নোট-গাইডের বিষয়ে অনুসন্ধান করবে দুদক
নিজস্ব প্রতিবেদক : নোট-গাইড প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের ঘোষণা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এক ব্যক্তি দুদকে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগে বলা হয়, দেশে ‘নোট বই (নিষিদ্ধকরণ আইন) ১৯৮০’ থাকা সত্ত্বেও দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কিছু কর্মকর্তা নিয়মিত মাসোহারা নিয়ে এসব ব্যবসায় সাহায্য করে আসছেন। বেশ কয়েকটি নোট বা গাইড বই প্রকাশনা সংস্থার কর্ণধারদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়েও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দুদকের ঢাকা বিভাগের পরিচালক নাসিম আনোয়ারের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল রাজধানীর নীলক্ষেতের হজরত শাহজালাল, বাবুপুরা, বাকুশাহ ও ইসলামিয়া মার্কেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে অনুসন্ধান চালায়। দলটি প্রতিটি দোকানে প্রচুর পরিমাণে নোট বা গাইড বইয়ের মজুত দেখতে পেয়েছে। টেস্ট পেপার, সহায়ক বই, মেইড ইজি প্রভৃতি বিভিন্ন নামে এগুলো বিক্রি হচ্ছে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণির বিভিন্ন গাইড বই এবং প্রফেসরস, ওরাকল, এমপিথ্রি, থ্রি ডক্টরস ও সাইফুরসের নামে চাকরি পরীক্ষার গাইড বই বাজারে পেয়েছেন তাঁরা।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, বাজার ঘুরে তাঁরা দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির গাইড বই প্রকাশ ও বিপণনকারী কয়েকটি সংস্থার তালিকা করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে পাঞ্জেরী, লেকচার, অনুপম, নবদূত, জননী, পপি ও জুপিটার প্রকাশনী। নবম ও দশম শ্রেণির গাইড বই প্রকাশনা সংস্থাগুলো হলো পাঞ্জেরী, লেকচার, অনুপম, রয়েল, আদিল, কম্পিউটার, জুপিটার ও ইংরেজি ভার্সনের জন্য ক্লাসিক। এ ছাড়া একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির গাইড বই যারা বাজারজাত করছে, তাদের মধ্যে লেকচার, পাঞ্জেরী, জ্ঞানগৃহ, জুপিটার, পপি, মিজান লাইব্রেরি, কাজল ব্রাদার্স, দি রয়েল সায়েন্টিফিক পাবলিকেশনস উল্লেখযোগ্য।
দুদক সূত্র জানায়, আইন থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এই বইগুলো প্রকাশ্যে বাজারে বিক্রি হচ্ছে, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে দুদক। পাশাপাশি এই ‘অবৈধ’ ব্যবসার মাধ্যমে যেসব প্রকাশনা সংস্থা সম্পদ অর্জন করেছে, তাদের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাঞ্জেরী পাবলিকেশনসের কর্ণধার এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান শায়ক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওনারা (দুদক) ওনাদের মতো করবেন। আমরা আমাদের কাগজপত্র দেখাব। বিষয়টি খুব পরিষ্কার। আমরা তাদের সহযোগিতা করব।’
চলতি মাসের শুরুতে কোচিং-বাণিজ্যে যুক্ত রাজধানীর আটটি স্কুলের ৯৭ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলোর কাছে চিঠি পাঠায় দুদক। এ ছাড়া শিক্ষাক্ষেত্রে অন্যান্য অনিয়মের বিষয়েও অনুসন্ধান ও তদন্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে।