g মিরপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শেষ, বিপুল বিস্ফোরক উদ্ধার | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

রবিবার, ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ইং ২৬শে ভাদ্র, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

মিরপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শেষ, বিপুল বিস্ফোরক উদ্ধার

AmaderBrahmanbaria.COM
সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৭

---

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর মিরপুরে দারুস সালামের বর্ধনবাড়ি এলাকার জঙ্গি আস্তানায় প্রায় ৮৯ ঘণ্টার অভিযান শুক্রবার বিকেলে শেষ হয়েছে। এর মধ্যে শেষ ৪৮ ঘণ্টা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া আস্তানার ভেতরে তল্লাশি চালানো হয়েছে। শুক্রবার সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সাতটি শক্তিশালী বোমা ও ১৫ কেজি (আনুমানিক ১০ হাজার টুকরা) স্প্লিন্টারসহ বোমা তৈরির অন্যান্য সরঞ্জাম।

ভবনটি এখন বিস্ফোরণ ঝুঁকিমুক্ত বলে জানিয়েছে র‌্যাব। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেটিকে বাস উপযোগী হিসেবে ঘোষণা না করা পর্যন্ত বাসিন্দারা ফিরতে পারছেন না।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান শুক্রবার বিকেলে জানান, জঙ্গি আস্তানা থেকে সাতটি শক্তিশালী বোমা (এর মধ্যে দু’টি ফ্রিজের সঙ্গে যুক্ত ছিল), ৩০টি ইমপ্রোভাইজড হ্যান্ড গ্রেনেড, ২০টি রাসায়নিক বোমা, ৯টি বোমার ধাতব খোল, এক হাজারটি ইগনাইটিং কর্ড, বোমা তৈরির উপাদান- চারকোল ১২ কেজি, ১৫ কেজি স্প্লিন্টার ও দু’টি মুখোশ পাওয়া গেছে।

ভবনে আর কোনো বিস্ফোরক না থাকলেও চতুর্থ ও পঞ্চম তলা র‌্যাবের নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলেও জানান তিনি।

র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার সকাল পৌনে ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সেখানে তল্লাশি অভিযান চলে। এর আগে বৃহস্পতিবার আরও ১০টি বোমা, ৩০টি বোতল বোমা, অর্ধশত ধারালো অস্ত্র ও ১০ কেজি গান পাউডারসহ বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাস দমনে আইনে একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। রাতেই মামলাটি নথিভুক্ত হওয়ার কথা। এরআগে জঙ্গি আস্তানাটিতে সাতজনের মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার রাতে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা হয়। ওই বাড়ির মালিক হাবীবুল্লাহ বাহার আজাদ ও নৈশপ্রহরী সিরাজুল ইসলামকে সাভার থানার একটি জঙ্গি সংক্রান্ত মামলায় পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র‌্যাব।

এদিকে শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে র‌্যাবের গাড়িতে করে ভবনের কিছু বাসিন্দাকে ঘটনাস্থলে নেওয়া হয়। তারা বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের অবস্থা দেখে ফিরে যান। তাদের কয়েকজন জানান, ঘটনার পর থেকে তারা আত্মীয়-স্বজনের বাসায় রয়েছেন। সকালে র‌্যাব সদর দফতরে ডেকে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেখান থেকেই তাদের নিয়ে আসা হয় ঘটনাস্থলে।

র‌্যাবের কর্মকর্তারা জানান, জঙ্গি আবদুল্লাহর সঙ্গে সবসময় ৫/৬ জন সহযোগী থাকত বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে দু’জন বিস্ফোরণে মারা গেছে। তাদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সোমবার রাতে টাঙ্গাইলের জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিরপুরে জঙ্গি আস্তানা ঘিরে ফেলে । মাজার রোডের পাশে বর্ধনবাড়ি ভাঙ্গা ওয়ালের গলির ২/৩-বি হোল্ডিংয়ে ছয় তলা ওই বাড়ির পঞ্চম তলায় জঙ্গি আবদুল্লাহ, তার দুই স্ত্রী, দুই সন্তান ও দুই সহযোগীসহ মোট সাতজন অবস্থান করছিল। ওই আস্তানায় থাকা জঙ্গি আবদুল্লাহ র‌্যাবের আহ্বানে আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়েও শেষ পর্যন্ত মত পাল্টে ফেলে। শুধু তাই নয়, অভিযানের ঘেরাটোপে আটকে থাকা অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে আস্তানার ভেতর থেকে পর পর চার দফায় ভারি বিস্ফোরণও ঘটায়। কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। থেমে থেমে শোনা যায় গুলির শব্দ। বিস্ফোরণে ছয়তলা বাড়িটির পঞ্চমতলায় আগুন ধরে যায়।

বুধবার সকালে সেখানে অভিযান চালায় র‌্যাব। বিকেলে জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয় অঙ্গার হয়ে যাওয়া সাতজনের দেহাবশেষ। দেহাবশেষ দেখে নারী-পুরুষ পার্থক্য করারও উপায় ছিল না। দেহাবশেষগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

এ জাতীয় আরও খবর