সিঙ্গাপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে পুরনো এবং বড় ক্যাম্পাস বিশিষ্ট এই বিশ্ববিদ্যালয়টি রয়েছে টপচার্টে এশিয়ার মধ্যে প্রথম অবস্থানে। ১.৫ বর্গকিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট এই বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থা করছে সাউথইষ্ট সিঙ্গাপুরের কেন্ট রিজ এলাকায়। এশিয়ার মধ্যে গবেষণার জন্য বিখ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯০৫ সালে। মেডিক্যাল সাইন্সের পাশাপাশি আরও ১২টি অনুষদ পড়ানো হয়ে থাকে এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। অনুষদগুলো হচ্ছে, কলা এবং সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, কম্পিউটার বিজ্ঞান অনুষদ, ব্যবসায় অনুষদ, দন্তবিজ্ঞান অনুষদ, আইন অনুষদ, ডিজাইন ও পরিবেশ অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ, যন্ত্রবিজ্ঞান অনুষদ, পাবলিক পলিসি অনুষদ। ২৭ হাজার ২২১ জন স্নাতক পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীর জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২১৯৬ জন শিক্ষক, ৬টি আবাসিক হল, ৭টি লাইব্রেরি এবং ১০০০ কম্পিউটার। রয়েছে একটি সার্বক্ষণিক সাটল বাস, যা ছাত্র-ছাত্রীরা সবসময় ফ্রি ব্যবহার করতে পারে। পড়াশোনার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়টি ইংরেজি শিক্ষা এবং ক্যারিয়ার উন্নয়নের উপর আলাদা গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
হংকং বিশ্ববিদ্যালয়
১৯১১ সালের ৩০ মার্চ স্থাপিত। হংকং-এর সবচেয়ে পুরনো এই বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থান করছে টপ চার্টের দ্বিতীয় স্থানে। ১০টি অনুষদের অধীনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে মূলত ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানো হয়ে থাকে। অনুষদগুলো হচ্ছে— স্থাপত্যবিদ্যা, মানবিক, আইন, সমাজ বিজ্ঞান, ব্যবসা এবং অর্থনীতি, বিজ্ঞান, চিকিত্সা, কৃষি, মেডিক্যাল সায়েন্স এবং যন্ত্রবিজ্ঞান। ২০১২ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল টিম সর্বপ্রথম কর্নিয়া ভাইরাস-এর প্রতিষেধক আবিষ্কার করে থাকে। ২০০৮-০৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২১৬২৫ জন। তার মধ্যে ১১৯৬২ জন স্নাতক পর্যায়ের, ৭,৩২৬ জন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের এবং ২,৩২৬ জন রয়েছে গবেষণার কাজে। এদের মধ্যে ৬,৮১৪ জন এসেছে বিশ্বের ৮৩টি দেশ থেকে। আর এতো বিশাল অংকের ছাত্র-ছাত্রীর জন্য রয়েছে ১৯টি আবাসিক এবং ৩টি অনাবাসিক হল। ১৯১২ সালে নির্মিত হওয়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিটি হংকং-এর সবচেয়ে পুরনো লাইব্রেরি। এখানে এখন মোট বইয়ের সংখ্যা ২.৩ বিলিয়ন।
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়
টোকিওতে অবস্থিত এশিয়ার এ বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থান করছে টপচার্টের তিন নম্বরে। ১৮৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি তার কার্যক্রম শুরু করে মূলত টোকিও ইম্পেরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় নামে। পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিশ্বশক্তির হেরে যাবার পরে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়। ৫টি ক্যাম্পাস বিশিষ্ট এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে ৩০ হাজার ছাত্র-ছাত্রী। যার মধ্যে ২,১০০ জন রয়েছে বিদেশি। জাপানের সবচেয়ে পুরনো এ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ১০টি অনুষদে পড়ানো হয়। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত জাপানের ১৫ জন প্রধানমন্ত্রী এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ৭ জন। এ বিশ্ববিদ্যালয়টি অ্যাকাডেমিক রাঙ্কিং অনুযায়ী এশিয়াতে প্রথম এবং পৃথিবীর সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বিশতম অবস্থানে রয়েছে।
হংকং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
পাবলিক গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি টপচার্টে এশিয়ার মধ্যে চার এবং হংকং-এ দুই নম্বরে অবস্থান করছে। এটা হংকং-এর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিটি স্বীকৃত নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি। টাইমস বিশ্ববিদ্যালয় রাঙ্কিং অনুযায়ী ৫৭তম অবস্থানে থাকা এ বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯১ সালে, ৫৮ হেক্টর জমির নিয়ে। বর্তমানে হংকং-এর এই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রেসিডেন্ট-এর দায়িত্ব পালন করছেন টনি. এফ. চান। ৫টি স্কুলের অধীনে মোট ২৩টি অনুষদে এখানে পড়ানো হয়। স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং গবেষণার কাজে নিয়জিত সব মিলিয়ে ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে ৮৯৭১ জন। এদের মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন ৩৬২৫ জন। এ বছর শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা ইকোনমিষ্ট-এর পরিসংখ্যানে এটি এশিয়াতে তৃতীয় হয়েছে।
কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়
টপচাটের ৫ম অবস্থানে থাকা এই বিশ্ববিদ্যালয়টি নিজেকে পরিচয় দিয়ে থাকে একটি ‘স্প্রিট অফ ফ্রিডম’ নামক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে। জাপানের কিয়োটো শহরে অবস্থিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের ৭টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি। পুরো এশিয়াতে গবেষণার জন্য বিখ্যাত, তিনটি ক্যাম্পাস বিশিষ্ট এই বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৮৬৯ সালে। জাপানের দ্বিতীয় পুরাতন এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষক রয়েছে ২৮৬৪ জন এবং মোট ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে ২২,৭০৭ জন। ১.৩ বর্গ কিলোমিটারের উপর নির্মিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট ১০টি অনুষদের অধীনে ১৯টি বিষয়ের উপর পড়ানো হয়। অনুষদগুলো হচ্ছে— মানবিক, লেটার, শিক্ষা, অর্থনীতি, আইন, বিজ্ঞান, চিকিত্সা, কৃষি, ফার্মাসিউটিক্যাল সাইন্স এবং যন্ত্রবিজ্ঞান। টাইমস বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিং অনুযায়ী ৫২ নম্বরে অবস্থান করা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনার পাশাপাশি প্রায় ৪৮ ধরনের খেলাধুলার প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এছাড়া এখন পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ জন ছাত্র নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক