ঈদের ছুটিতে ঘুরতে যাবেন কোথায়
---
ঈদের ছুটির সবচেয়ে বড় আয়োজন থাকে বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যাওয়া। দেশের ভিতর তো বটেই, দেশের বাইরেও ছোটেন অনেকে। ঈদ আনন্দ দ্বিগুণ করে দিতে পারে এই ভ্রমণ। ভ্রমণপ্রিয় মানুষ তাই মুখিয়ে থাকে ঈদের ছুটিতে কোথাও বেড়িয়ে আসতে। দেশের ভিতর বিভিন্ন পরিচিত স্পট তো রয়েছেই, দেশের বাইরে ভ্রমণপ্রেমীদের পছন্দ নিকটবর্তী দেশগুলো। এই ঈদে একটু প্রস্তুতি থাকলেই যেখান থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেন সেটাই জেনে নিন এখানে—
মেঘে ঢাকা সাজেক
রাঙামাটির অনেকটা অংশই দেখা যায় সাজেক ভ্যালি থেকে। বাঘাইছড়ি উপজেলা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের সাজেকের পুরোটাই পাহাড়ে মোড়ানো পথ। ভৌগোলিক অবস্থান রাঙামাটিতে হলেও যাতায়াতের সহজ পথ খাগড়াছড়ি হয়ে। সাজেকের পাহাড়ে মেঘেদের মেলা বসে। পাহাড়ের মেঘের স্পর্শে হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে। মেঘে ঢাকা সাজেকের অপরূপ প্রকৃতি সবার মন জয় করে নেয়।
যেভাবে যাবেন : প্রথমে যেতে হবে খাগড়াছড়ি অথবা দিঘীনালা। রাজধানী থেকে শান্তি পরিবহন, বিআরটিসি (এসি বাস), সেন্ট মার্টিন (এসি বাস), শ্যামলী, সৌদিয়া, ঈগল, এস আলম পরিবহনে খাগড়াছড়ি এবং দিঘীনালায় সরাসরি যাওয়া যায়। ভাড়া ৫৮০ টাকা (খাগড়াছড়ি), ৬০০ টাকা (দিঘীনালা)। চট্টগ্রাম থেকে প্রতি এক ঘণ্টা পরপর শান্তি পরিবহনের গাড়ি ছাড়ে, ভাড়া ১৯০ টাকা। তাছাড়া চট্টগ্রামের লোকাল বাসেও যাওয়া যায়। খাগড়াছড়ি অথবা দিঘীনালা থেকে ভাড়ায় চাঁদের গাড়ি, ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা, সিএনজি ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা অথবা মোটরবাইক ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ রিজার্ভ করে সাজেক ঘুরে আসতে পারবেন।
যেখানে থাকবেন : সাজেক এলাকায় থাকার জায়গা নেই। তাই রাতে থাকার জায়গা আগে থেকেই ঠিক করতে হবে। দল বড় হলে প্রস্তুতি নিতে হবে আগে থেকেই।
থাকার জন্য আছে রূনময় রিসোর্ট (বিজিবি পরিচালিত), সাজেক রিসোর্ট (সেনাবাহিনী পরিচালিত), আলোর রিসোর্ট এবং ক্লাব হাউস।
সাজেকবাসী পরিচালিত কয়েকটি দোকানে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। তবে সেক্ষেত্রে আগেই তাদের জানাতে হবে।
প্রয়োজনীয় তথ্য : সাজেক অনেক দুর্গম জায়গা। এখানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। যাও আছে তা মূলত সৌরবিদ্যুিনর্ভর। উঁচু জায়গা বলে এখানে পানীয় জলের বেশ সংকট। তাই খাওয়ার পানি সঙ্গে নেওয়া উচিত। আর হ্যাঁ, সাজেকের প্রকৃতি একটু ঠাণ্ডা বলে হালকা গরম কাপড় রাখা ভালো।
স্বচ্ছ পানির বিছানাকান্দি
