সোমবার, ১২ই জুন, ২০১৭ ইং ২৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান ব্র্যান্ড গুগল

AmaderBrahmanbaria.COM
জুন ৯, ২০১৭
news-image

---

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :বিশ্বের সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড কোনটি? বিষয়টি নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। সম্প্রতি সবচেয়ে দামি ১০০টি ব্র্যান্ডের তালিকা প্রকাশ করেছে ব্র্যান্ডজ। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি গুগল। এ তালিকায় মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোরই জয়জয়কার। শীর্ষ পাঁচের সবগুলো কোম্পানিই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক।

তালিকায় এর পরের অবস্থানগুলোয় রয়েছে যথাক্রমে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল, মাইক্রোসফট, অ্যামাজন ও ফেসবুক। শীর্ষ এ পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে একত্রে ‘ভয়ঙ্কর পাঁচ’ নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। চীনভিত্তিক ইন্টারনেট কোম্পানি টেনসেন্ট প্রথমবারের মতো ব্র্যান্ডজ প্রকাশিত তালিকায় শীর্ষ দশে প্রবেশ করেছে। খবর ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ও সিএনএন মানির।

ব্র্যান্ডজ মিলওয়ার্ড ব্রাউন ও ডবলিউপিপি পরিচালিত শীর্ষস্থানীয় একটি গবেষণা এজেন্সি। বিশ্বের সবচেয়ে দাবি ব্র্যান্ড নির্ধারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর লাখ লাখ গ্রাহকের সাক্ষাৎকার ও প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সক্ষমতার বিষয় বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। তালিকায় থাকা শীর্ষ ১০০টি ব্র্যান্ডের সম্মিলিত মূল্য দাঁড়িয়েছে ৮৯ হাজার ২০০ কোটি ডলারে। এর এক-চতুর্থাংশই দখল করে আছে ‘ভয়ঙ্কর পাঁচ’ আখ্যা পাওয়া শীর্ষ পাঁচ ব্র্যান্ড।

ডবলিউপিপির ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও এশিয়ার রিটেইল মার্কেটিং প্র্যাকটিস স্টোর বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডেভিড রথ বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ডের দৌড়ে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান ব্যাপক উন্নতি করেছে। ব্র্যান্ডজ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ ধরনের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে ‘বিধ্বংসী পাঁচ’ আখ্যায়িত করা হয়েছে। ব্র্যান্ডমূল্যের দৌড়ে এগিয়ে থাকতে এ পাঁচ প্রতিষ্ঠান ‘ভয়ঙ্কর পাঁচ’ খ্যাতি পাওয়াদের সঙ্গে ব্যাপক প্রতিযোগিতা করছে। ব্র্যান্ডজ প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যমতে, বিশ্বের সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ডের তকমা এখন অ্যালফাবেট নিয়ন্ত্রিত গুগলের দখলে। গত বছরজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্র্যান্ডমূল্য ৭ শতাংশ বেড়ে ২৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।

ব্র্যান্ডেজের বৈশ্বিক প্রধান ডোরিন ওয়াং বলেন, পুনর্গঠনের পর থেকে সাধারণ অনুসন্ধান সেবা খাতে গুগলের আধিপত্য কয়েক ধাপ বেড়েছে। এছাড়া গুগল নিয়ন্ত্রিত ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে সৃজনশীল গবেষণা, স্বচালিত গাড়ি প্রকল্প, গুগল ড্রাইভ, গুগল ডকস ও গুগল ম্যাপস। বৈশ্বিক অনুসন্ধান খাতের পাশাপাশি সর্বত্রই ব্যবসা সমপ্রসারণ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যাপলের ব্র্যান্ডমূল্য ৩ শতাংশ বেড়ে ২৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ডের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে অ্যাপল। ২০১৫ সালের পর থেকেই ব্র্যান্ডমূল্যে পিছিয়ে পড়তে শুরু করে অ্যাপল। গত বছরজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন উদ্ভাবন না থাকায় ব্র্যান্ডমূল্যে প্রবৃদ্ধি পায়নি প্রতিষ্ঠানটি।

এর পরের অবস্থানে রয়েছে সফটওয়্যার কোম্পানি মাইক্রোসফট। গত বছরজুড়ে এ প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডমূল্য ৫ শতাংশ বেড়ে ১৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। ব্র্যান্ডেজের বৈশ্বিক প্রধান ডোরিন ওয়াং বলেন, ক্লাউড কম্পিউটিং খাতে ব্যাপক ব্যবসা প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে মাইক্রোসফট। ক্লাউড ও বিভিন্ন ব্যবসা-সংশ্লিষ্ট সেবা প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ভোক্তা-সংশ্লিষ্টতা বাড়িয়েছে। মাইক্রোসফটের রাজস্বের এক-তৃতীয়াংশ ও পরিচালন মুনাফার ৪০ শতাংশই এসেছে ‘ইন্টেলিজেন্ট ক্লাউড’ ব্যবসা বিভাগ থেকে।

তালিকায় মাইক্রোসফটের পরের অবস্থানে রয়েছে ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন। গত বছরজুড়ে এর ব্র্যান্ডমূল্য ৪১ শতাংশ বেড়ে ১৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। ডোরিন ওয়াংয়ের ভাষ্যে, ভোক্তারা কোথায় যাবে, অ্যামাজন এরই মধ্যে সেখানে পৌঁছে গেছে। বর্তমান প্রযুক্তি খাতের পরিস্থিতি বিবেচনায় সঠিক পথেই চলছে প্রতিষ্ঠান। ই-কমার্সের পাশাপাশি ক্লাউড কম্পিউটিং, অনলাইন বিনোদন, হার্ডওয়্যার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সব খাতেই ব্যবসা সমপ্রসারণ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

ব্র্যান্ডজ প্রকাশিত তালিকায় শীর্ষ পাঁচে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকও। ভুয়া সংবাদ ও সাইটটি ঘিরে বেশকিছু হিংসাত্মক ঘটনা সত্ত্বেও ব্র্যান্ডমূল্যে এগিয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত বছরজুড়ে এর ব্র্যান্ডমূল্য ২৭ শতাংশ বেড়ে ১৩ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে। এ বিষয়ে ডোরিন ওয়াং বলেন, অনলাইন বিজ্ঞাপনের আকর্ষণীয় মাধ্যম হয়ে উঠছে ফেসবুক। বিজ্ঞাপনদাতারা এখন সাইটটিতে বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আর এটিই প্রতিষ্ঠানটির ব্র্যান্ডমূল্য বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। ব্র্যান্ডজ প্রকাশিত তালিকায় শীর্ষ দশে স্থান পাওয়া বাকি চার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হলো এটিঅ্যান্ডটি, ভিসা, টেনসেন্ট ও আইবিএম। চীনের জনপ্রিয় ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাটের নিয়ন্ত্রক টেনসেন্ট এবারই প্রথম ব্র্যান্ডজ তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।