অবশেষে ডোকলাম থেকে সৈন্য সরাচ্ছে চীন-ভারত
---
সংকট কাটল। টানা আড়াই মাস ধরে চলতে থাকা টান টান উত্তেজনারও অবসান ঘটতে চলেছে। ভারত, চীন ও ভুটান সীমান্তের বিতর্কিত ডোকলাম মালভূমি থেকে ভারত ও চীন সৈন্য সরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রচারিত এক বিবৃতিতে আজ সোমবার এই খবর জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডোকলাম বিতর্ক শুরু হওয়ার পর থেকে ভারত ও চীন দুই দেশই কূটনৈতিক যোগাযোগ চালিয়ে গেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় ভারত তার স্বার্থ, উদ্বেগ ও অভিমত জানিয়ে এসেছে। এই তৎপরতার দরুনই ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত। সেই কাজ শুরুও হয়ে গেছে।
ভারতীয় কূটনৈতিক সূত্র অনুযায়ী, দুই দেশের বহু সৈন্য ডোকলামে রয়েছে। সেনা উপস্থিতি ছাড়াও রয়েছে অস্ত্র। অতএব সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারে দিন কয়েক সময় লাগতে পারে। তবে বেইজিং থেকে রয়টার্স জানিয়েছে, ভারত ইতিমধ্যেই তাদের সৈন্য ডোকলাম থেকে সরিয়ে নিয়েছে। চীনও সেনা সরাচ্ছে কি না, তা তারা এখনো জানায়নি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তাদের বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলেনি, চীনও তাদের সৈন্য ডোকলাম থেকে সরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে কি না। বস্তুত, ভারতীয় বিবৃতি এই বিষয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠেছে চীন রাস্তা তৈরি বন্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কি না, তা নিয়েও। কারণ, সংক্ষিপ্ত ওই বিবৃতি ছাড়া এখন পর্যন্ত এই সব ধোঁয়াশা ও প্রশ্নের উত্তর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেয়নি।
দুই দেশই ডোকলাম খালি করে দিলে অবশ্যই তা হবে ভারতের কূটনৈতিক জয়। কারণ, এই আড়াই মাস ধরে চীন বারবার ভারতকে ডোকলাম থেকে সরে যেতে বললেও ভারত সরেনি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সংসদে জানিয়েছিলেন, সরতে হলে দুই দেশের সেনাদেরই সরে যেতে হবে। তারপর তিন দেশ একযোগে সমস্যার সমাধান করবে। কিন্তু চীন তা মানতে চায়নি।
ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত সেই সময় নেওয়া হলো, যখন ‘ব্রিকস’ শীর্ষ সম্মেলন শুরু হওয়ার মুখে। সেপ্টেম্বরের ৩ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত চীনে এই সম্মেলন বসছে। তাতে যোগ দেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার আগে সংকট কাটানো ও উত্তেজনা প্রশমনের এই সিদ্ধান্ত।
চীন-ভুটান-ভারতের সিকিম রাজ্যের লাগোয়া ডোকলাম নিয়ে ভুটান ও চীনের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসে চীনা ফৌজ ডোকলামে রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নিলে নিরাপত্তার স্বার্থে ভারতীয় বাহিনী বাধা দেয়। ভারতের দাবি, ওই অংশ বিতর্কিত এবং তিন দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেই ওই বিতর্কের মীমাংসা হতে হবে। চীনের দাবি, ওই অংশ তাদের।