অস্ত্র, অর্থ আর রাজনৈতিক প্রভাবে দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে এই মাদক মাফিয়ারা।

পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এখন তাদের সঙ্গে পেরে উঠতে পারছে না। মাদকের ডেরায় অভিযান চালালেই মাদক মাফিয়ারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে। এ অবস্থায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধ্বংসের মাদক ব্যবসার প্রসার হচ্ছে দ্রুত। সব বন্ধের জন্য আমিসহ আমার সহকর্মীরা আগের চেয়ে আরো বেশী সোচ্চার হবো- বলেন ওসি নিজামউদ্দিন।।

Print Friendly, PDF & Email