দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বিদ্যুৎখাতে দ্রুত ও ব্যাপক উন্নতি হওয়ায় বর্তমানে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে দেশে বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২.৪৯ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। যা ২০০৯ সালে ছিল ১.০৮ কোটি। এদিকে গত কয়েক বছরে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে প্রায় ৪৫ লাখ পরিবার সৌর বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে বলেও জানা গেছে।
২.৪৯ কোটি বিদ্যুৎ গ্রাহক এবং ৪৫ লাখ সৌর বিদ্যু গ্রাহক একত্রে দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন পাওয়ার সেলের এক কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, আরো অধিক মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ কর্তৃপক্ষ বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়িয়েছে, বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন সম্প্রসারণ করেছে এবং সিস্টেম লস কমিয়ে এনেছে।
এবছর বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে ১৫,৩৭৯ মেগাওয়াট-এ দাঁড়িয়েছে। যা ২০০৯ সালে ছিলো ৪,৯৪২ মেগাওয়াট। মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ২২০ কিলোওয়াট-ঘন্টা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪০৭ কিলোওয়াট-ঘণ্টা হয়েছে। এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ১.৪১ লাখ কিলোমিটার পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ২০১৭ সালের ২৭ মে দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ৯৪৭১ মেগাওয়াট।
তিনি বলেন, এ সময়টাতে কার্যকরী পর্যবেক্ষণের ফলে সিস্টেম লস ১৬.৮৫ শতাংশ থেকে কমে ১৩.১০ শতাংশে এসেছে।
মোহাম্মদ হোসাইন আরো বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ২৪,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ১১,৩৬৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করতে ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আরো ৩৪টি বিদ্যুত কেন্দ্র চালু করা হবে।
৪,৯১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা সম্পন্ন আরো ৩৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ইতিমধ্যে দরপত্রের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ কেন্দ্রগুলো ২০১৮ সালে থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।
পাশাপাশি ৬,৪১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা সম্পন্ন আরো ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক হোসাইন বলেন. দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলো থেকেও বিদ্যুৎ আমদানি করার পরিকল্পনা করছে সরকারের। তিনি বলেন, ‘ভারতের পাশাপাশি নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।’
বঙ্গোপসাগরে ৮০ কিলোমিটার সাবমেরিন কেবল স্থাপন করে সন্দ্বীপ উপজেলাসহ আরো কয়েকটি দ্বীপ ও চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে বলেও তিনি জানান।