সিলেট বিমানবন্দর রোড ধরে বিছানাকান্দির পথ। দুই পাশে সবুজ চা বাগান। আপনি সিএনজিতে বসেই দেখবেন ছবির মতো করে আঁকা মেঘালয়ের পাহাড়গুলো, পাহাড়ের গায়ে মাঝে মাঝে সাদা রেখার ঝরনাগুলো। বিছানাকান্দি, সীমান্তহীন মেঘনীল আকাশ এখানে বড় উদার, নিজেকে মেলে ধরেছে। সিলেটের বিছানাকান্দিতে বর্ষায় পানির ঢল নামে। এখানে ভারত থেকে আসা শীতল স্বচ্ছপানি পর্যটকদের মন কাড়ে।
যেভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে সিলেটে আপনি ট্রেনে বা বাসে করে যেতে পারেন। সিলেট শহরের যে কোনো প্রান্ত থেকে রিজার্ভ করা সিএনজি নিয়ে যেতে হবে হাদার বাজার, ভাড়া নেবে বড়জোর ৫০০ টাকা। সিলেটের আম্বরখানা থেকেও যাওয়া যায় আলাদাভাবে। সেখানে প্রতি সিএনজিতে চারজন করে নেওয়া হয় হাদার বাজার পর্যন্ত। ভাড়া জনপ্রতি ৮০ টাকা। সময় লাগবে দেড় ঘণ্টার মতো। হাদার বাজার নেমে নৌকা ঠিক করতে হবে বিছানাকান্দি পর্যন্ত। ভাড়া নেবে ৪০০-৫০০ টাকা আপ ডাউন।
যেখানে থাকবেন : সিলেট শহরে এখন অনেক উন্নতমানের হোটেল গড়ে উঠেছে। বিছানাকান্দিতে দিনে গিয়ে দিনে ফেরা যায় সিলেট শহর থেকে। তাই সিলেট শহরেই থাকতে পারেন। হোটেল হিল টাউন, ব্রিটানিয়া হোটেল, হোটেল দরগা ইন ছাড়াও অনেক ভালো হোটেল আছে।
সাবধানতা : বিছানাকান্দির পানিতে নামতে হলে আপনাকে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ভারত থেকে আসা স্রোতের বেগ এত বেশি ক্ষীপ্র থাকে যা স্বচ্ছ জলের জন্য ডাঙ্গায় থেকে পরিমাপ করা দুরূহ হয়ে পড়ে। এ জন্যই না বুঝে নেমে পড়লে প্রচণ্ড স্রোতের বেগ আর পাথরের ফাঁকে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন।
নোট : বিছানাকান্দির পথেই আরেক পর্যটন স্পট রাতারগুল হয়ে যেতে পারেন। এখান থেকে রাতারগুল খুব বেশি দূরে নয়। একটু কষ্ট করলেই আর মিস করতে হবে না।
ভ্রমণ প্রস্তুতি
♦ ফাস্ট এইড হিসেবে এন্টিসেপটিক মলম, খাবার স্যালাইন, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ, গ্যাসটিকের ওষুধ, বমির ওষুধ, কাশি বা অ্যালার্জির প্রয়োজনীয় ওষুধ নিতে পারেন।
♦ সানগ্লাস ও টুপি নিন। পানির বোতল অবশ্যই সঙ্গে রাখবেন।
♦ মোবাইলের চার্জার, ক্যামেরা, পেনড্রাইভ নিতে ভুলবেন না।
♦ বাড়তি সতর্কতার জন্য একটি পকেট নাইফ, টর্চলাইট, লাইটার বা ম্যাচ ও কম্পাস সঙ্গে রাখতে পারেন।
ভ্রমণের আগে
♦ যেখানে যাবেন সেখানের নিরাপত্তা সম্পর্কে ভালোভাবে যেনে নিন।
♦ সেখানে কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব থাকলে সে সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।
♦ আপনার কোনো অসুখ থাকলে তার ওষুধসহ প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ সঙ্গে নিতে পারেন।
♦ ভ্রমণের আগের রাতে ভালো ঘুমানো উচিত।
যাত্রার সময়
♦ একটানা বেশি সময় না বসে মাঝে মাঝে একটু হাঁটাহাঁটি বা নড়াচড়া করতে পারেন।
♦ সময় অতিক্রম করার জন্য সঙ্গে কোনো ম্যাগাজিন বা পত্রিকা রাখতে পারেন।
♦ মোবাইলে গান শুনতে পারেন বা ইন্টারনেট সংযোগ সঙ্গে থাকলে ব্যবহার করতে পারেন।
