g বাঞ্ছারামপুরের প্রধান শিক্ষিকার এইচএসসিতে ৩ সনদ : ১ বছর তদন্ত করে অবশেষে বিভাগীয় মামলা! | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

শনিবার, ২১শে অক্টোবর, ২০১৭ ইং ৬ই কার্তিক, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুরের প্রধান শিক্ষিকার এইচএসসিতে ৩ সনদ : ১ বছর তদন্ত করে অবশেষে বিভাগীয় মামলা!

AmaderBrahmanbaria.COM
অক্টোবর ৯, ২০১৭
news-image

---

ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় দেলোয়ারা বেগম নামের এক প্রধান শিক্ষিকার এইচএসসির ৩টি সনদ থাকার সংবাদ ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে দেশের প্রায় সব জাতীয় পত্রিকা,অনলাইনে প্রকাশিত হবার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষক কর্মকর্তা সুব্রত কুমার বণিক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সনদ যাচাই-এর জন্য পাঠান।

এলাকাবাসীসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা চাঞ্চল্যকর ঠকবাজি হিসেবে বিষয়টি পর্যবেক্ষনে রাখায়,জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রতিমাসে কেউ না কেউ ‘৩ টি সনদ যাচাই করা শেষ হলো কি-না’- তা নিয়ে খোজ-খবর রাখতে থাকেন। বিগত এক বছরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট স্কুলের স্থানীয় এলাকাবাসী’সনদ যেনো যাচাই করে এর ফলাফল ঘোষনা করা না হয়’ এই লক্ষ্যে অভিযুক্ত শিক্ষীকার জেলা শিক্ষা অফিসে দৌড়ঝাপ দেখে ‘ঘুষ’ দিয়ে তদন্ত থামিয়ে দেয়া হতে পারে বলে কানাঘুষা করতে থাকেন।

সার্টিফিকেট যাচাই করতে ১ বছর সময় লাগার কথা নয়।নিশ্চয়ই শিক্ষীকা আর্থিক লেনদেন থামিয়ে দিতে সক্ষম হবে।’ এমন অভিযোগ আসতে থাকে প্রতিনিয়ত। ধারনা করা হচ্ছে- অবশেষে প্রতারণার সাহায্যে এইচএসসি তে ৩ টি ভূয়া সনদধারী বাঞ্ছারামপুর উপজেলার (সদর উত্তর)সরিষারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষীকা দেলোয়ারা বেগম তার বিরুদ্ধে করা তদন্ত থামাতে না পারলেও, স্থিমিত করে আনতে সক্ষম হয়েছেন। কারন- আজ মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার বণিক, খানিক বিব্রতবোধ করে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মুঠোফোনে জানান,-‘জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় সাড়া না দেওয়াতে শিক্ষীকা দেলোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে একটি বিভাগীয় মামলা করা হতে পারে। অযথা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ১ টি বছর আমাকে ঘুরালো’।

এদিকে, শিক্ষার সাথে সংযুক্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অভিযোগ করে বলছেন, ‘জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-অযুহাতটি ছিলো স্রেফ আইওয়াশ। তিনি কালক্ষেপন করেছেন মাত্র,পরিস্থিতি ঠান্ডা করার জন্য।আসলে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে দেলোয়ারাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে রাখতে চাচ্ছেন।

এদিকে, চলতি বছরের মার্চে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রকাশিত হলে,তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষিকা দেলোয়ারা বেগমকে সাময়িক সাসপেন্ড (অব্যাহতি)করার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তা বাস্তবায়িত করেন নি বলে জানান-বাঞ্ছারামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নওশাদ মাহমুদ।

উল্লেখ্য, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সরিষারচর-নতুনহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে গত ১ অক্টোবর/২০১৬ এইচএসসি সনদ জালিয়াতির অভিযোগ দেয় এলাকাবাসী। এতে বলা হয়, সরিষারচর-নতুনহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ারা বেগম এইচএসসি পরীক্ষার জাল সনদ দিয়ে প্রধান শিক্ষকের পদোন্নতি পান। সেই সময় তার ঊর্দ্ধতন প্রধান শিক্ষক মো. ইব্রাহিম মিয়া ছুটিজনিত কারণে ট্রেনিংয়ে থাকায় তাকে সহকারী শিক্ষক দেখিয়ে দেলোয়ারা বেগম নিজে ভুয়া ও জাল সার্টিফিকেট জমা দিয়ে নিজেই প্রধান শিক্ষক বনে যান। আর ইব্রাহিম মিয়াকে প্রধান শিক্ষক হতে অবনবয়ন করে করা হয় সহকারি শিক্ষক।

পরে অভিযোগের তদন্ত করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নওশাদ মাহমুদ অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পান। ঐ তদন্ত প্রতিবেদন গত ২৩ নভেম্বর ইউএনও বরাবর জমা দেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তদন্ত প্রতিবেদনটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার বনিকের বরাবর যাচাই-বাছাই ও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দেওয়া হয় সেটি আবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য প্রেরিত করা হলেও,এ নিয়ে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে শিক্ষিকা দেলোয়ারা পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলে আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করলে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে।

এ জাতীয় আরও খবর