রোহিঙ্গা নিধন: মিয়ানমারের জেনারেল মার্কিন কালো তালিকায়
রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নির্মূলের নির্দেশ দেয়ার জন্য অভিযুক্ত মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তা মং মং সোকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেজারি বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার হরণ ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযুক্ত ৫২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কালো তালিকা প্রকাশ করে। এতে জেনারেল সোর নাম রয়েছে।
মার্কিন ট্রেজারির সেক্রেটারি স্টিভ মুচিন বলেন, জেনারেল সোয়েকে কালো তালিকাভুক্ত করার মধ্য দিয়ে তারা মিয়ানমারকে এ বার্তা পাঠিয়েছেন যে, অপকর্মের জন্য তাদের বিরাট মাসুল গুনতে হবে।
গত আগস্টে সংঘাত শুরু হওয়ার পর মিয়ানমার থেকে পালিয়ে সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের অনেকেই গুলিবিদ্ধ বা জখম অবস্থায় এসেছে। তারা বলেছে, মিয়ানমারের সৈনিকরা স্থানীয় উশৃঙ্খল বৌদ্ধদের সঙ্গে নিয়ে তাদের গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে এবং তাদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে।
জাতিসংঘ রাখাইন সেনাদের নিপীড়নকে পাঠ্যপুস্তকে লিখে রাখার মতো ‘জাতিগত নির্মূল’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
মার্কিন ট্রেজারির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে পরিচালিত সামরিক অভিযানকালে ব্যাপকহারে সংঘটিত মানবাধিকার লংঘনের জন্য জেনারেল সো।
রোহিঙ্গা নিধন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হওয়ার পর গত মাসে জেনারেল সোয়েকে তার দায়িত্ব থেকে বদলি করা হয়। তবে মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে বদলির কোনো কারণ জানায়নি।
এদিকে চলতি সপ্তাহে মিয়ানমারে মানবাধিকার হরণের অভিযোগের তদন্তে নিয়োজিত জাতিসংঘের কর্মকর্তা ইয়াংঘি লির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
মিয়ানমার সরকার বলছে, তারা ইয়াংঘি লিকে ঢুকতে দেবে না। কারণ তিনি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ না। তবে লি বলেন, তাকে প্রবেশ করতে না দেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের সিদ্ধান্ত এই ইঙ্গিত দেয় যে, রাখাইনে এমন কিছু হয়েছে যা আসলেই ভয়ংকর।’
বহু প্রজন্ম ধরে রাখাইনে বসবাসকারী আদিবাসী রোহিঙ্গারা সাধারণত ইসলাম ধর্মাবলম্বী। মিয়ানমার সরকার তাদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি না দিয়ে উল্টো বলছে, তারা বাংলাদেশ থেকে যাওয়া শরণার্থী।