ছাত্রলীগের স্কুল কমিটির দরকার নেই : কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্প্রতি ছাত্রলীগের স্কুল কমিটি করার ঘোষণার সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘স্কুল কমিটির ধারণাটা সঠিক হয়নি। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি থাকবে, থাকতে হবে। কিছু কিছু বিশৃঙ্খলা যা ঘটে সে ব্যাপারে ছাত্রলীগকে সতর্ক থাকতে হবে। এটা নির্বাচনের বছর। যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না ঘটে। কেউ কেউ অপকর্ম করবে আর সেটার দায় নেবে দল? সেটা হয় না। তাই বলি স্কুল পর্যায়ের কমিটি করার দরকার নেই।’
শনিবার দুপুরে বাংলা একাডেমিতে ছাত্রলীগের উদ্যোগে বিজয় দিবস ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা এখন দরকার নাই। এখন সমালোচনা ডেকে আনার দরকার নেই স্কুল কমিটি করে। ছেলে-মেয়েরা পিঠে বই পুস্তকের বোঝা নিয়ে যেন মরুভূমির পথ বেয়ে চলছে। বাচ্চাগুলোকে দেখলে এমনই মনে হয়। তারপর আবার রাজনীতির আরেক বোঝা! দরকার নেই এসবের।
অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের আলোচনা সভাগুলো ঘরোয়া সেমিনার ধরনের না হওয়াই ভালো। এমন আলোচনা সভা বটতলায় হওয়া ভালো। কারণ, এমন মিলনায়তনে একটি হল শাখা ছাত্রলীগের কমিটির নেতা-কর্মীদের স্থান সংকুলান হয় না। এছাড়া যারা প্রতিদিন একই কথা শুনে অভ্যস্থ, তাদের বাদ দিয়ে ছাত্রলীগের প্রতি যেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা আগ্রহী হয়—সে জন্য বটতলায় এসব অনুষ্ঠান হলে ভালো।’
কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগের গুণগত গভীরতা নিয়ে কিছু কিছু জায়গায় আমার প্রশ্ন আছে।’
বিএনপির নেতারা বিভিন্ন সময় বলে আসছে দেশে আইনের শাসন নাই। এ বক্তব্যের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, অনেক ছাত্রলীগের ছেলে আছে এখন জেলে। কারো কারো যাবজ্জীবন জেল হয়েছে। কারো ফাঁসি পর্যন্ত হয়েছে। কিন্তু বিএনপির আমলে তাদের দলের কোনো নেতাকর্মীর বিচার হয়েছে?
তিনি বলেন, ‘আমাদের লোকেরা অপকর্ম করে। সেই অপকর্মের ফলও ভোগ করতে হয়। একজন মন্ত্রীর ছেলে হয়ে জেলে। এমপি কারাগারে। আরেক এমপি আদালত থেকে জামিন নিয়ে আছেন। দুই মন্ত্রীকে দুদকের মামলায় কোর্টে গিয়ে হাজিরা দিতে হয়। বিএনপির আমলে কি এসব কখনো হয়েছে? কোনো বিচার হয়নি। কিন্তু আমরা কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেব না।’
এ সময় রংপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা সংবাদের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কত রকমের লেখা-লেখি। কেউ কেউ আদা-জল খেয়ে রাজনীতিক কারণে নেমে পড়েছে আমাদের বিরুদ্ধে। সেটা আমরা বুঝি। আমরা বুঝি প্রথম পাতা শেষ পাতা সরকারের বিরুদ্ধে দিচ্ছে। সবই বুঝি।’
কাদের বলেন, কুমিল্লায় আমরা যখন ৩৫ হাজার ভোট আগের চেয়ে বেশি পেলাম সেটা কিন্তু কেউ লেখেনি। আবার নারায়ণগঞ্জে আমরা দেড়গুণ বেশি ভোট পেয়ে জিতেছি। সেটাও লিখেনি। এখন রংপুরের মেয়র আমরা হেরেছি। কাউন্সিলরে প্রথম হয়েছি। সেটাও কেউ বলেনি। আমরা হারলাম কোথায়?
নির্বাচন কমিশনের প্রতি বিএনপি অনাস্থা প্রকাশের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কুমিল্লায় আস্থা ছিল। রংপুরে নেই। কেমনে আপনাদের টেনে তুলবে? আপনারা তো ২য়ও হন নাই। হয়ে গেলেন তৃতীয়। তৃতীয়ককে টেনে তুলবে কিভাবে। নির্বাচন কমিশনের কী এটা দায়িত্ব? তাহলে তো আগামী নির্বাচনে তিনশত আসনই আপনাদের দিতে হবে। নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা অর্জনের জন্য।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন প্রমুখ।