♦ অপরিচিত মানুষের দেওয়া কিছু খাবেন না।
বিদেশ
হিমালয়কন্যা নেপাল
নেপাল শুধু দক্ষিণ এশিয়াতেই নয়, বিশ্বের অনিন্দ্য সুন্দর এবং আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র। নেপালের ভূ-প্রকৃতি অত্যন্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ। নেপাল অনেকটা স্যান্ডউইচের মতো চীন এবং ভারতের মাঝখানে অবস্থান করছে। নেপাল এবং চীনের সীমান্তজুড়ে যেসব অঞ্চল রয়েছে সেসব জায়গায় পৃথিবীর সর্বোচ্চ ১০টি পর্বতের আটটি অবস্থিত। এখানে রয়েছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। নেপাল আরও এক কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মনে করা হয় নেপালের লুম্বিনিতে জন্মেছিলেন বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ। নেপালের সংস্কৃতিও দেশটির মতো বৈচিত্র্যময়। তাছাড়া নানা রকম মুখরোচক খাবার আর শপিং করার জন্য থামেল বিখ্যাত। রাজধানী কাঠমান্ডুর কুমারীঘর, ষোড়শ শতাব্দীর রাজলক্ষী নরসিংহ মল্লের প্রাসাদ, বসন্তপুর দরবার স্কয়ার, বড়া নীলকণ্ঠ, শিবপুরী পাহাড়। নেপালে যাবেন আর পাহাড়ে উঠবেন না তাই কী হয়! আপনি যদি পেশাদার পর্বতারোহী না হন তাহলে ছোটখাটো পাহাড়ে বেড়িয়ে আসতে পারবেন।
যেভাবে যাবেন : আপনি নেপাল সরাসরি বিমানে যেতে পারেন। এতে আপনাকে ট্যুরিস্ট ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। এ ছাড়া সড়কপথে শিলিগুড়ি থেকে কাঁকরভিটা হয়ে নেপালে যাওয়া যায়। কিন্তু সড়কপথে যেতে হলে নেপাল এবং ভারতের ভিসা নিতে হবে। তবে এ পথেও নেপালের কোনো ভিসা ফি নেই।
যেখানে থাকবেন : কাঠমান্ডুর থামেল এলাকায় ট্যুরিস্টদের জন্য অনেক হোটেল রয়েছে। থামেলের রাস্তার অলিতে-গলিতে হোটেল পাবেন। হোটেলের খরচ বাংলাদেশের চেয়ে সস্তা। কাঠমান্ডুতে বিদ্যুৎ সংকট রয়েছে। তাই দেখে নেবেন হোটেলে জেনারেটর সুবিধা আছে কিনা। নেপালে খাবার খরচ আমাদের দেশের তুলনায় সস্তা। কাঠমান্ডুর রাস্তায় অসংখ্য খাবারের দোকান মিলবে। দেশি-বিদেশি অনেক হোটেল-রেস্টুরেন্ট রয়েছে এখানে।
ভূস্বর্গ ভুটান
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভুটান। দেশটির উত্তরে চীনের তিব্বত এবং দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমে ভারত। ভুটান সরকারের মূল মন্ত্র হচ্ছে গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস। ভুটানের সব থেকে আকর্ষণীয় স্থান থিম্পু। এই স্থানটি দেশের সংস্কৃতির মূল কেন্দ্র। এখানে রয়েছে সিমতোখা জং, থিম্পুর প্রাণ থিম্পু জং। থিম্পুর পুনাখা শহর থেকে হিমালয় দেখা যাবে। পুনাখা জং, ফো ছু এবং মো ছু নদীও দেখতে পাবেন পুনাখায়। প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থাপনার সাম্রাজ্য ভুটানের আরও অজস্র দর্শনীয় স্থান রয়েছে। বুমথাংকে বলা হয় ভুটানের আধ্যাত্মিক হৃদয়ভূমি। কারণ, ভুটানের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জং মন্দির এবং মহল এই অঞ্চলে অবস্থিত। আরও দেখা যাবে, ওয়াংগডিচোলিং প্যালেস, জাম্বে লাখাং মন্দির, সব থেকে বড় ভুটানিজ মন্দির জাকার এবং হট স্প্রিং এরিয়া। এই এলাকায় বন্টু শিপ, মাস্ক ডিয়ার, হিমালয়ান ভাল্লুক চোখে পড়তে পারে।
