সরাইলে শুরু হয়েছে দুদিনব্যাপী ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী কালীকচ্ছ সম্মিলনী’
মাহবুব খান বাবুল, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ গ্রামে শুরু হয়েছে দুদিনব্যাপী ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী কালিকচ্ছ সম্মিলনী। এ যেন ভারত বাংলাদেশের মানুষের ঐক্য ও ভালবাসার এক মিলন মেলা। গত কাল বৃহস্পতিবার সকালে কালীকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এর উদ্বোধন করেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম হিরু বীরপ্রতীক। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধার সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ নূরুন্নাহার ওসমানী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আবদুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নাহিদা হাবিবা, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এডভোকেট রেজাউল ইসলাম, কাজী মামুনুর রশিদ, আ ফ ম আনোয়ারুল হক, শাহ আলম মৈশান, মিজানুর রহমান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সভাপতি হারুন-অর-রশিদ, আ’লীগ নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আবদুল হালিম, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি খ ম রশিদুল ইসলাম, সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পী ও এড. গোলাম ফারুক । অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়, ত্রিপুরা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার পবিত্র করসহ ভারতীয় লোকসভা ও রাজ্যসভার তিন সদস্যের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। তবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তারা অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌছাননি। তবে ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী কালিকচ্ছ সম্মিলনীর সাধারন সম্পাদক শান্তিব্রত চক্রবর্তী, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. সুনীল কুমার তলাপাত্র, ত্রিপুরা হাই কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি শংকর কুমার দেব, ভারতের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী প্রভাত চন্দ্র সেনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ১৩০ জন সম্মিলনীতে যোগ দেন। তাদের সবার আদিনিবাস কালীকচ্ছ গ্রামে।
দুদিনব্যাপী সম্মিলনের অনুষ্ঠানসূচীতে আলোচনা সভা ছাড়াও ভারত ও বাংলাদেশের শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে। এ সম্মিলনীটি কালীকচ্ছ এলাকার আদি বাসিন্দা বর্তমানে ভারতীয় নাগরিক এবং বর্তমানে এই এলাকায় বসবাসকারী তাদের স্বজনদের এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। প্রধান অতিথি দু’দেশের মানুষের সেতুবন্ধনের মেলার আয়োজক এমপি মৃধাকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, এটা একটা ইউনিক আন্দোলন। এ কালিকচ্ছে অনেক কৃর্তিমানদের জন্ম। বিপ্লব সাহিত্য সাংস্কৃতি ও রাজনীতি কোন ক্ষেত্রেই পিছিয়ে নেই তারা। কালিকচ্ছের অনেক বাসিন্ধা ভারতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে গোটা বাংলাদেশের মানুষের মুখ উজ্জল করেছেন। এ সম্মিলনী সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতীর এক অনন্য উদাহরন। ৭১-এ হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ ও খৃষ্টানদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। তাই এ দেশ সকল ধর্মের, সকল মানুষের।
প্রসঙ্গতঃএই প্রীতি সম্মিলনী ২০০৯ সালে প্রথম কলকাতায়, এরপর ২০১০ সালে ত্রিপুরায়, ২০১১ সালে কলীকচ্ছ গ্রামে তৃতীয়বার এবং ২০১৫ সালে চতুর্থবার ত্রিপুরায় অনুষ্ঠিত হয়। আর এবার পঞ্চমবার এই সম্মিলন হচ্ছে কালীকচ্ছ গ্রামে। আগামীকাল শুক্রবার দুদিনব্যাপী এ সম্মিলন শেষ হবে।