নাসিরনগরে সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খানের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ
---
আকতার হোসেন ভুইয়া, নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি : উপজেলার ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে রবিবার জেলা প্রশাসক কাছে পৃথক দুটি অভিযোগ দাখিল করেছে এলাকাবাসী। অভিযোগ থেকে জানা গেছে,উপজেলা ভূমি অফিসে ২০১৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খান যোগদান করেন। ভূমি অফিসের কানুনগো না থাকায় তিন বছর ধরে বহাল তবিয়তে থাকা সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খানই এ দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
ভুক্তভোগী উপজেলার ১৩নং ধরমন্ডল ইউনিয়নের ২৮ জনের স্বাক্ষরিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ধরমন্ডল মৌজার ১/১ খতিয়ানের ৪১১৫ নং দাগের ২৯০ শতাংশ গোবাম ভূমি গ্রামের জনসাধারণের জন্য ব্যবহার উম্মুক্ত ছিল। কিন্তু সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খান কতিপয় দালালের মাধ্যমে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে এক ভূয়া দলিল তৈরি করে গোবাম ভূমি কতিপয় ৪জন ব্যক্তির নামে ১৮৪/১৭১৮ নং নামজারি মোকদ্দমার খারিজের মাধ্যমে তাদেরকে মালিক বানিয়ে দেন। অভিযোগকারীরা ১৮৪/১৭১৮ নং নামজারি মোকাদ্দমার খারিজ বাতিল করে সরকারি সম্পত্তি উম্মুক্তভাবে এলাকাবাসীকে সুযোগ দিয়ে অভিযুক্ত সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খানসহ তার কতিপয় দালালের বিরুদ্ধে আইননুক ব্যবস্থা গ্রহন করতে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খানের বিরুদ্ধে নাসিরনগর সদর ইউনিয়নের ৪৩ জনের স্বাক্ষরিত অভিযোগে জানা গেছে তার বিরুদ্ধে ঘুষ হিসেবে নগদ টাকা,জমি ও তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করেছে। জনৈক ফেরদৌসী বেগমের নামে ভূমি অফিসে খারিজের প্রস্তাব করলে এবিষয়ে ছুরু রহমান মিয়া সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খানকে খারিজ না করে দেয়ার অনুরোধ করলে সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খান জানান তার নামে খারিজ হয়ে গেলে পরে এ খারিজ বাতিল করে দেয়া হবে এ মর্মে ছুরু রহমানের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেছে।
বর্তমানে ফেরদৌসী বেগমের নামজারী জমাখারিজ মোকদ্দমা নং ১৮৯৮/১৬-১৭ ইং সনে ২৮৮৫ নং খারিজ বাতিলের শুনানীর জন্য অপেক্ষায় আছে।এছাড়া নাসিরনগর কলেজ মোড়ের আনসার সদস্য রুক্কু মিয়ার পৈত্রিক খরিদ সম্পত্তি ১১ শতকের খারিজের প্রস্তাব করলে সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খান ও তার কতিপয় দালাল প্রস্তাব করেন রুক্কু মিয়াকে তার জায়গার পাশে থাকা ৪ শতক সরকারি জায়গাসহ ১৫ শতক ভূমি তার নামে খারিজ করিয়ে দেয়া হবে বিনিময়ে সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খানকে ২ শতক জায়গা সাফ কবলা দলিল করিয়া দিতে হবে।যা তাদের কন্ঠের রেকর্ডসহ জেলা প্রশাসকের কাছে দাখিল করেছেন। সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খান বিভিন্ন জায়গায় দালাল নিয়োগ করে তাদের মাধ্যমে মক্কেল সংগ্রহ করে থাকেন। তাই ভুক্তভোগীরা অভিযুক্ত সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খানের দৃষ্টান্তমূল শাস্তির দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।এসবের সাথে তিনি জড়িত নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ লিয়াকত আলী বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। স্যার আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। যদি অভিযোগের সত্যতা পাই তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।