কীভাবে যাবেন : প্লেনে যাওয়া ভালো। এখানে কেনাকাটায় দাম অনেক চড়া। খরচ কমাতে চাইলে বাসে যাওয়াই ভালো। রাস্তা খুব ভালো, তবে দীর্ঘ জার্নি, যা মেয়ে ও বুড়োদের জন্য সমস্যা হতে পারে। ইন্ডিয়ার ভিসা নিতে হবে শুধু, ট্রানজিট ভিসা। ভুটানের ভিসা বর্ডার অথবা এয়ারপোর্ট থেকে নিতে হয়, পাসপোর্টে সিল মেরে দেবে, ওটাই ভিসা। ক্রেডিট কার্ড না থাকলে পাসপোর্টে ডলার এনডোর্স করতে হবে ব্যাংক থেকে ইন্ডিয়ার ভিসার অ্যাপ্লিকেশনের জন্য। বুড়িমারী-চেংরাবান্ধা বর্ডার থেকে ডলার ভাঙিয়ে রুপি করে নিতে পারবেন। ভুটানে ইন্ডিয়ান রুপি ওদের নিজস্ব মুদ্রার মতোই চলে, একই মান।
কোথায় থাকবেন : ভুটানে পর্যটকদের জন্য অনেক হোটেল রিসোর্ট রয়েছে। ফুয়েনশলিংয়ে থ্রি-স্টার মানের হোটেলও আছে। রাতটা ওখানে থেকে সকালে বাসে থিম্পুর উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।
বিমান ভ্রমণে লক্ষ্য রাখুন
♦ বুকিংয়ে সঠিক নাম ও পাসপোর্ট নাম্বার ব্যবহার করুন।
♦ সময়মতো বিমানবন্দরে পৌঁছান।
♦ চেকলিস্ট মিলিয়ে নিন। বিমানবন্দর যাত্রার আগে চেকলিস্ট মিলিয়ে দেখে নিন সব কিছু নেওয়া হয়েছে কিনা। বিশেষ করে দেশের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট, টিকিট, ডলার, ক্রেডিট কার্ড (থেকে থাকলে) নিতে ভুলবেন না। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বিদেশ যাওয়া হলে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট এবং স্থানীয় ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে নিন।
♦ আন্তর্জাতিক সেমিনার, কনফারেন্স হলে ইনভাইটেশন লেটার, অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড সঙ্গে নিন।
♦ ভ্রমণের ক্ষেত্রে ক্যামেরা, বাইনোকুলার ফেলে গেলে আফসোসের শেষ থাকবে না।
♦ লাগেজ বেশি ভারি না করাই ভালো।
♦ হ্যান্ড ব্যাগে লিকুইড রাখবেন না।
হ্যান্ড লাগেজে পণ্য বহনে কিছু বিধিনিষেধ আছে। এতে কোনোভাবেই পানির বোতল, ড্রিংকস, শ্যাম্পু, বডি স্প্রে, পারফিউম বা অন্য কোনো তরল রাখা যাবে না।
♦ নিরাপত্তার স্বার্থে বিধি মেনে চলুন।
বিমানবন্দরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে নানা ধরনের চেকিংয়ের মুখোমুখি হতে হয়। এ সময় সংশ্লিষ্টদের পূর্ণ সহযোগিতা করুন। স্ক্যানিং মেশিনে চেকের সময় ধাতব আসবাব বের করে নিন। মনে রাখবেন, আপনার নিরাপত্তার জন্যও এ ধরনের চেকিং খুব জরুরি।
♦ নির্ধারিত সিটেই বসতে হবে।
♦ বিমান কর্মীদের সঙ্গে ভালো আচরণ করুন।
ভ্রমণ টিপস
