বিয়ে করতে যাচ্ছেন লৌহমানবী শর্মিলা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের মণিপুর রাজ্যের লৌহমানবী ইরম শর্মিলা চানু তার দীর্ঘদিনের ব্রিটিশ বন্ধু ডেসমন্ড কুটিনহোকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন। ভারতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে, তাদের বিয়ের সব ব্যবস্থা করা হয়েছে আরেক রাজ্য কেরালায় এবং বিয়ের পর সেখানেই থাকবেন শর্মিলা।
এর আগে, শর্মিলার সঙ্গে ইম্ফলের আদালতে দেখা করতে এলে ডেসমন্ডকে মারধর করে জেলে পাঠানো হয়। গত বছর অনশন ভাঙার পর তার অনুগামীরা দাবি করেন, ভারত সরকারের চর ডেসমন্ড প্রেমের ফাঁদে ফেলে চানুকে বিপথগামী করেছেন। চানুও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, ডেসমন্ডকে বিয়ে করলে তাদের মেরে ফেলা হতে পারে।
দীর্ঘ ১৬ বছরের একটানা অনশন ভেঙে শর্মিলা ভোটের লড়াইয়ে নেমেছিলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী ওকরাম ইবোবি সিংয়ের বিরুদ্ধে। পেয়েছিলেন মাত্র ৯০টি ভোট। হতাশ, ভেঙে পড়া শর্মিলা এরপর চলে যান কেরালায়। তারপর থেকে পরিবার ও নিজের গড়া রাজনৈতিক দল ‘প্রাজা’র সঙ্গে তার যোগাযোগ ক্ষীণ হতে থাকে।
দক্ষিণ ভারত থেকে ফিরে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন চানু। জানান, প্রেমিককে ইংল্যান্ডে গিয়ে বিয়ে করে সেখানেই থেকে যেতে চান। কিন্তু বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে শর্মিলাকে পাসপোর্ট দেয়নি ভারত সরকার। তাই চানু সিদ্ধান্ত নেন, কেরালাতেই বিয়ে করবেন। এত দূরের রাজ্যে যে ভালবাসা ও আতিথ্য পেয়েছেন, তাতে তিনি মুগ্ধ বলে জানান। ডেসমন্ডকে বিয়ে করার জন্য শর্মিলা তামিলনাড়ুর মাদুরাই পৌঁছেছেন। ডেসমন্ডও সেখানে এসেছেন। এখান থেকেই দুজনে কেরালা যাবেন। নিরাপত্তার কারণে তারা ঠিকানার কথা কাউকে বলেননি।
মেয়ে এত দিন পরে মুক্তি পেলেও তার বিয়ে নিয়ে কোনও আনন্দ নেই চানু পরিবারে। মা সখী দেবী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আফস্পা প্রত্যাহার হলে তবেই মেয়ের মুখ দেখবেন। তা হয়নি। অনশন ভাঙার পরেও পরিবার ও পরিস্থিতির চাপে মায়ের সঙ্গে থাকতে পারেননি চানু। থাকতে হয়েছিল ইস্কনের কেন্দ্রে। তার বিয়ে নিয়েও পরিবারের উৎসাহ নেই। দাদা সিংহজিত বলেন, ‘ভোটে লড়ার সময় থেকেই চানু আমাদের এড়িয়ে চলত। বহুবার আমার ফোন ধরেনি। বিয়ে শর্মিলার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।’ এনডিটিভি ও আনন্দবাজার পত্রিকা।