যদি আপনি ভ্রমণের খরচটা বাঁচানোর সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে চান তাহলে ভ্রমণকারী গ্রুপে বা বন্ধুরা দলবদ্ধ হয়ে ভ্রমণে যেতে পারেন। কোনো দেশ ভ্রমণের সময় একটি গ্রুপ একসঙ্গে কিছু করলে যেমন মিউজিয়াম বা থিম পার্ক ট্যুর অনেক সুলভ খরচে করতে পারবেন
♦ ট্যুরে সারা দিন কী করবেন তার পুরো একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন।
♦ ট্যুরিস্ট রেস্টুরেন্টগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। আশপাশে ঘুরে লোকাল বসবাসকারীরা যেখানে খায় সেখানে খাওয়া-দাওয়া সারতে পারেন, তাতে খরচ অনেকটা কমে আসবে।
♦ খরচ কমাতে গিয়ে অফ-সিজনে যাওয়াটা একদমই উচিত নয়।
♦ ঘুরতে গিয়ে কোনো রেস্টুরেন্টে খাওয়ার থেকে কোনো দর্শনীয় স্থানে পিকনিক করতে পারেন। এতে আপনি স্থানীয় সংস্কৃতি, রীতিনীতি খুব কাছে থেকে উপলব্ধি করতে পারবেন।
♦ ভ্রমণের স্থান সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান না থাকলে ট্যাক্সি বা রেন্ট-এ কারে অনেক সময় অনেক অযাচিত অবস্থায় পড়তে হতে পারে। এ বিষয়টি প্রত্যেক পর্যটকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
♦ কোনো স্থানে ভ্রমণে গিয়ে যদি রেন্ট-এ-কার থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন এবং নিজেই সে গাড়ি চালান তাহলে একটু ট্র্যাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন থেকে ড্রাইভ করুন এবং কোথায় গাড়ি পার্ক করছেন এ ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকুন। কেননা চোরেরা ট্যুরিস্টের গাড়ি বুঝতে পারলে চুরি হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
♦ একটি দেশে ঘুরতে গিয়ে তার এক শহর থেকে আরেক শহরে যাতায়াতের সময় কোন পরিবহন ব্যবহার করবেন সে ব্যাপারে ভালোভাবে খোঁজখবর করে নিন।
♦ অনেক দেশে এক শহর থেকে আরেক শহর যেতে গাড়ি দিয়ে হাইওয়ে ড্রাইভ বা রেইলপাস দিয়ে ট্রেনে করে যাওয়ার থেকে কান্ট্রি ইনবাউন্ড এয়ারফেয়ার অর্থাৎ প্লেন টিকিট এর খরচ অনেক সাশ্রয়ী হয়।
♦ পানির একটি বোতল সঙ্গে রাখুন এবং রেস্টুরেন্ট বা হোটেল থেকে এই বোতলে পানি ভরে নিন। না হলে আপনাকে পানির বোতল কিনে খেতে হবে এবং অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে পানির বোতলের খরচ বাদ গেলেই দেখবেন আপনার একটা প্রমাণ পরিমাণ টাকা সাশ্রয় হয়েছে, যা আপনি শপিংয়ে ব্যয় করতে পারবেন।
♦ সাধারণত বেকারিগুলো দিনের শেষে প্রায় অর্ধেক দামে খাবারগুলো বিক্রয় করে থাকে, যাতে প্রতিদিন খাবার ফ্রেস থাকে। আপনি সন্ধ্যার নাস্তাটা কিন্তু এমন বেকারি থেকে সারতে পারেন।
♦ অনেক ছোটখাটো কিন্তু খুব প্রয়োজনীয় জিনিস আমরা ভ্রমণকালে নিতে ভুলে যাই। তা হতে পারে টুথব্রাশ, পেস্ট, শেভিং ক্রিম বা রেজর। কখনোবা ফোনের চার্জার। এ ক্ষেত্রে তা কেনার জন্য আপনাকে বাইরে যেতে হবে না। হোটেলেই এসব সামগ্রী অনেক পরিমাণে থাকে। হোটেল থেকেই আপনি নামমাত্র মূল্যে প্রয়োজনীয় এসব পাবেন।